“আজকে আমাদের দেশের স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে বিতর্ক হয়। এত বছর পরও সেই বিতর্ক চলছে। আমাদের বক্তব্য, ঘোষণার পাঠক ঘোষক হতে পারে না।”
Published : 26 Mar 2024, 11:37 AM
বঙ্গবন্ধু ছাড়া স্বাধীনতা ঘোষক হাওয়ার বৈধ অধিকার আর কারো নেই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার স্বাধীনতা দিবসের সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে একাত্তরের বীর শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, “আজকে আমাদের দেশের স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে বিতর্ক হয়। এত বছর পরও সেই বিতর্ক চলছে। আমাদের বক্তব্য, ঘোষণার পাঠক ঘোষক হতে পারে না। আবুল কাশেম, এম এ হান্নান, অনেকেই ঘোষণা পাঠ করেছেন। সেখানে জেনারেল জিয়াও বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেছেন।
“কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, কে ঘোষক? এই বিতর্কের অবসান তখনই হবে, যখন আমরা সত্যের অনুসন্ধান করতে যাব। সেটা হচ্ছে, ১৯৭০ সালের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা ঘোষণার ম্যান্ডেট, এই অঞ্চলের জনগণের পক্ষ থেকে একমাত্র বঙ্গবন্ধুই পেয়েছিল। আর কারো কোন বৈধ অধিকার নেই স্বাধীনতা ঘোষক হাওয়ার।”
২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে আটক হওয়ার আগেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশকে ‘স্বাধীন’ ঘোষণা করে দেশবাসীর উদ্দেশে একটি তারবার্তা পাঠান। ইপিআরের ওয়ারলেস বার্তায় প্রচার করা হয় তার স্বাধীনতার ঘোষণা।
বঙ্গবন্ধুর সেই স্বাধীনতার ঘোষণা ২৬ মার্চ দিনের বেলায় হ্যান্ডবিল আকারে ইংরেজি ও বাংলায় ছাপিয়ে চট্টগ্রামে বিলি করা হয়৷ আওয়ামী লীগ নেতা জহুর আহমেদ চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা চট্টগ্রামের ইপিআর সদর দপ্তর থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে ওয়্যারলেস মারফত পাঠানোর ব্যবস্থা করেন৷
পরে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে সেই ঘোষণাপত্র পাঠ করেন চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ হান্নান। তখনকার মেজর জিয়াউর রহমানও বঙ্গবন্ধুর পক্ষে সেই ঘোষণাপত্র পাঠ করেন। সে কারণে বিএনপি জিয়াকে স্বাধীনতার ‘ঘোষক’ দাবি করে।
২০০৯ সালের ২১ জুন এবিএম খায়রুল হক ও বিচারপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদের হাইকোর্ট বেঞ্চ এক রিট মামলার রায়ে সিদ্ধান্ত দেয়, জিয়াউর রহমান নন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই স্বাধীনতার ঘোষক।
হাই কোর্টের রায়ে বলা হয়, “বঙ্গবন্ধু ছিলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি। তিনি কেবল শ্রেষ্ঠ মুুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতার ঘোষকই ছিলেন না। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা একাত্তুরের ২৬ মার্চ দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে গিয়েছিল। এই ঘোষণার কথা সংবিধানের প্রস্তাবনায় উল্লেখ করা হয়েছে।”
জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, “আজকে আমাদের শপথ, বিএনপির নেতৃত্বে যে সাম্প্রদায়িক অশুভ শক্তি বিজয়কে সংহত করতে বাধা বা অন্তরায় হয়ে আছে, এই অপশক্তিকে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা প্রতিহত করব, পরাভূত করব, পরাজিত করব এবং বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তুলব।”
গত কিছুদিন ধরে ভারতীয় পণ্য বর্জনের যে প্রচার চলছে, সে বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, “বিরোধিতা আগেও হয়েছ, এই বিরোধিতা পাকিস্তান আমলের। যখন কোনো রাজনৈতিক ইস্যু থাকে না, তখনই ভারত বিরোধিতা ইস্যু, এখনো সেটা হচ্ছে। একটা নতুন কিছু না।”
পুরনো খবর