এক ধরনের ‘বর্ণবাদের’ শিকার বিএনপি: ফখরুল

“বিএনপি যারা করে, তাদের ঘর-বাড়ি পর্যন্ত দখল করে নেওয়া হচ্ছে। ছেলে-মেয়েদের চাকরির সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না।”

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 March 2024, 10:43 AM
Updated : 27 March 2024, 10:43 AM

বিএনপি এক ধরনের ‘বর্ণবাদের’ শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের এক আলোচনায় বুধবার দুপুরে তিনি এই মন্তব্য করেন।

রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপি গঠিত ‘স্বাধীনতা দিবস উদ্‌যাপন কমিটি’র উদ্যোগে এই আলোচনায় ফখরুল বলেন, “আমার কাছে মনে হয়, বাংলাদেশ শুধু ফ্যাসিস্টদের কবলে পড়েনি, বর্ণবাদীদের কবলেও পড়েছে।

“বিএনপি যারা করে, তাদের ঘর-বাড়ি পর্যন্ত দখল করে নেওয়া হচ্ছে, তাদের জমি দখল করে নেওয়া হচ্ছে, ব্যবসা-বাণিজ্য দখল করে নেওয়া হচ্ছে, তাদের ছেলে-মেয়েদেরকে চাকরির সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি দুঃসম্পর্কের আত্মীয় যারা আছে তাদেরকে বিএনপি হিসেবে চিহ্নিত করে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এটা বর্ণবাদ ছাড়া কিছু নয়।”

দেশ এখন ‘আওয়ামী লীগ’ ও ‘বিরোধী দল’ হিসেবে বিভক্ত হয়ে গেছে বলেও মনে করছেন ফখরুল। বলেন, “সাম্প্রদায়িক একটা অবস্থা তৈরি করেছে। তারা আবার দাবি করে, সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে তাদের ‘জেহাদ’ সব সময় অব্যাহত থাকবে।

“যারা সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি করে, যারা নিজেরা গোষ্ঠী তৈরি করেছে, বর্ণবাদ সৃষ্টি করছে তাদের মুখে এ কথা শোভা পায় না। মানুষের সম্পদ লুট করে, মানুষজনকে সর্বস্বান্ত করে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করা যায় না।”

সংগঠন শক্তিশালী করে আন্দোলন

আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণাও দেন ফখরুল। আন্দোলনের পাশাপাশি সংগঠন শক্তিশালী করার কথাও বলেন তিনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “সংগ্রামের কোনো বিকল্প নেই, আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই এবং গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করা, ভোটের অধিকারকে ‘প্রতিষ্ঠা করা’র কোনো বিকল্প নেই। আমাদের নেতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে শক্তিশালী সংগঠন গড়ে তুলে সেই সংগ্রামকে আরো বেশি জোরদার করতে হবে।”

তরুণ সমাজকে ‘জেগে উঠার’ আহ্বান রেখে ফখরুল বলেন, “২৮ তারিখের (গত ২৮ অক্টোবর নয়া পল্টনে বিএনপির সমাবেশ পণ্ড হয় সংঘাতে) ঘটনায় পরে আমার কাছে মনে হয়েছে যে, আমরা তরুণদেরকে বোধহয় সেভাবে নামাতে পারিনি।

“আমার কাছে মনে হয়েছে মানুষকে জাগিয়ে তোলা এখন আমাদের প্রধান কাজ।মানুষকে আবারও সংগঠিত করতে হবে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য, ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য তাদেরকে অবশ্যই রুখে দাঁড়াতে হবে।”

‘বাকশাল টু’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র বিশ্বাস করে না, তারা দেশের মানুষের অর্থনৈতিক অধিকারও বিশ্বাস করে না।”

১৯৭৫ সালে বহুদলীয় গণতন্ত্রের বদলে একদলীয় বাকশাল কায়েমের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “এবার এরা সারাদেশে অলিখিত বাকশাল কায়েম করেছে। বিশ্বের নামিদামি টাইম ম্যাগাজিন বাংলাদেশে বর্তমান সরকারের নাম দিয়েছে ‘বাকশাল টু’।

“এই সরকার একদলীয়, এ কথা শুধু বলছি না, সারা বিশ্ব বলেছে। এই সরকার জগদ্দল পাথরের মত বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের ওপর চেপে বসেছে, জুলুম-অত্যাচার-নির্যাতন করছে।

“বাংলাদেশের বিরোধী দলের বিরুদ্ধে এক লক্ষ মামলা দেওয়া হয়েছে, ৫০ লক্ষ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে।”

বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী ও সহ প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের সঞ্চালনায় আলোচনা ‘স্বাধীনতা দিবস উদ্‌যাপন কমিটি’র আহ্বায়ক হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, আবদুল আউয়াল মিন্টু ও আহমেদ আযম খানও বক্তব্য রাখেন।

বক্তাদের তালিকায় আরো ছিলেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী, ফজলুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছিরও।