“কুখ্যাত লুটেরা আদানির সাথে বিদ্যুতের নামে অসম চুক্তির মাধ্যমে সরকার জনগণের টাকা তছরুপ করছে।”
Published : 11 Mar 2023, 04:06 PM
ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে ‘অসম চুক্তি’ করে সরকার জনগণের টাকা তছরুপ করছে অভিযোগ করে বিদ্যুতের ওই চুক্তি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন গণফোরামের একাংশের সভাপতি মোস্তফা মোহসীন মন্টু।
শনিবার দুপুরে ঢাকার আরামবাগে এক মানববন্ধনে তিনি বলেন, “এই আওয়ামী লীগ সরকারের মতো বাংলাদেশের ইতিহাসে এত লুটপাট কখনও হয়নি। গোটা জাতি এই সরকারকে নিয়ে এক মহাসংকটে আছে।
“এমন কোনো ব্যাংক নেই যেখানে ঋণখেলাপি নেই। হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যাংক থেকে লুটপাট করেছে। সমস্ত রিজার্ভ লুটপাট করে ধ্বংস করে ফেলেছে। বিশেষ করে বিশ্ব কুখ্যাত লুটেরা আদানির সাথে বিদ্যুতের নামে অসম চুক্তির মাধ্যমে সরকার জনগণের টাকা তছরুপ করছে।”
অবিলম্বে আদানির সঙ্গে চুক্তি বাতিলের দাবি জানিয়ে মন্টু বলেন, “এলিফ্যান্ট রোড, নিউ মার্কেটসহ সারাদেশের ব্যাবসায়ীরা বলছে, কোনো ব্যবসা নেই। সারাদিন বসে থেকে যে বিদ্যুৎ খরচ হয়, তার পয়সাই ইনকাম করা যায় না।
“তবুও এই মহা-দুর্নীতিবাজ বর্তমান অবৈধ সরকারের কর্ণকুহরে জনগণের আহাজারি পৌঁছায় না, কারণ তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার নয়, তাই এই গণদুশমন সরকার জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না।”
বিদ্যুতের সরবরাহ ঠিক রাখতে আদানি গ্রুপের কোম্পানি আদানি পাওয়ারের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনতে ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর চুক্তি করে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ বিভাগ। চুক্তির আওতায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভারতের ঝাড়খন্ডে অবস্থিত আদানির গড্ডা পাওয়ার প্ল্যান্টের প্রথম ইউনিটের বিদ্যুৎ বাংলাদেশের জাতীয় গ্রিডে সঞ্চালন শুরু হয়।
বাংলাদেশ লাগোয়া রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের পাশেই ঝাড়খণ্ড রাজ্য। সেখান থেকে বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও বগুড়ার সঞ্চালন লাইন হয়ে আসবে আদানির বিদ্যুৎ।
তবে আদানির সঙ্গে ওই চুক্তিকে ‘অসম, অস্বচ্ছ ও বৈষম্যমূলক’ হিসেবে বর্ণনা করে তা পর্যালোচনার দাবি জানায় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশ-টিআইবি। বিরোধীদলগুলোর নেতারাও এই চুক্তি নিয়ে আপত্তির কথা জানিয়ে বক্তব্য দিয়ে আসছে।
টিআইবি বলছে, এই চুক্তির চূড়ান্ত বোঝা দেশের জনগণকে বইতে হবে। সে কারণে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সম্পৃক্ত করে চুক্তির শর্তগুলো পুঙ্খানুপঙ্খভাবে বিচার বিশ্লেষণ, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সংশোধন এবং প্রয়োজনে চুক্তি বাতিল করা দরকার।
সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দাবিতে বিএনপি ও সমমনাদের যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে গণফোরাম ও বাংলাদেশ পিপলস পার্টির উদ্যোগে আরামবাগের গণফোরাম চত্বরে বেলা ১১টা থেকে একঘণ্টা মানববন্ধন কর্মসূচি পালিন করা হয়।
মানববন্ধনে মন্টু বলেন, “গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন সরকারকে বিদায় করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে আমরা বদ্ধপরিকর।
“বাংলাদেশকে সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিকাশিত করতে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে এই আওয়ামী সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম চলছে, চলবে।”
মানববন্ধনে পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বাবুল সর্দার চাখারী, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, নির্বাহী সভাপতি জগলুল হায়দার আফ্রিক, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল হাসিব চৌধুরী, খান সিদ্দিকুর রহমান, আইয়ু্ব খান ফারুক, রওশন ইয়াজদানী, পিপলস পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য নাজমা আক্তার প্রমুখ বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন-
আদানির বিদ্যুৎ: ভারত সরকারের ভূমিকা কী? ব্যাখ্যা দাবি তৃণমূল এমপির
কয়লার দাম পর্যালোচনায় আদানিকে চিঠি বাংলাদেশের
আদানির সঙ্গে চুক্তির ভাগ ‘কে পাচ্ছে’, পদযাত্রায় বিএনপির প্রশ্ন