২০২২: ঝিম ভাঙা রাজনীতি দিচ্ছে উত্তাপের আঁচ

২০২৩ সালজুড়ে রাজনৈতিক দলগুলোর তৎপরতায় রাজপথ সরগরম থাকবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

প্রধান রাজনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Dec 2022, 06:59 PM
Updated : 29 Dec 2022, 06:59 PM

মহামারীতে ঘরবন্দি হয়েছিল রাজনীতিও, সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতিতে বছরের শুরু থেকেই রাজনীতি ফেরা চেনা রূপে; নির্বাচন ঘনিয়ে আসার মধ্যে বছর শেষে এখন উত্তাপ ছড়াচ্ছে।

নির্বাচনের আর এক বছর বাকি বলে ২০২২ সালটি ছিল রাজনৈতিক দলগুলোর ঘর গুছিয়ে প্রস্তুতি নেওয়ার বছর।

বিএনপি নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন জোরদারে মনোযোগ দিয়েছে। এই লড়াইয়ে মিত্রের সংখ্যা বাড়াচ্ছে তারা।

অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বিরোধীদের আন্দোলন মোকাবেলা এবং নির্বাচনের জন্য দলকে শক্তিশালী করতে সেরে নিয়েছে সম্মেলন।

দুই প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের পাল্টাপাল্টি ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে, যার উত্তাপ টের পাওয়া গেছে ১০ ডিসেম্বর বিএনপির এক সমাবেশ ঘিরে।

ওই সমাবেশ ঘিরে সংঘাত, তাতে একজনের মৃত্যু আসছে বছরে রাজনীতি উত্তপ্ত হওয়ার ইঙ্গিতই দিচ্ছে।

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতি আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুই মেরুতে কেন্দ্রীভূত হচ্ছে। এখনও এর বাইরে থাকা জাতীয় পার্টি গৃহবিবাদে জর্জরিত। প্রধান দুই বলয়ের বাইরে থাকা বাম কিংবা ইসলামী দলগুলো দৃশ্যমান কোনো ছাপ রাখতে পারেনি। জামায়াতে ইসলামী হয়ে পড়েছে একা।

আওয়ামী লীগ: নির্বাচনের পথে সম্মেলন

টানা এক যুগ ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ, দলের তৃণমূল পর্যায়ে নানা কোন্দল মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে, এমপি আর স্থানীয় নেতাদের দ্বন্দ্বও বাড়ছে।

এই অবস্থায় বছরের শেষে সম্মেলন করে আওয়ামী লীগ। তার লক্ষ্য কী ছিল- তা তুলে ধরে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, “আগামী নির্বাচন, বিশ্ব পরিস্থিতি সামনে রেখে আমাদের দেশেও সংকট আছে। জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, বিএনপির নেতৃত্বে সরকার হটানোর আন্দোলন… এমন পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের সামনে নানা চ্যালেঞ্জ।”

Also Read: পরিবর্তনে গেলেন না শেখ হাসিনা, কমিটি অপরিবর্তিতই

উন্নয়নের অগ্রযাত্রা তুলে ধরে গত এক দশক ধরে আওয়ামী লীগ সাফল্যের বয়ান দিলেও মহামারীর পর ইউক্রেইন যুদ্ধের অর্থনৈতিক প্রভাব তাতে বাদ সেধেছে। তারমধ্যেই নিতে হচ্ছে নির্বাচনের প্রস্তুতি।

সবমিলিয়ে সম্মেলনে আওয়ামী লীগের কমিটিতে কোনো পরিবর্তন আনেনি শেখ হাসিনা। দলীয় প্রধান হিসেবে দশম বার তার নির্বাচিত হওয়াটা ধরেই রাখা ছিল, পরিবর্তন না আনার কারণে সাধারণ সম্পাদক পদে ওবায়দুল কাদের টানা তৃতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পেলেন।

কমিটির অন্য পদগুলোতেও কোনো পরিবর্তন আসেনি। হাতেগোনা কয়েকটি অদল-বদল হয়েছে মাত্র।

ওবায়দুল কাদেরের ভাষায়, সামনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নেতৃত্বে অভিজ্ঞদের রাখার সিদ্ধান্তই নিয়েছেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা।

২০১৪ সালের পর ক্ষমতাসীনদের চ্যালেঞ্জ জানানোর মতো কোনো আন্দোলন তৈরি করতে পারেনি বিএনপি। তবে এবার তারা জোরদার আন্দোলনেই যাচ্ছে।

তবে বিএনপির আন্দোলন কঠোরভাবে মোকাবেলার প্রস্তুতিই নিচ্ছে আওয়ামী লীগ। বিএনপিকে ১০ ডিসেম্বর নয়া পল্টনে সমাবেশ করতে না দেওয়াটা তারই ইঙ্গিত দেয়। এরপর বিএনপির কার্যালয়ে পুলিশের অভিযান চালিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের গ্রেপ্তার করে আনা, পরে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে বন্দি করা কঠোর থাকার ইঙ্গিতই দিচ্ছে।

বিএনপি নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে এলেও তাতে নত না হওয়ার সুরই আওয়ামী লীগের। দলটির নেতারা বলছেন, গত দুই বারের মতো নির্বাচিত সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে।

মহাজোট না থাকলেও আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট এখনও রয়েছে। তবে জোটের বড় দল আওয়ামী লীগের আচরণে শরিকদের অসেন্তাষ এখনও কাটেনি।

ওবায়দুল কাদের বিডিনিউজ টায়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সামনে আরও চ্যালেঞ্জ আমাদের। পেছনের দিনগুলো আমাদের যেমন গেছে, সেখান থেকে আমরা আশা করি নতুন বছর ভালো যাবে। নির্বাচনের বছর বলে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি আমরা।”

বিএনপি: যুগপৎ আন্দোলনে

আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে হটিয়ে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের আন্দোলনকে এখন পাখির চোখ করেছে বিএনপি। আর সেই লক্ষ্য অর্জনে এবার জোট নয়, যুগপৎ আন্দোলনকে কৌশল হিসেবে নিচ্ছে দলটি।

বছরের মাঝামাঝি থেকে থেকেই নানা কর্মসূচি থেকে সরব হতে থাকে বিএনপি; সেই সঙ্গে সমমনা দলগুলোর সঙ্গে আলোচনাও চালাতে থাকে।

সেপ্টেম্বরের পর বিভাগীয় পর্যায়ে সমাবেশ করে তার সাফল্যে উজ্জীবিত হতে থাকে দলটি, যাদের মূল নেতা দণ্ড নিয়ে কারাগারে যাওয়ার পর এখন সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্তি পেলেও ঘরেই কাটছে তার দিন।

বিভিন্ন বিভাগে সমাবেশের পর ১০ ডিসেম্বর ঢাকার নয়া পল্টনে সমাবেশ করতে অনড় অবস্থান নিয়েছিল বিএনপি; কিন্তু তাতে ধাক্কা আসে পুলিশ তথা সরকারের অনুমতি না দেওয়া।

তারপরও সেই স্থানে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছিল বিএনপি; তবে তার তিন দিন আগে নয়া পল্টনে তাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢুকে অভিযান চালায় পুলিশ, ধরে নিয়ে যায় বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাসহ কয়েকশ নেতা-কর্মীকে। পরে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকেও গ্রেপ্তার করা হয়। তারা এখনও মুক্তি পাননি।

অভিযান ও নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের পর পুলিশের কথা মেনে বিএনপির গোলাপবাগে সমাবেশ করাকে অনেকে ‘আত্মসমর্পণ’ হিসেবে দেখলেও দলটির নেতারা বলছেন, সরকার কতটা অগণতান্ত্রিক, সেই রূপটি তারা এর মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরতে পেরেছেন।

Also Read: জোট ভেঙে ‘মুরুব্বি’ হয়ে যুগপৎ আন্দোলনে বিএনপি

সরকারকে চাপে রাখার কৌশল হিসেবে সংসদ থেকেও পদত্যাগ করেছে বিএনপি; যদিও এই দলের সাতজনের সংসদে না থাকায় কোনো সংকট দেখছেন না আওয়ামী লীগের নেতারা।

খালেদা জিয়ার কারাগারে যাওয়ার পর এই প্রথম বড় আন্দোলনের দিকে যেতে দেখা যাচ্ছে বিএনপিকে। সেই লক্ষ্যে ১০ দফা ঘোষণা করেছে দলটি; এই দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনে তাদের আগের মিত্রদের সঙ্গে আরও কয়েকটি দলকেও যুক্ত করেছে।

বিএনপির ১০ দফার সঙ্গে রাষ্ট্র ব্যবস্থা সংস্কারে ৪ দফা যুক্ত করে মোট ১৪ দফা ঘোষণা করেছে ৭টি রাজনৈতিক দলের মোর্চা ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা গণমিছিলের মধ্য দিয়ে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করেছি। আমার বিশ্বাস, নতুন বছর হবে গণতন্ত্র ফেরানোর আন্দোলনের বছর।

“এই বছরই আমরা একটা নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের যে দাবি দিয়েছি তার ফলাফল আনতে আন্দোলনকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারবো। সরকার দা্বি না মানলে অবশ্যই এই আন্দোলনের ফয়সালা আমরা রাজপথেই করব।”

জাতীয় পার্টি: গৃহবিবাদে নিশ্চল

সংসদে প্রধান বিরোধী দলের আসনে থাকা জাতীয় পার্টি কোনো কর্মসূচি ধরে নয়, দলের অভ্যন্তরীণ বিবাদ নিয়েই ছিল সংবাদের শিরোনামে। প্রতিষ্ঠাতা এইচ এম এরশাদের মৃত্যুর পর থেকে দলটি বেহল।

দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের এবং প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদের বিরোধে পাল্টাপাল্টি বহিষ্কার-কাউন্সিল আহ্বান জাতীয় পার্টিকে ভাঙনের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল।

তবে বছরের শেষ দিকে তাদের বৈঠকে সমঝোতার ইঙ্গিত মিললেও আদালতে এখনও আটকে আছে জি এম কাদেরর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন।

জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “চেয়ারম্যান ও প্রধান পৃষ্ঠপোষক দুজনকে কিছু লোক ভুল বুঝিয়েছিল। ওইসব লোক দুজনের কাছে নানান উল্টা-পাল্টা কথা বলে দূরত্ব বাড়িয়েছিলো। সেটা আমরা নিরসন করতে পেরেছি।”

এক সময় আওয়ামী লীগের মহাজোটে থাকা জাতীয় পার্টি আগামী নির্বাচনে কোন পথে যাবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়; যদিও দলটির চেয়ারম্যান কাদের একক নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন। তবে যাই হোক না কেন, বিভেদ ভুলে এক থাকার উপরই জোর দিচ্ছেন দলটির নেতারা।

ফিরোজ রশীদ বলেন, “জাতীয় পার্টির মধ্যে যে কোনো ভুল বোঝাবুঝি বলেন, কনফ্লিক্ট বলেন, তাতে আমাদের সাংঘাতিক ক্ষতি হবে। কারণ নতুন বছরটা বলতে পারেন নির্বাচনের বছর। এখন আমাদের পার্টিকে এক ও একতাবদ্ধ রাখতে হবে।”

বাম দলগুলো বিভিন্ন পথে

দেশের বাম দলগুলোর কেউ আওয়ামী লীগের বলয়ে রয়েছে, নতুন করে কেউ বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে যাচ্ছে, কোনোটি স্বতন্ত্র অবস্থান ধরে রেখেছে।

এক সময় বামফ্রন্ট ছিল বাম দলগুলোর নেতৃত্বশীল জোট। সেই জোট থেকে ওয়ার্কার্স পার্টি, সাম্যবাদী দল বেরিয়ে এখন রয়েছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলে।

আওয়ামী লীগের জোটে আরও রয়েছে জাসদ, ন্যাপ, শ্রমিক কৃষক সমাজবাদী দল, বাসদের একাংশ, গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি।

বামফ্রন্ট অকার্যকর হয়ে পড়ার পর জোটের প্রধান দুই দল বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) জোট বেঁধে চলছিল। পরে বাসদ ভেঙে কয়েক ভাগ হয়।

সিপিবি-বাসদ ২০১৭ সালে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও গণসংহতি আন্দোলনসহ কয়েকটি দলের সঙ্গে মোর্চা গড়ে তুলেছিল। কিন্তু তাও টেকেনি। ওয়ার্কার্স পার্টি ভেঙে গঠিত বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও গণসংহতি এখন বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে।

এই দুটি দল আবার আ স ম আবদুর রবের জেএসডি, মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্যসহ কয়েকটি দলকে নিয়ে গড়েছে ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’ নামে একটি মোর্চা।

আস ম রব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ওরা (সরকার) দেশের রাজনীতি, অর্থনীতিসহ সর্বক্ষেত্রে যে অবস্থার সৃষ্টি করেছে, এদের হটানো ছাড়া আর কোনো বিকল্প পথ খোলা নেই।

“আমরা সেই লক্ষ্যে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করছি। আমরা মনে করি, গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে, রাষ্ট্র ব্যবস্থা রূপান্তরের এই সংগ্রামে, এই আন্দোলনে আরও অনেক গণতান্ত্রিক দল রয়েছে।”

এই মেরুকরণের বাইরে থাকা সিপিবি মনে করে, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বলয়ের বাইরে বৃহত্তর বাম জোট গড়ে তোলা দরকার।

তবে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তারা জনগণের মৌলিক অধিকার আদায়ে সংগ্রামে রাজপথেই রয়েছেন।

“জনজীবনে দুর্ভোগ, দুঃশাসন, জীবনযাত্রার অসহনীয় খরচ বৃদ্ধিসহ নানা সমস্যার বিরুদ্ধে বছরজুড়ে আমরা লড়াই করেছি। পাহাড় সমান বৈষম্য দূর করে আগামী বছরে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ কায়েম করতে রাজপথে থাকব, এই আমাদের প্রত্যাশা।”

২০ দল বিলোপে জামায়াত একা

অনানুষ্ঠানিকভাবে বিলুপ্ত হয়েছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দল, তারপর ১২টি দল আলাদা জোট গড়লেও জামায়াতে ইসলামী হয়ে পড়েছে একা। তবে তারা বিএনপির দাবিগুলো অনুসরণ করে যুগপৎ আন্দোলনে থাকবে বলেই জানিয়েছে।

বিএনপি জোটে ১৯৯৭ সাল থেকেই ছিল জামায়াত। নানা সমালোচনার মধ্যেও এই দলকে রেখেই জোট নিয়ে চলছিল বিএনপি। একাত্তরর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরুর পর বিএনপিকে জামায়াতের সঙ্গ ছাড়ার আহ্বান জানানো হলেও তারা তাতে কান দেয়নি।

তবে ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গড়লে সেখানে জামায়াতকে নেয়নি বিএনপি। তবে নিবন্ধনহীন জামায়াতকে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট করার সুযোগ আবার করে দেয়।

বিএনপি মধ্য বামপন্থিদের কাছে টানতে যুগপৎ আন্দোলনের ঘোষণা দিলে তাদের ২০ দলীয় জোটের ১২টি দল গত ২২ ডিসেম্বর নতুন জোটের ঘোষণা দেয়। তবে মধ্য ডানপন্থি এই দলগুলোর নেতারা এটাও বলেন, তারা বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকছেন।

জোটে যোগ-বিয়োগের হিসাবে বাদ পড়ে যাওয়া গণফোরামের দুই-একটি সভা ছাড়া আর কোনো কর্মসূচি চোখে পড়েনি বছরজুড়ে।

‘রাজনীতিতে উত্তাপ বাড়বে’

নির্বাচন নিয়ে প্রধান দুই রাজনৈতিক গোষ্ঠীর মধ্যে মীমাংসা না হওয়ায় ভোট যতই এগিয়ে আসছে, ততই রাজনীতিতে উত্তাপ বাড়বে বলে মনে করছে সাধারণ মানুষ।

২০২৪ সালের জানুয়ারির শুরুতেই নির্বাচনের পরিকল্পনা নির্বাচন কমিশনের রয়েছে। ফলে ২০২৩ সালজুড়েই রাজনৈতিক দলগুলোর তৎপরতায় রাজপথ সরগরম থাকবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী, বর্তমান একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা মুস্তাফিজুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ক্ষমতাসীন দল এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর যে মুখোমুখি অবস্থা দেখা যাচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে না যে দেশে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে। ফলে শঙ্কা বলুন, আশঙ্কা বলুন, থেকেই যাচ্ছে।

“ভোটের মাঠে যদি সব দলের জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি না হয়, সেখানে রাজনীতি থাকবে না, জেঁকে বসবে সন্ত্রাস-সংঘর্ষ-সহিংসতা। আমি তারই পদধ্বনি শুনছি।”