৯২ বছর বয়সী কামবালার গোদাবাড়ীর বাড়িতে উপহার নিয়ে নৌ প্রতিমন্ত্রী।
Published : 28 Jan 2024, 02:07 PM
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে দিনাজপুরের বিরলে নৌকার প্রচারে অংশ নিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন ৯২ বছর বয়সী নারী শ্রীমতি কামবালা। ভোটে জয় পেয়ে উপহার নিয়ে তাকে দেখতে গেলেন এ আসন থেকে নির্বাচিত এমপি নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
রোববার দিনাজপুরের গোদাবাড়ীতে নিজের বাড়ির আঙিনায় প্রতিমন্ত্রীকে দেখতে পেয়ে উচ্ছ্বসিত কামবালা বলেন, "মুই খুব খুশি হইচো, মোর বেটা মোক দেখিবার আইচ্চে।"
সে সময় প্রতিমন্ত্রী খালিদের হাতে ছিল কামবালার জন্য শাড়িসহ আরও কিছু উপহার।
ভোটের আগে দিনাজপুর-২ (বিরল-বোঁচাগঞ্জ) আসনের বিরল উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের কালিয়াগঞ্জ বাজারে নির্বাচনি পথসভা করছিলেন খালিদ মাহমুদ। বর্ষীয়ান কামবালা সেদিন শতশত মানুষের ভিড় ডিঙিয়ে একেবারে পৌঁছে যান খালিদের সামনে।
সে সময় নৌকার প্রার্থী খালিদের হাতে ১০ টাকার একটি নোট দিয়ে কামবালা বলেছিলেন, বঙ্গবন্ধুর নৌকায় খালিদ যেন ভোট দেন আর এই টাকাও যেন ভোটের কাজে খরচ করা হয়।
খালিদ ছাড়াও সেখানে উপস্থিত অন্যদের কাছেও নৌকায় ভোট চান এই নারী।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর দ্বিতীয়বারের মত নৌ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে এসেছেন খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। ভোটের পর প্রথমবারের মত নির্বাচনি এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে তিনি যান কামবালার বাড়িতে।
ছনের ঘরের সামনে দাঁড়ানো প্রতিমন্ত্রীকে দেখে আবেগ ধরে রাখতে না পেরে কাঁদতে শুরু করেন কামবালা।
বৃদ্ধার হাতে শাড়ি, শাল, সোয়েটার ও বাঁধাই করা কামবালার দুটি ছবি তুলে দেন প্রতিমন্ত্রী। এছাড়া কামবালার পুত্রবধূকেও উপহার দেন।
খালিদকে আঙিনায় বসার অনুরোধ জানিয়ে কামবালা বলেন, "বেটা মোর ঘরত বসিবার জায়গা নাই, আগিনাত বস। মোরতায় এত কিছু আনিবার কি দরকার ছিল।"
চলতি ভাষায় দেওয়া উত্তরে খালিদ বলেন, "আমি তো ছেলের মতই, তাই দেখিবা আইচ্চু।"
পরে খালিদ বলেন, "আমি নির্বাচনের আগে এই এলাকায় একটি পথসভায় যখন এলাম, তখন হাজার হাজার মানুষের ভিড় উপেক্ষা করে এই নব্বই ঊর্ধ্ব কামবালা আমার কাছে পৌঁছান, তখন তিনি একটি দশ টাকার নোট উপহার দিয়ে আমাকে বলেন নৌকায় ভোট দিতে এবং এই দশ টাকা নির্বাচনের খরচ হিসেবে কাজে লাগাতে।
"আমি ছোটবেলা থেকে নির্বাচনে কাজ করেছি, প্রচার প্রচারণা করেছি, কিন্তু একজন ভোটার আমার কাছে (নৌকার প্রার্থীর কাছে) ভোট চেয়েছে এই অভিজ্ঞতা প্রথম। এই বয়সী একজন নারী নৌকার প্রার্থীর কাছে নৌকার ভোট চাইছেন, যে দাবিটা করেছেন এবং নির্বাচনি খরচ দিয়েছেন। সত্যিই আমি মুগ্ধ।
“আমি যখন নির্বাচিত হয়েছি, তখনই ঠিক করেছিলাম, শ্রীমতি কামবালার বাড়িতে যাব। আজকে এলাম, আসার পরে উনার ব্যবহারে আমি আরও মুগ্ধ।"
কামবালাকে সবচেয়ে ‘দামি ভোটার’ হিসেবে বর্ণনা করে খালিদ বলেন, “এই রকম একজন মানুষ যখন একজন প্রার্থীকে আশীর্বাদ করেন, তখন সৃষ্টিকর্তা তার দিকে চোখ তুলে তাকান।“
খালিদের ভাষ্য, “ আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য যে লড়াই করেছেন, তার সাক্ষী হয়ে আছেন কামবালা। সেই যে বঙ্গবন্ধুকে তিনি ভালোবেসেছেন, নৌকাকে ভালোবেসেছেন, আজকে নব্বই বছরেও বার্ধক্য উনাকে হার মানাতে পারেনি, বার্ধক্য উপেক্ষা করে নৌকা মার্কার প্রচারণা সভায় অংশ নিয়েছেন। এটা আমাদের জন্য একটা শিক্ষা।
“সত্য এবং সুন্দরের জন্য কোনো কিছু আটকায় না, এটা কামবালা প্রমাণ করেছেন, আমি তাকে শ্রদ্ধা জানাতে এখানে এসেছি।"