“সাধারণ মানুষকে যখন রাজপথে নামিয়ে আনতে পুরোপুরিভাবে সক্ষম হব, সেদিনই আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত হবে,” বলেন তিনি।
Published : 12 Dec 2023, 10:42 AM
সরকার পতনের আন্দোলনে ‘আগামী কয়েকটা দিন’ ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তবে বিএনপি এই ‘কয়টা দিনে’ কী করবে, তা খোলাসা করেননি তিনি।
বিএনপির প্রয়াত নেতা আ স ম হান্নান শাহ স্মরণে বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনায় অংশ নেন দলের মহাসচিব।
আ স ম হানান শাহ স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে এই আলোচনায় ফখরুল বলেন, “আমরা ভবিষ্যতে স্বাধীন থাকব কি না, আমার সার্বভৌমত্ব থাকবে কি না, আমার দেশ করদ রাজ্যে পরিণত হবে কি না, আমার গণতান্ত্রিক অধিকার থাকবে কি না, আমি আমার প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারব কি না, তার সব কিছু নির্ভর করছে আগামী কয়েকটা দিনের মধ্যে।”
বাংলাদেশের অবস্থাকে ‘ভয়াবহ’ দাবি করে বিএনপি নেতা বলেন, “সেই অবস্থা থেকে বেরুতে না পারলে গোটা জাতির অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। আজকে এই বিপদ, এই সংকট শুধু বিএনপির নয়। এই সংকট আজকে সমগ্র জাতির।”
আন্দোলনকে রাজপথে বিস্তৃত করে সাধারণ মানুষকে নামিয়ে আনতে হবে মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, “সাধারণ মানুষকে যখন রাজপথে নামিয়ে আনতে পুরোপুরিভাবে সক্ষম হব, সেদিনই আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত হবে।”
গত এক বছরে পুলিশের গুলিতে ২২ জন তরুণের প্রাণ গেছে, অসংখ্য নতো-কর্মী জেলে গেছে দাবি করে ফখরুল বলেন, “তারপরেও আমাদেরকে কখনো দমিয়ে রাখতে পারছে না, পারবে না।”
বিএনপির রোড মার্চ ঘিরে অগুণতি নারী-পুরুষ এমনকি শিশুরাও স্কুল থেকে বেরিয়ে আসছে দাবি করে তিনি বলেন, “তারা এই রোড মার্চকে স্বাগত জানাচ্ছে এবং এই সরকারের পতন চাচ্ছে।”
‘দলছুট-বহিষ্কৃতদের দিয়ে দল ভাঙার অপচেষ্টা’
বিএনপির সাবেক দুই নেতার তৃণমূল বিএনপিতে যোগদান নিয়েও কথা বলেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, “ওরা (সরকার) রাজনৈতিকভাবে কতটা দেউলিয়া হয়ে গেছে যে, এখন দল ভাঙার চেষ্টা করে।
“আমাদের দলছুট, বহিষ্কৃত লোকজনকে নিয়ে দল তৈরি করে ঝামেলা করতে চায়। আমরা খুব পরিষ্কারভাবে বলছি, এগুলো করে কোনো লাভ হবে না।
“মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে। তারা সব দলের অংশগ্রহণে একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। এর বিকল্প তারা কিছু চায় না।”
‘নিয়ন্ত্রিত রাষ্ট্র হয়ে গেছে’
’আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল-জাজিরা এক প্রতিনিধির সঙ্গে আলাপচারিতার বিস্তারিত তুলে ধরে বিএনপি নেতা দাবি করেন, মানুষ এখন দেশ ছাড়ার কথা ভাবছে।
কার সঙ্গে চলাফেরা, কার সঙ্গে উঠাবসা, তা নিয়েও এখন নজরদারি করা হয় দাবি করে তিনি বলেন, “এটা কোন সমাজ যে আমি একটা রেস্টুরেন্টে কথা বলতে পারব না? এটা কোন সমাজ যে, আমি বিয়ে বাড়িতে বা উৎসবে গিয়ে সেখানে আমার মনের কথা বলতে পারব না?”
বহু বুদ্ধিজীবী এখন টেলিভিশনের টকশোতে আসেন না দাবি করে বিএনপি নেতা বলেন, “কারণ কী? তাদেরকে ভয় দেখানো হয় যে আপনারা যদি গিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলেন তাহলে আপনাদের বিপদ হবে।
“সবচাইতে টাচি জায়গায় আঘাত করতে তারা। ছেলে-মেয়েরা যদি স্কুল-কলেজে পড়ে, তাদেরকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়, হুমকি দেয়া হয় অদৃশ্য জায়গা থেকে। এই রাষ্ট্রে আমরা বাস করছি।”
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে আলোচনায় বিএনপির ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ছাড়াও প্রয়াত আসম হান্নান শাহের ছেলে ও গাজীপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ রিয়াজুল হান্নানও বক্তব্য রাখেন।
(প্রতিবেদনটি প্রথম ফেইসবুকে প্রকাশিত হয়েছিল ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে: ফেইসবুক লিংক)