“ভবিষ্যতেও যদি বিএনপি ভোট বর্জন করে জনগণ কিন্তু ব্যাপকভাবে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে,” বলছেন তিনি।
Published : 13 Jun 2023, 03:09 PM
বরিশাল ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট পড়ার হার তুলে ধরে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি এই নির্বাচন বর্জন করলেও জনগণ ভোট বর্জন করেনি।
ভবিষ্যতে বিএনপি ভোট বর্জন করলেও জনগণ ব্যাপকভাবে সেসব নির্বাচনে অংশ নেবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
সচিবালয়ে মঙ্গলবার সাংবাদিক শিবুকান্তি দাশের লেখা মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক কিশোর উপন্যাস ‘মিলিটারি এলো গ্রামে’র মোড়ক উন্মোচন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।
আগের দিন বরিশাল ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা মেয়র নির্বাচিত হন। বিএনপি নির্বাচন বর্জন করলেও দুই সিটিতেই ৫০ শতাংশের কাছাকাছি ভোট পড়ে।
সে প্রসঙ্গ ধরে হাছান মাহমুদ বলেন, দুই নগরে ‘অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে’ ভোট হয়েছে; মানুষ উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ভোট দিয়েছে।
“বরিশালে ৫০ শতাংশের বেশি আর খুলনাতে ৫০ শতাংশের কাছাকাছি ভোট কাস্ট হয়েছে। এতে একটি জিনিস প্রমাণিত হয়েছে। বিএনপি ভোট বর্জন করলেও জনগণ ভোট বর্জন করে না। আমার মনে হয় বিএনপির এই ভোট থেকে এই শিক্ষাটা নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।”
হাছান মাহমুদ বলেন, “বিএনপি ভোট বর্জন করেছে, তাদের ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে নিষেধ করেছে, তাদের দলীয় কর্মীদের ভোটে অংশগ্রহণ করতে নিষেধ করেছে। কিন্তু দেখা গেছে তাদের দলীয় নেতাকর্মীরা দুটি সিটি করপোরেশনে ভোটে প্রার্থী হয়েছে এবং জনগণ তাদের ডাকে সাড়া দেয়নি।
“মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছে। এতে এটাই প্রমাণিত হয়েছে, বিএনপি ভোট বর্জন করলেও জনগণ ভোট বর্জন করে না। ভবিষ্যতেও যদি বিএনপি ভোট বর্জন করে জনগণ কিন্তু ব্যাপকভাবে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।”
বরিশাল ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে হেরে যাওয়া ইসলামী আন্দোলন রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশনের ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে।
এ নিয়ে এক প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “দলটি দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। কিন্তু যারা বিজয়ী হয়েছে, তারা তাদের চেয়ে প্রায় তিনগুণের কাছাকাছি ভোট পেয়েছে। এতে তারা বুঝতে পেরেছে যে আগামী দুই নির্বাচনেও তাদের কোনো ভরসা নেই। সেজন্য পরাজয়ের গ্লানি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য তারা এই ঘোষণা দিয়েছে।”
সোমবার ভোট চলাকালে বরিশালে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীমের ওপর হামলা হয়। হামলার জন্য তিনি ‘নৌকা’ মার্কার সমর্থকদের দায়ী করেন।
এ বিষয়ে এক প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “যারা এটি করেছে, নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন তদন্ত করছে। উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একজন প্রার্থীকে শারীরিকভাবে আঘাত করা কোনোভাবেই সমীচীন নয়।”
বরিশালে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীর ওপর হামলার প্রসঙ্গ ধরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন, বর্তমান সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ভোট ‘সম্ভব নয়’।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান বলেন, “আজকে দেশের সমস্ত পত্রিকায় লিখেছে অত্যন্ত সুষ্ঠু, সুন্দর ভোট হয়েছে। সমস্ত টেলিভিশন রিপোর্ট করেছে অত্যন্ত সুন্দর, সুষ্ঠু ভোট হয়েছে।
“মির্জা ফখরুলের গদবাধা কথা। মির্জা ফখরুল একই টেপরেকর্ড থেকে রেব হতে পারছেন না, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। তাকে আরেকটা টেপরেকর্ড দিলে ভালো হয়।”
হাছান মাহমুদ বলেন, “আমাদের দেশ ও আশপাশের দেশের নির্বাচনে, বিশেষ করে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অনেক সহিংসতা হয়, অনেক গণ্ডগোল হয়। সেই তুলনায় গতকালের নির্বাচন আমি মনে করি একেবারে একটি মডেল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সবকিছু ছাপিয়ে অত্যন্ত সুন্দর, শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হয়েছে।”
আইপি টিভি ও ইউটিউব চ্যানেলগুলোর সংবাদ প্রচারে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও অনেকেই তা মানছেন না। এ নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যম নীতিমালা অনুযায়ী নিবন্ধিত বা অনিবন্ধিত কোনো আইপি টিভি ও ইউটিউব চ্যানেল সংবাদ প্রচার করতে পারবে না।
“এ কথা সত্যি যে কিছু আইপি টিভি, বেশিরভাগই অনিবন্ধিত এবং কিছু ইউটিউব চ্যানেল কৌশল অবলম্বন করে সংবাদ প্রচার করছে, এটি আমাদের নজরে এসেছে, পত্রপত্রিকায়ও আমরা দেখেছি। এটার ব্যাপারে খুব সহসা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”