সরকারের পতনকে ‘ত্বরান্বিত’ করতে শান্তিপূর্ণ সেই সমাবেশে অংশ নেওয়ার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ফখরুল।
Published : 22 Jul 2023, 07:19 PM
সরকারের পদত্যাগের ‘এক দফা’ দাবিতে এবার ঢাকায় মহাসমাবেশের নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপি ও সমমনা জোটের সরকার হটানোর আন্দোলনের যুগপৎ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় ‘শান্তিপূর্ণ’ এ মহাসমাবেশ বলে ঘোষণা দেন বিএনপি মহাসচিব।
শনিবার বিকালে বিএনপির তিন সহযোগী সংগঠনের ‘তারুণ্যের সমাবেশে’ প্রধান অতিথির বক্তৃতা করছিলেন তিনি।
বিএনপি ছাড়াও যুগপৎ আন্দোলনে অংশ নেওয়া গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, গণফোরাম-পিপলস পার্টি, এলডিপি, লেবারপার্টি, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যসহ বিরোধী বিভিন্ন জোট নিজ নিজ প্ল্যাটফর্ম থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
এর আগে বিএনপি গত ১২ জুলাই সরকার হটাতে ‘এক দফা’ আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করে। সেটির প্রথম কর্মসূচি ছিল ১৮ ও ১৯ জুলাই সব মহানগর ও জেলা সদরে পদযাত্রা। এরপর ঢাকায় মহাসমাবেশের নতুন এ কর্মসূচি নিয়ে এল বিএনপিসহ জোটগুলো।
শনিবার তারুণের সমাবেশে বর্তমান সরকার ‘ফ্যাসিবাদী ও কর্তৃত্ববাদী’- এমন অভিযোগ করে তিনি সরকারের পদত্যাগ, বিদ্যমান সংসদের বিলুপ্তি, বর্তমান নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা, খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দির মুক্তি, সকল মিথ্যা গায়েবি মামলা প্রত্যাহার, ফরমায়েসী সাজা বাতিলের দাবি জানান।
তিনি বলেন, “সংবিধান ও রাষ্ট্রব্যবস্থার গণতান্ত্রিক সংস্কারের মাধ্যমে জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি, ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার এক দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে যুগপৎ আন্দোলনের পরবর্তি কর্মসূচি হচ্ছে আগামী ২৭ জুলাই বৃহস্পতিবার ঢাকায় দুপুর ২টায় শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।“
সরকারের পতনকে ‘ত্বরান্বিত’ করতে শান্তিপূর্ণ সেই সমাবেশে অংশ নেওয়ার জন্য তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘আমাদের মনে রাখতে হবে আমরা একটি নতুন বাংলাদেশের জন্য সংগ্রাম করছি, আমরা ভোটাধিকারের জন্য সংগ্রাম করছি।
‘‘তাই আহ্বান জানাব, তরুণরা জেগে উঠুন, যুবকেরা জেগে উঠুন। আপনাদের প্রতি এই দেশ মাতৃকার যে ডাক, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার যে ডাক, তারেক রহমানের যে ডাক সেই ডাকে সাড়া দিয়ে আমরা এই সরকারকে পরাজিত করে জনগণে সরকার প্রতিষ্ঠা করব- এই হচ্ছে আজকে আমাদের অঙ্গীকার।”
শনিবার সাড়ে তিনটায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয়তাবাদী যুবদল-জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল ও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের যৌথ উদ্যোগে তারুণ্যের সমাবেশ শুরু হয়, যা শেষ হয় পৌনে ৬টায়।
দুপুরের আগেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশ স্থলে জড়ো হতে শুরু করেন এই তিন সংগঠনের পাশাপাশি বিএনপির নেতাকর্মীরা। দুপুর ২টার আগেই সমাবেশ স্থল ভরে যায়। মঞ্চেও ভিড় বাড়তে থাকে নেতাদের।
এক পর্যায়ে নেতাদের ‘ভিড় সামলাতে না’ পেরে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে মঞ্চ। ২টার দিকে সমাবেশের মূল কার্যক্রম শুরুর আগে এ ঘটনায় এক সাংবাদিকসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাদের একজনের পা ভেঙে গেছে, মচকে গেছে আরেকজনের।
পরে ছোট একটা সাদা পিকআপ ভ্যান এনে অস্থায়ী মঞ্চ করা হয়। তাতে কয়েকটি চেয়ার ও বক্তৃতার ডায়াস স্থাপন করা হয়। সেই পিকআপে চেয়ারে বসেন বিএনপি মহাসচিব। সেখান থেকেই বক্তৃতা করেন তিনি। সমাবেশে যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সভাপতিত্ব করেন।
এর আগে এ তিন সংগঠনের প্রথম ‘তারুণ্যের সমাবেশ’ হয়েছিল গত ১৪ জুন, চট্টগ্রামে। এরপর বগুড়া, খুলনা, বরিশাল ও সিলেটে সমাবেশ হয়।