পূজায় ‘সহিংসতার’ খবরের অপেক্ষায় বিএনপি: কাদের

নিজেদের দেশের গণতন্ত্রের চেহারা আয়নায় দেখতে বিদেশিদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

নিজস্ব প্রতিবেদকঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Oct 2022, 02:45 PM
Updated : 3 Oct 2022, 02:45 PM

পূজামণ্ডপে না গিয়ে বিএনপি নেতারা ‘সহিংসতার সংবাদ’ শোনার অপেক্ষায় আছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেছেন, “তারা কান পেতে আছে, কখন গতবারের মত একটা খারাপ খবর আসে। কান পেতে আছে, লাঠিসোঠা নিয়ে কখন তারা বের হবেন।”

সোমবার বিকালে সার্বজনীন দুর্গোৎসবের অষ্টমীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে পূজামণ্ডপ পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

কাদের বলেন, “আজকে এই বিশ্বে যখন পদে পদে সাম্প্রদায়িকতা আছে, অশান্তি আছে এ সময়ে দেবী দুর্গার আগমন। ভক্তরা উৎসবমুখর পরিবেশে শারদীয় দুর্গা উৎসব পালন করছে। সার্বজনীন এই উৎসবে সব ধর্মের লোকেরা আসেছে।”

দেশজুড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সনাতন ধর্মালম্বীদের পাশে আছে উল্লেখ করে দলটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, “আপনাদের ভয়ের কোনো কারণ নেই। আমরা খোঁজ নিয়েছি, এখন পর্যন্ত সারাদেশে দুর্গোৎসব- উৎসবের মতই উদযাপন হচ্ছে। আমি সকল নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে বলব।”

আওয়ামী লীগের গত ১৩ বছরের শাসনামলে ‘মাত্র এক বছর’ দুর্গাপূজায় সহিংসতা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

“মাত্র একবার সারাদেশে কয়েক জায়গায় কুমিল্লায়, সিলেটের সুনামগঞ্জে, রংপুরে কয়েকদিন ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু ১২টি পূজা শান্তিপূর্ণভাবেই হয়েছে শেখ হাসিনার আমলে। বিশৃঙ্খলা ও সহিংসতা হয়েছে একটি মাত্র উৎসবে।

“সার্বজনীন এই উৎসবে হিন্দু-মুসলমান কোনো কথা নয়, সকল মানুষ এই পূজায় আসছে। আপনাদের নিরাপত্তা আমাদের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব এবং কর্তব্য।”

কাদের বলেন, “১৪ মাস পর নির্বাচন, এটাকে সামনে রেখে অনেক চক্রান্তের খেলা চলছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে উসকানিমূলক তৎপরতা চলছে।

“আমাদের সনাতন ধর্মাবলম্বী ভাই-বোনদের উৎসবের দিনগুলো অনেক স্পর্শকাতর। এখানে দুর্বৃত্তদল ঘটনা ঘটিয়ে আওয়ামী লীগের ঘাড়েও দোষ চাপায়। যেটা আমরা অনেকবার দেখেছি। কাজেই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।”

নিজেদের দেশের গণতন্ত্রের চেহারা দেখে বাংলাদেশকে নিয়ে মন্তব্য করার জন্য বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “সকালে বিকালে নালিশ পার্টি নালিশ করে, যাদের কাছে নালিশ করে আমি তাদের কাছে সবিনয়ে জিঙ্গাসা করছি, পৃথিবীর কোন দেশে তত্ত্বাবধায়ক অধীনে নির্বাচন হয়? একটা দেশ দেখান? বাংলাদেশে কেন হবে?

“পঁচা গলিত লাশ তত্ত্বাবধায়ককে আদালতই মিউজিয়ামে পাঠিয়ে দিয়েছে। এটা আবার কেন নিয়ে আসছেন, যারা তত্ত্বাবধায়কের গল্পের নালিশ শোনেন তারা কি পৃথিবীর ইতিহাস জানেন না? কোথায় আছে তত্ত্বাবধায়ক? বাংলাদেশে কেন? ”

তিনি বলেন, “নিজেদের দেশের আয়নায় নিজেদের দেশের গণতন্ত্রের চেহারা দেখুন, তারপরে বাংলাদেশ নিয়ে মন্তব্য করতে আসুন। আমরা সম্পূর্ণ ত্রুটিমুক্ত সেটা আমি বলব না, গণতন্ত্র একটা বিকাশমান প্রক্রিয়া, আমরা ইমপ্রুভ করছি, সামনের দিকে আরও ইমপ্রুভ করব।”

অন্য দেশের গণতন্ত্র নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে বিশ্বের অস্থিতিশীল পরিবেশ ঠাণ্ডা করতে কাজ করার পরামর্শও দেন তিনি।

মণ্ডপ পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মিহির লাল সাহা, আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য, জগন্নাথ হল ছাত্রলীগের সভাপতি কাজল দাস ও সাধারণ সম্পাদক অতনু বর্মন।