“আন্দোলনে আমরা সমর্থন দিয়েছি, নেতাকর্মীরা জেল খেটেছে। সেই আন্দোলনের হত্যা মামলায় জাতীয় পার্টি নেতাকর্মীদের আসামি করা হচ্ছে,” বলেন তিনি।
Published : 07 Oct 2024, 10:58 PM
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সাফল্য নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের।
তিনি বলেছেন, “জীবন দিয়ে দেশকে স্বৈরাচার মুক্ত করার কৃতিত্ব শুধুই ছাত্রদের। যারা সরাসরি বিরোধিতা করেছে, তারা ছাড়া আমরা সবাই এই ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় সমর্থন দিয়েছি। আমাদের দলের নেতাকর্মীরাও রক্ত দিয়েছে।
“ছাত্রদের জীবন দেওয়া সাফল্যকে গনিমতের মাল মনে করবেন না। রক্তে ভেজা এই সাফল্য ভাগবাটোয়ারার বিষয় নয়।”
সোমবার ঢাকার বনানীতে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের কার্যালয় মিলনায়তনে মতবিনিময় সভায় তিনি একথা বলেন।
আন্দোলনে সমর্থন দেওয়ার পরও হত্যা মামলায় জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের আসামি ও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
জিএম কাদের বলেন, “আন্দোলনে আমরা সমর্থন দিয়েছি, আমাদের নেতাকর্মীরা অংশ নিয়ে হামলা-মামলার শিকার হয়ে জেল খেটেছে। সেই আন্দোলনের হত্যা মামলায় জাতীয় পার্টি নেতাকর্মীদের আসামি করা হচ্ছে।
“গতরাতে মোহাম্মদপুর থেকে আমাদের জাতীয় পার্টি নেতা রফিকুল ইসলামকে এমন একটি মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
ছাত্র আন্দোলনে গুলির ঘটনায় প্রতিবাদের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেছি আমরা। রাজনীতিবিদদের মধ্যে সবার আগে রংপুরে গিয়ে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেছি আমি। শহীদ আবু সাঈদের শোকার্ত বাবা-মাকে সান্ত্বনা দিয়েছি। জাতীয় পার্টি যৌথসভা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সর্বতভাবে সমর্থন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
“আন্দোলনে অংশ নেওয়ার কারণে আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে রংপুরে মামলা হয়েছে। আমাদের নেতাকর্মীরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যোগ দেওয়ার কারণে গ্রেপ্তার হয়ে হাজতবাস করেছে। ১ জুলাই ছাত্ররা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন শুরু করলে, আমি ৩ জুলাই সংসদে ছাত্র আন্দোলনে সমর্থন দিয়ে বক্তৃতা করেছি। বক্তৃতায় বলেছি, ছাত্রদের এই আন্দোলন যৌক্তিক। চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংবিধান পরিপন্থি, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনা পরিপন্থি।”
অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “নির্বাচনের পরও যেন দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় থাকে। আমরা শুধু নির্বাচনের দিনের জন্য গণতন্ত্র চাই না। সুন্দর নির্বাচনের পর যেন ক্ষমতায় গিয়ে কোনো দল দানবে পরিণত না হয়, সেজন্য শাসন পদ্ধতির পরিবর্তন করতে হবে। কোনো দল ক্ষমতায় গিয়ে যেন সংবিধান পরিবর্তন করে পরবর্তী নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে না পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে।”
সংবিধান সংশোধনের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “আমরা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত সংবিধানের পরিবর্তন চাই না। তবে আমরা সংবিধানের পরিবর্তন চাই। যাতে দেশের মানুষ আজীবন গণতন্ত্রের সুফল ভোগ করতে পারে। দেশের মানুষের জন্য সুশাসন নিশ্চিত করতেই আমরা সংবিধানের সংশোধন চাই।”
সভায় জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু, প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, মোস্তফা আল মাহমুদ, আলমগীর সিকদার লোটন, মনিরুল ইসলাম মিলন, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আতাউর রহমান আতা, মাইনুর রাব্বী চৌধুরী রুম্মন, ভাইস চেয়ারম্যান মো. আজমল হোসেন লেবু, যুগ্ম মহাসচিব মো. নোমান মিয়া উপস্থিত ছিলেন।