“আমি আজকে ডিসেম্বরের প্রথম দিনে প্রথম একটা সুসংবাদ পেলাম, ইনশাল্লাহ সামনে আরও সুসংবাদ আমরা আশা করছি।”
Published : 01 Dec 2024, 03:17 PM
দুই দশক আগে শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলার বহুল আলোচিত মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ আসামিদের সবাইকে খালাস দিয়ে হাই কোর্ট যে রায় দিয়েছে, তাকে বিজয়ের মাসের ‘ন্যায়বিচার প্রাপ্তির একটি সুসংবাদ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের এক আলোচনা সভায় তিনি বলেছেন, “সেই গ্রেনেড হামলায় কখনোই বিএনপি ইনভলভ ছিল না। একটা বিদেশি শক্তি এই অপকর্মটা করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং আমাদের নেতা বিএনপির অ্যাককিং চেয়ারম্যান তারেক রহমান উনাকে ফাঁসাতে চেয়েছিল। একটা ভুল মিথ্যা মামলা তৈরি করে সাজানো একটি গল্প তৈরি করে সেই গল্পের ওপর ভিত্তি করে তাকে সাজাও দিয়ে দিয়েছি।”
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে ২০০৪ সালের ২১ অগাস্ট শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে ২৪ জনকে হত্যার ওই ঘটনা আন্তর্জাতিক পর্যায়েও আলোড়ন তুলেছিল।
জজ আদালত এ মামলায় ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১১ পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তাকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছিল।
আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি করে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাই কোর্ট বেঞ্চ রোববার তারেক-বাবরসহ সব আসামিকে খালাস দিয়েছে।
মির্জা আব্বস বলেন, “আমরা বিগত দিনগুলোতে ন্যায়বিচার পাই নাই। আমি আজকে ডিসেম্বরের প্রথম দিনে প্রথম একটা সুসংবাদ পেলাম, ইনশাল্লাহ সামনে আরও সুসংবাদ আমরা আশা করছি।”
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে করা সব মামলায় এমন ‘ন্যায় বিচার’ প্রত্যাশা করেন মির্জা আব্বাস।
তিনি বলেন, “আমি বলব যে, তারেক রহমান আমাদের মাঝে সহি সালামতে ফিরে আসবেন খুব তাড়াতাড়ি। এজন্য আল্লাহতালা তাকে সুস্থ করেছেন, সুস্থ রেখেছেন এবং খালাস দিয়েছেন।
“উনার খালাসের জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, আল্লাহতালা যেন উনাকে দীর্ঘায়ু দান করেন যাতে দেশের মানুষের সেবা করতে পারেন।”
২০০৭ সালে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় খালেদা জিয়ার মত তারেক রহমানও গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। পরের বছর মুক্তি পাওয়ার পর তিনি যুক্তরাজ্যে চলে যান। তারপর থেকে পরিবার নিয়ে সেখানেই আছেন।
ওয়ান ইলেভেনের সময়ে তারেক রহমানের ওপর তৎকালীন সরকারের ‘নিপীড়ন-নির্যাতনের’ কথা তুলে ধরে মির্জা আব্বাস বলেন, “দেশে থাকার সময়ে তাকে গ্রেপ্তার করে অনেক অত্যাচার করা হয়েছিল আপনারা জানেন, আমরা দেখেছি একই জেলে ছিল, চকবাজারের জেলে।
“আমাদের সামনে থেকে উনি আগের রাত্রে বিদায় নিয়ে গেলেন, তাকে আর দেখিনি বহুদিন, তারপর যখন ফেরত আনল, তখন তিনি একেবারেই অসুস্থ, চলতে-ফিরতে পারতেন না। এখন বিদেশে আল্লাহর রহমতে মোটামুটি সুস্থ, যদিও সম্পূর্ণ সুস্থ না, উনি সুস্থ হওয়ার কথা না। বিকজ ওই অন্য ধরনের অত্যাচার ছিল, সুদুরপ্রসারী ফল আছে এটার।”
জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে বাংলাদেশ স্বাধীনতা ফোরামের উদ্যোগে এই আলোচনা সভা হয়।
স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, নুরুল ইসলাম মনি, যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, ঢাকা মহানগর আরিফা সুলতানা রুমাসহ আরো অনেকে বক্তব্য রাখেন।