বিএনপির সমাবেশ পণ্ড হয়ে গেলেও জামায়াত ঠিকই সমাবেশ করতে পেরেছে ঢাকায়।
Published : 28 Oct 2023, 08:36 PM
বিনা অনুমতিতে রাজধানীতে সমাবেশ করার সুযোগ পাওয়া জামায়াতে ইসলামী পুলিশকে ধন্যবাদ দিলেও নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এবং পুরনো জোটসঙ্গী বিএনপির প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে রোববার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে।
শনিবার রাতে দলের প্যাডে পাঠানো এক বিবৃতিতে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম মাছুম এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, “রাজধানীর শাপলা চত্বরে জামায়াতের ঘোষিত মহাসমাবেশ বানচাল করার হীন উদ্দেশ্যে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে থেকে তিন শতাধিক নেতা-কর্মীকে পুলিশ অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করেছে। মহাসমাবেশে যোগ দিতে আসা নেতা-কর্মীদের বাস, লঞ্চ, ট্রেন থেকে নামিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এটিএম মাছুম বলেন, “সেই সাথে বিএনপির মহাসমাবেশে আওয়ামী লীগ ও পুলিশের হামলা, অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ, কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, আমীর শফিকুর রহমানসহ নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে রোববার সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা শান্তিপূর্ণ হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করছি।”
হরতালের এই কর্মসূচি ‘শান্তিপূর্ণভাবে সফল করার জন্য’ নেতা-কর্মীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল।
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রবর্তন, বর্তমান সরকারের পদত্যাগের দাবিতে ২৮ অক্টোবর বিএনপি ‘মহাসমাবেশ’ ডাকার পর একই কর্মসূচি দেয় বিরোধী দলটির দেড় যুগের শরিক জামায়াত। তবে তাদের কর্মসূচি দেওয়া হয় ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর স্মরণে, যেদিন ক্ষমতা হস্তান্তর করে বিএনপি-জামায়াত জোট।
‘অনুমতি ছাড়াই’ সমাবেশ করে পুলিশকে জামায়াতের ধন্যবাদ
সংঘর্ষের পর বিএনপির হরতালের ডাক
সে সময়ের রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহমেদ সেদিন তত্ত্বাবধায়কের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবেও শপথ নেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ ও তার জোটের শরিক দলগুলো রাজপথে দেয় কর্মসূচি। পুরানা পল্টন মোড়ে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে জামায়াত-শিবিরের বেশ কয়েকজন নিহত হয়।
১৭ বছর পর একই তারিখে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগেরও সমাবেশ থাকায় শুরু হয় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা।
জামায়াত মতিঝিলের শাপলা চত্বরে জমায়েত হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। তবে পুলিশ আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে তাদের পছন্দের স্থানে সমাবেশ করতে দিলেও জামায়াতকে অনুমতি দেয়নি।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মী আগের রাত থেকেই বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেট ও নয়া পল্টনে জড়ো হতে থাকে। শনিবার সকালে জামায়াতের কর্মীরা জড়ো হয় মতিঝিলের অদূরে আরামবাগ মোড়ে।
দুপুরের দিকে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ট্রাকে মঞ্চ বানিয়ে সমাবেশ করে জামায়াত। দীর্ঘদিন পর ‘মুক্ত আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে সমাবেশ করতে পরায়’ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ধন্যবাদ দেন জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মুজিবুর রহমান।
ততক্ষণে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সমাবেশটি পণ্ড হয়ে যায়। প্রথমে কাকরাইল মোড়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে এবং পরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় বিএনপির কর্মীরা। কয়েক ঘণ্টা সংঘর্ষের পর রোববার হরতাল ঘোষণা করে সমাবেশ শেষ করে দেন শীর্ষ নেতারা।