“এ জেনারেশন সব ক্ষমতার বিপরীতে দাঁড়িয়ে যে কাউকে টেনেহিঁচড়ে নামাতে পারে,” বলেন এ এনসিপি নেতা।
Published : 26 Apr 2025, 01:38 AM
ছাত্রজনতা হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়া পর্যন্ত ‘অন্য কিছুর নাম’ অন্তর্বর্তী সরকারের ‘মুখে মানায় না’ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
শুক্রবার শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ইনকিলাব মঞ্চের ‘শহীদি সমাবেশে’ তিনি বলেছেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের সবচেয়ে বৈধতা এ শহীদ পরিবার। শহীদদের হত্যার বিচারের আগে অন্য কিছু চিন্তা করলে এ সরকার সারা জীবন এ রক্তের দায়বদ্ধতা এড়াতে পারবে না।”
জুলাই, পিলখানা ও শাপলা চত্বরের ‘গণহত্যার‘ বিচার ও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে এ সমাবেশ আয়োজন করা হয়।
সারজিস বলেন, “যে ছাত্রজনতা রাজপথে নেমে জীবন দিয়ে খুনি হাসিনাকে বিতাড়িত করেছে, সে ছাত্রজনতার হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়া পর্যন্ত অন্য কিছুর নাম নেওয়া এ সরকারের মুখে মানায় না।
“রাজনৈতিক দলগুলো আজ সময়ের বিবেচনায় আগে সংস্কার নাকি নির্বাচন, এ প্রতিযোগিতায় নেমেছে। মাথায় স্পষ্ট করে ঢুকিয়ে রাখুন, সংস্কার নাকি নির্বাচন- এ খেলা বাদ দিয়ে প্রতিযোগিতায় নামুন যে সবার আগে গণহত্যাকারীদের বিচার হতে হবে।"
ভারত-বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়েও কথা বলেন সারজিস।
তিনি বলেন, "আমরা আধিপত্যবাদী ভারতের দিকে ঘুণাক্ষরেও তাকাব না। হাসিনাকে ফেরত না দেওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক স্বাভাবিক হতে পারে না।
“ভারত এ দেশের সঙ্গে প্রতিবেশীর সম্পর্ক ঠিক রাখতে হলে বাংলাদেশে খুনিদের ফেরত পাঠাতে হবে।”
তিনি বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানের আট মাস পেরিয়ে নয় মাসে আমরা। আজ আমরা শহীদদের নিয়ে যে দাবিতে দাঁড়িয়েছি, তা অগাস্টেই বাস্তবায়ন হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। অথচ আমাদের এখানে দাঁড়িয়ে এখনো এ দাবির কথা কেন বলতে হচ্ছে। এর কারণ হিসেবে বিভিন্ন মহল আমাদের শোনায়, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করলে বহির্বিশ্বে তাদের ইমেজ ক্ষুণ্ন হতে পারে।
“আমি তাদের বলতে চাই, বিগত ১৬ বছরে পিলখানা, শাপলা হত্যাকাণ্ডের সময় বহির্বিশ্ব কোথায় ছিল? ওই পশ্চিমাদের দৃষ্টিভঙ্গি তখন কোথায় ছিল, যখন হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে এ দেশের মানুষকে হত্যা করা হয়েছে।“
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া এ ছাত্রনেতা বলেন, “আজ থেকে ১০ মাস আগে বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ তাকিয়ে থাকত কখন যুক্তরাষ্ট্র স্যাংশন দেবে, কখন হাসিনা মারা যাবে, বহির্বিশ্ব কখন হস্তক্ষেপ করবে, কখন ইলেকশন আসবে, তারপর তারা রাজপথে নামবে “
আওয়ামী লীগ নেতাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “তাপস, নানক, কাদের- যাদের প্রত্যক্ষ মদদে হাসিনার নির্দেশ পিলখানা, শাপলা ও জুলাই হত্যাকাণ্ড হয়েছে, তাদের বিচারের আগে এ দেশে অন্য কিছুই হতে পারে না।
“রাজনৈতিক দলগুলোকে একটাই কথা বলব, এ জেনারেশনকে ভয় করুন। এ জেনারেশন সব ক্ষমতার বিপরীতে দাঁড়িয়ে যে কাউকে টেনেহিঁচড়ে নামাতে পারে।”
সমাবেশে জুলাই গণঅভ্যুত্থান, শাপলা ও পিলখানা হত্যাকাণ্ডে নিহতদের অনেক স্বজন উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশের (আপ বাংলাদেশ) প্রধান সংগঠক আলী আহসান জোনায়েদ, বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি নুরুল ইসলাম সাদ্দাম, ইসলামি ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি মারুফুর রহমান ও এবি পার্টির নেতা আসাদুজ্জামান ফুয়াদ।