মামলা হওয়ার ১০ বছর পর সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলা বিচারের জন্য হবিগঞ্জের আদালত থেকে আবারও সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়েছে।
Published : 11 Jun 2015, 05:18 PM
হবিগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ মো. আতাবুল্লাহ বৃহস্পতিবার মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর এ আদেশ দেন।
এর আগে গত ২ জুন জেলার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম নিশাত সুলতানার আদালত থেকে মামলাটি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়েছিল।
এ মামলায় অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি হওয়ায় বিএনপি নেতা আরিফুল হক চৌধুরী সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে এবং জি কে গউছ হবিগঞ্জের পৌর মেয়র পদ থেকে বরখাস্ত হয়ে বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
এর আগে দুইবার মামলাটি সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের হাতে এলেও বাদীপক্ষের নারাজিতে তা বিচার পর্যন্ত যায়নি। আইনে বেঁধে দেওয়া ১৩৫ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি না হওয়ায় মামলাটি হবিগঞ্জের আদালতে ফিরে যায়।
২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জের বৈদ্যের বাজারে জনসভায় গ্রেনেড হামলায় আওয়ামী লীগ নেতা শাহ এএমএস কিবরিয়াসহ পাঁচজন নিহত হন। ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় অর্থমন্ত্রী ছিলেন কিবরিয়া।
হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মজিদ খান ওই রাতেই হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা দায়ের করেন।
প্রথমে সিআইডির এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান মামলাটি তদন্ত করে ২০০৫ সালের ২০ মার্চ ১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
ওই অভিযোগপত্রে জিয়া স্মৃতি ও গবেষণা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আবদুল কাইউম, ও ব্যাংক কর্মকর্তা আয়াত আলী, কাজল মিয়া, সাবেক জেলা ছাত্রদলের সহ-দপ্তর সম্পাদক সেলিম আহমেদ, জিয়া স্মৃতি গবেষণা পরিষদ জেলা শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলীসহ স্থানীয় বিএনটির কয়েকজনকে আসামি করা হয়।
মামলার বাদী আবদুল মজিদ খান নারাজি জানালে ২০০৬ সালের ৩ মে সিলেটের দ্রুত বিচার আদালত তা খারিজ করে দেয়। এরপর ১৪ মে তিনি হাই কোর্টে আপিল করেন।
পরে উচ্চ আদালতের আদেশে জরুরি অবস্থার সময় এ মামলার অধিকতর তদন্ত শুরু হয়, যার দায়িত্ব দেওয়া হয় সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলামকে।
তিনি ২০১১ সালের ২০ জুন আরও ১৪ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেন। আগের আসামিদেরও এতে রাখা হয়।
এ অভিযোগপত্রে নতুন যোগ হয় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আব্দুল হান্নান, লস্করই তৈয়বার সদস্য আব্দুল মজিদ কাশ্মিরি, সাবেক প্রতিমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুর ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন, মহিউদ্দিন অভি, শাহেদুল আলম দিলু, সৈয়দ নাঈম আহমেদ আরিফ, ফজলূল আলম মিজান, মিজানুর রহমান মিঠু, মোহাম্মদ আব্দুল হাই, মোহাম্মদ আলী, মুফতি সফিকুর রহমান, বদরুল এনায়েত ওরফে মো. বদরুল, বদরুল আলম মিজানের নাম।
কিন্তু ২০১১ সালের ২৮ জুন কিবরিয়ার স্ত্রী আসমা কিবরিয়া হবিগঞ্জের বিচারিক আদালতে আবারও নারাজি আবেদন করেন।
২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি নারাজি আবেদন গ্রহণ করে সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল তৃতীয়বারের মতো এ মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেন সিআইডির সিলেট অঞ্চলের সহকারী পুলিশ সুপার মেহেরুন নেছা পারুলকে।
অধিকতর তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর আরিফুল হক চৌধুরী, জি কে গউছ এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীসহ ১১ জনের নাম যোগ করে আদালতে সংশোধিত সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেন এএসপি পারুল। নতুন আসামিদের নিয়ে এ মামলায় আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৫ জনে।