বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে খুঁজে বের করতে অনুসন্ধান অব্যাহত রাখার নির্দেশ দিয়ে রুলের নিষ্পত্তি করে দিয়েছে হাই কোর্ট।
Published : 20 Apr 2015, 12:48 PM
খালেদার সঙ্গে সালাহ উদ্দিনের স্ত্রীর সাক্ষাৎ
সালাহ উদ্দিনকে নিয়ে খালেদা জিয়া উদ্বিগ্ন: মওদুদ
সালাহ উদ্দিনকে ‘ফেরত’ না দিলে কঠিন পরিণতি: খালেদা
সালাহ উদ্দিনকে খুঁজে পাওয়া গেল কি-না সে বিষয়ে আগামী ছয় মাস অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে পুলিশ কর্তৃপক্ষকে।
বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের বেঞ্চ সোমবার এই আদেশ দেয়।
আবেদনকারীর পক্ষে এ বিষয়ে শুনানিতে অংশ নেন খন্দকার মাহবুব হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. বশিরউল্লাহ।
সালাহ উদ্দিনের স্ত্রী হাসিনা আহমেদের আবেদনে গত ১২ মার্চ এই রুল জারি করেছিল হাই কোর্ট। সালাহ উদ্দিনকে কেন খুঁজে বের করে আদালতে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হবে না- সরকারকে তা জানাতে বলা হয়েছিল রুলে।
সেই রুলের ওপর দুই পক্ষের শুনানি শেষে আদালত সোমবার রায় দিল।
আদেশের পর মো. বশিরউল্লাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আদালত গুরুত্ব দিয়ে সালাহউদ্দিনের খোঁজ অব্যাহত রাখতে বলেছেন। তার উদ্ধার হওয়া বা ছয় মাস যেটি আগে হয় সে সময় পর্যন্ত প্রতি মাসের প্রথমে পুলিশ কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র সচিবের কাছে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।”
হাসিনা আহমেদের অভিযোগ, গত ১০ মার্চ রাতে উত্তরার একটি বাসা থেকে তার স্বামীকে তুলে নিয়ে যায় গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা। ‘নিখোঁজ’ হওয়ার আগে ফোন করে তাকে বিষয়টি জানানোরও চেষ্টা করেন এই বিএনপি নেতা।
এরপর তিনি হাই কোর্টে গেলে আদালত ওই রুল জারি করে। সে অনুযায়ী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাঁচটি প্রতিবেদন ও দুটি পুলিশ ডায়েরি ১৫ মার্চ আদালতে উপস্থাপন করেন।
উপস্থাপিত তথ্যে দেখা যায়, যে বাসা থেকে সালাহ উদ্দিন আহমেদকে ‘তুলে নেওয়ার’ অভিযোগ করেছে পরিবার, সেখানে খুঁজে এসে রায়হান নামে এক ব্যক্তির অবস্থান ও চলে যাওয়ার তথ্য পাওয়ার কথা বলেছে পুলিশ।
বিভিন্ন বাহিনীর পক্ষ থেকে আদালতে পাঠানো প্রতিবেদনে বলা হয়, পুলিশের কোনো শাখা এই বিএনপি নেতাকে আটক বা গ্রেপ্তার করেনি। তার কোনো খোঁজও তারা পায়নি।
সালাহ উদ্দিনকে খুঁজে বের করার ব্যর্থতা চিহ্নিত করতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনেরও আবেদন করেছিলেন খন্দকার মাহবুব। তবে আদালত সে বিষয়ে কোনো আদেশ দেয়নি।
স্বামীর খোঁজে প্রধানমন্ত্রীর কাছেও দুই দফা স্মারকলিপি দিয়েছেন সালাহ উদ্দিনের স্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎও চেয়েছেন তিনি।
রাজনৈতিক উত্তাপের মধ্যে গত জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গ্রেপ্তার হওয়ার পর সালাহ উদ্দিনের নামে হরতালসহ নানা কর্মসূচির বিবৃতি গণমাধ্যমে আসছিল। তবে নিজের অবস্থান প্রকাশ করছিলেন না এই রাজনীতিক।
সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে ১৯৯-৯৬ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার এপিএস ছিলেন সালাহ উদ্দিন। পরে তিনি চাকরি ছেড়ে কক্সবাজারের সংসদ সদস্য হন এবং প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। তার স্ত্রী হাসিনাও সংসদ সদস্য ছিলেন।
দশম সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৩ সালে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও যুগ্মমহাসচিব রিজভী গ্রেপ্তার হওয়ার পর মুখপাত্রের দায়িত্ব নিয়েছিলেন সালাহ উদ্দিন। সে সময়ও তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।