সালাহ উদ্দিন আহমেদকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীই ধরে নিয়েছে দাবি করে তাকে ফেরত দেওয়া না হলে সরকারের ‘কঠিন পরিণতি’ হবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
Published : 22 Mar 2015, 05:59 PM
সালাহ উদ্দিনের অন্তর্ধানের দ্বাদশ দিন রোববার এক বিবৃতিতে এই হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেছেন, “এখনও তাকে মুক্তি দেওয়া, আদালতে হাজির করা, এমনকি গ্রেপ্তারের কথা স্বীকার পর্যন্ত করা হচ্ছে না।
“অবিলম্বে সালাহ উদ্দিন আহমেদকে তার পরিবারের কাছে ফেরত দেওয়ার কিংবা আদালতে হাজির করার জন্য আমি জোর দাবি জানাচ্ছি।”
গত ১০ মার্চ সালাহ উদ্দিনের অন্তর্ধানের পর থেকে তার পরিবার ও বিএনপি অভিযোগ করে আসছে, গোয়েন্দা পুলিশই তাকে তুলে নিয়েছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেই অভিযোগ নাকচ করে আসছে।
অজ্ঞাত স্থানে থেকে এক মাস ধরে বিবৃতি পাঠিয়ে আসা বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিবকে খোঁজা হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পেলে তাকে গ্রেপ্তার করবে পুলিশ।
সালাহ উদ্দিনের সন্ধান পেতে সরকার প্রধানের হস্তক্ষেপ চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ইতোমধ্যে স্মারকলিপি দিয়েছেন তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ। রোববারও এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।
বিবৃতিতে খালেদা জিয়া দলীয় নেতা অন্তর্ধানে সরকারকে দায়ী করে বলেন, “তার মতো একজন রাজনীতিবিদ এভাবে উধাও হয়ে যাবে, আর ক্ষমতাসীনরা সেটা নিয়ে উৎকট রসিকতা করে পার পেয়ে যাবে, এমন মনে করার কোনো কারণ নেই।”
সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ‘নিখোঁজ’ কিংবা ‘গুম’ করার অভিযোগ তুলে এনিয়ে সোচ্চার হতে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি মানবাধিকার সংগঠন ও সচেতন নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপি চেয়ারপারসন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, “সালাহ উদ্দিন আহমেদকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার আগে-পরে স্থানীয় তরুণ ও নিরাপত্তাকর্মী এবং বাসার দারোয়ানের সঙ্গে তাদের কথা হয়েছে। তাদের পরিচালিত অভিযানের অনেক প্রত্যক্ষদর্শী রয়েছে।
“কাজেই তাকে গ্রেপ্তারের কথা অস্বীকার করে দায় এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার বিষয়টাও সরকারের মনে রাখা উচিৎ।”
লাগাতার অবরোধ ডেকে খালেদা জিয়ার নিজের কার্যালয়ে অবস্থানের মধ্যে রুহুল কবির রিজভী গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে সাবেক সংসদ সদস্য সালাহ উদ্দিনের নামেই হরতাল ডেকে বিবৃতি আসছিল।
সরকারবিরোধী এই আন্দোলনের মধ্যে এর আগে বহু নেতা-কর্মীকে গুম করা হয়েছে বলে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলের অভিযোগ।
খালেদা বলেন, “নিখোঁজ ও গুম করে ফেলা আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এক নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। গ্রেপ্তারের কথা অস্বীকারের পর বিভিন্ন জায়গায় নেতা-কর্মীদের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধারের ঘটনাও প্রায়ই ঘটেছে। অনেকের পরিবার লাশ পর্যন্ত ফেরত পায়নি।”
এই প্রসঙ্গে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলী, লাকসামের সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলাম হিরু, লাকসাম পৌর বিএনপি সভাপতি হুমায়ুন কবীর পারভেজ ও ঢাকার সাবেক কমিশনার চৌধুরী আলমের অন্তর্ধানের কথা তুলে ধরেন তিনি।
“এদের মতো অনেককে গ্রেপ্তারের পর গুম করা হয়েছে। দীর্ঘদিনেও তাদের কোনো হসিদ পাওয়া যায়নি।”
‘অবৈধ’ সরকার ক্ষমতা ধরে রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে হিটলারের ‘গেস্টোপো বাহিনী’র মতো ব্যবহার করছে বলেও অভিযোগ করেন খালেদা।