নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আগামী ৪, ৫ ও ৬ নভেম্বর সারাদেশে আবার হরতাল ডেকেছে ১৮ দলীয় জোট।
Published : 02 Nov 2013, 08:54 AM
নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে সংলাপে সরকারের ‘সদিচ্ছা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলে শনিবার নতুন এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
একই দাবিতে গত সপ্তাহে টানা ৬০ ঘণ্টার হরতাল শেষে এই সপ্তাহেও তিনটি দিন যাচ্ছে হরতালে। গত ২৭, ২৮ ও ২৯ অক্টোবর হরতালে সহিংসতায় অন্তত ১৪ জন নিহত হয়।
গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে হরতালের ঘোষণা দিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব তাতে কোনো ধরনের বাধা না দিতে সরকারকে হুঁশিয়ারও করে দেন।
“সরকারকে বলে দিতে চাই, আমাদের শান্তিপূর্ণ হরতাল কর্মসূচিতে বাধা দেয়া হলে উদ্ভূত পরিস্থিতির দায়ভার আপনাদের ওপর বর্তাবে।”
বিরোধী দলের ‘জনদাবিতে' সরকার কান না দেয়ায় ‘বাধ্য’ হয়ে হরতাল ডাকা হয়েছে বলে দাবি করেন ফখরুল।
“দেশের ৯০ ভাগ মানুষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়। কিন্তু সরকার একতরফাভাবে একদলীয় নির্বাচনের পথে অগ্রসর হচ্ছে। এজন্য বাধ্য হয়েই আমরা হরতাল আহ্বান করছি।”
সংলাপে সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন,“সরকার সংলাপ ও সমঝোতা চায় না। প্রধানমন্ত্রী বিরোধীদলীয় নেতাকে টেলিফোনে সংলাপের আমন্ত্রণ জানিয়ে নাটক করেছেন।
“২৯ অক্টোবরের পর নতুন তারিখ ঠিক করে সংলাপের জন্য আমন্ত্রণ জানানোর জন্য বিরোধীদলীয় নেতা প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানালেও তা তিনি (প্রধানমন্ত্রী) রক্ষা করেননি। এ থেকে বোঝা যায়, সরকার সংলাপ চায় না।”
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সংবাদপত্র ও গণমাধ্যমের সব রকমের যানবাহন, অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার ব্রিগেডের গাড়ি ও হাজিদের যানবাহন হরতালের আওতামুক্ত থাকবে।
আগামী ৪ ও ৬ নভেম্বর জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা রয়েছে, যাতে অংশ নিচ্ছে ২১ লাখ শিক্ষার্থী।
এই পরীক্ষা হরতালের আওতামুক্ত থাকবে কি না- জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, কী কী আওতামুক্ত থাকবে, তা তো আগেই জানানো হয়েছে।
বিরোধী দলের ওপর দমন-পীড়নের অভিযোগ তুলে ফখরুল বলেন, গত ৬০ ঘণ্টার হরতালে বিরোধী দলের ২০ নেতা-কর্মীকে হত্যা, ৬ হাজারের অধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিরোধী দলের লক্ষাধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে।
তিনি অবিলম্বে জমিয়তে উলামা ইসলামের মহাসচিব মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস, বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সহ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, ইসলামী ঐক্যজোটে নেতা সাখাওয়াত হোসেনসহ আটক নেতা-কর্মীদের মুক্তি দাবি করেন।
সকালে ১৮ দলীয় জোটভুক্ত দলগুলোর মহাসচিবদের বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে আসেন ফখরুল। তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সহ দপ্তর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি ও শামীমুর রহমান শামীম।
বৈঠকে জামায়াতে ইসলামীর রেদোয়ান উল্লাহ শাহেদী, এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ, খেলাফত মজলিশের আহমেদ আবদুল কাদের, জাগপার খন্দকার লুৎফর রহমান, এনডিপির আলমগীর মজুমদার, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ইসলামিক পার্টির আবদুর রশীদ প্রধান, কল্যাণ পার্টির আবদুল মালেক চৌধুরী, পিপলস লীগের সৈয়দ মাহবুব হোসেন, ন্যাপের গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, লেবার পার্টির হামদুল্লাহ আল মেহেদি, জমিয়তে উলামা ইসলামের শাহিনুর পাশা চৌধুরী, ন্যাপ ভাসানীর হাসনাত খান ভাসানী, মুসলিম লীগের শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, বিজেপির সালাহউদ্দিন মতিন উপস্থিত ছিলেন।