Published : 01 Apr 2013, 06:46 AM
এর মধ্যে সংবাদ সংগ্রহের দায়িত্বে থাকা টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন নিউজের একটি গাড়িও রয়েছে। আহত চালক মো. সোলায়মানকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ সময় বিএনপি কার্যালয়ের আশেপাশের এলাকায় কয়েকটি ককটেল ফাটানো হয় বলেও ঘটনাস্থল থেকে জানান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিবেদক সুমন মাহামুদ।
পল্টন থানার ডিউটি অফিসার খোরশেদ আলম বলেন, “প্রতিবাদ সমাবেশে আসা কর্মীরাই গাড়িতে আগুন দিয়ে ককটেল ফাটিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে।”
ঘটনার পর কিছুক্ষণের জন্য ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আশেপাশের এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
রোববার রাতে ‘অজ্ঞাতপরিচয় দুর্বৃত্তরা’ মোটর সাইকেলে করে এসে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয় লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায় বলে বিএনপির অভিযোগ।
ওই ঘটনার প্রতিবাদেই সোমবার সকালে নয়া পল্টনে কার্যালয়ের সামনে এই প্রতিবাদ সমাবেশ করে দলটি।
সুমন মাহমুদ জানান, বেলা পৌনে ১২টার দিকে অস্থায়ী মাইক বসিয়ে এই প্রতিবাদ সমাবেশ শুরু হয়। এতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, সহসভাপতি আবদুল্লাহ আল নোমান বক্তব্য দেন।
এরপরই মির্জা ফখরুল বক্তব্য দিতে এসে বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয় লক্ষ্য করে গুলির ঘটনার প্রতিবাদে ৪ এপ্রিল সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেন এবং মঙ্গলবার ১৮ দলীয় জোটের হরতাল সফল করার আহ্বান জানান।
সাড়ে ১২টার দিকে তার বক্তব্য শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কার্যালয়ের পশ্চিম দিকে গাজী টাওয়ারের কাছে দাঁড়ানো একটি সাদা মাইক্রোবাসে আগুন জ্বলে ওঠে।
এরপর পূর্ব দিকে একটি গাড়ির শো রুমের কাছে এটিএন নিউজের গড়ি ও আরেকটি প্রাইভেট কারে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।
এ সময় কার্যালয়ের সামনে ছুটাছুটি শুরু হয় এবং মির্জা ফখরুল, সহসভাপতি আবদুল্লাহ আল নোমানসহ দলের নেতারা দ্রুত দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে পড়েন। এরপর কার্যালয়ের কলাপসিবল গেইট বন্ধ করে দেয়া হয়।
এটিএন নিউজের প্রতিবেদক তৌহিদ হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, মির্জা ফখরুলের বক্তব্য শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিএনপি কার্যালয়ের উল্টো দিকে একটি গাড়ি জ্বলতে দেখে তিনিসহ গণমাধ্যম কর্মীরা সেদিকে যান।
এরপর এটিএন নিউজের গাড়িটি এবং অন্য একটি প্রাইভেট কারে আগুন দেয়া হয়।
তৌহিদ জানান, তিনি জ্বলন্ত গাড়ির কাছে এসে চালক মো. সোলায়মানকে পাশে পড়ে থাকতে দেখেন। তার চুল পুড়ে গেছে এবং শরীরের কোথাও কোথাও ঝলসে গেছে।
সোলায়মানের বরাত দিয়ে তৌহিদ জানান, তিন যুবক হঠাৎ এসে গাড়ির জানাল দিয়ে বোতল থেকে সিটের ওপর দাহ্য পদার্থ ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। সঙ্গে সঙ্গে গাড়িতে আগুন ধরে যায়। সোলায়মান কোনোক্রমে গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিবেদক কামাল তালুকদার জানান, গণমাধ্যমের গাড়ি আক্রান্ত হওয়ায় সেখানে থাকা অন্যান্য টেলিভিশন চ্যানেলের গাড়ি দ্রুত সরে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় বৈশাখী ও মাছরাঙা টেলিভিশনের গড়িতে ঢিল ছুড়ে হামলার চেষ্টা করে বিএনপি কর্মীরা।
এ সময় ছুটোছুটির মধ্যে পাঁচটি ককটেলে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। পুলিশের জলকামান ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি দ্রুত এসে জ্বলন্ত গাড়ি তিনটির আগুন নেভায়।
পরে মির্জা ফখরুলসহ নেতাকর্মীরা ওই এলাকা ত্যাগ করেন।