Published : 06 May 2025, 12:04 PM
মানিকগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের ওপর নির্বিচারে হামলার অভিযোগে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও সাবেক পুলিশ সুপার গোলাম আজাদ খানসহ ২১৭ জনের নামে মামলা হয়েছে।
সোমবার দুপুরে মানিকগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর মানিকগঞ্জের প্রতিনিধি মেহেরাব হোসাইন বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
মালায় অজ্ঞাত পরিচয় আরও ১০০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে বলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আজিজুল হক অপু জানান।
মামলার বরাতে আজিজুল বলেন, গত ১৮ জুলাই সকাল ১০টায় মানিকগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির ১ নম্বর ভবনের সামনে থেকে একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করে ছাত্র-জনতা। মিছিলটি খালপাড় ব্রিজের দিকে গেলে, পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ওঁৎ পেতে থাকা আসামিরা দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায় এবং হাতবোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।
হামলায় মো. আরমান হোসাইন, হাসনা হেনা, মাহফুজ হোসাইন ও তন্ময়সহ অনেকে গুরুতর আহত হন। তাদের মধ্যে আরমান ও হাসনাকে ব্রিজের ওপর ফেলে ধারালো রামদা ও চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করা হয়। প্রথম দফার হামলার পর দুপুর ১২টার দিকে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন মানরা এলাকায় শিক্ষার্থীরা আবারও জমায়েত হয়।
এ সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য জাহিদ মালেক ও সাবেক পুলিশ সুপার গোলাম আজাদ খানের নেতৃত্বে ও হুমকিতে ছাত্রলীগ ও আওয়ামীপন্থী বাহিনী আবারও দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।
এজাহারে বলা হয়, আহত শিক্ষার্থীরা মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে গেলে চিকিৎসক ও কর্মীরা তাদের ফিরিয়ে দেন। এরপর মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (কর্নেল মালেক মেডিকেল) গেলে সেখানেও তাদের একই পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। হাসপাতালের উপপরিচালক ও মামলার ৩২ নম্বর আসামি জহিরুল করিম ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের সঙ্গে মিলে আহতদের জোরপূর্বক বের করে দেন। পরে শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে মানিকগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এস এম জাহিদ, সাবেক সাংসদ নাঈমুর রহমান দুর্জয়, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মহিউদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম এবং যুবলীগ, কৃষক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ রয়েছে।
এছাড়া সাবেক জনপ্রতিনিধি, আইনজীবী, চিকিৎসক ও পুলিশের সাবেক কর্মকর্তার নামও রয়েছে আসামির তালিকায়।