আগামী সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলে অনেক সমস্যা দূর হবে বলে যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
Published : 17 Jun 2022, 12:27 AM
গত ১৮-২১ মে সংসদীয় কমিটির একটি প্রতিনিধি দল যুক্তরাষ্ট্র সফর করে। সফরের সময় তারা মার্কিন সিনেটর টেড ক্রুজ, কংগ্রেসম্যান স্টিভ শ্যাবট এবং ডোয়াইট ইভান্সের সঙ্গে বৈঠক করে।
এছাড়া দেশটির দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক অ্যাসিন্ট্যান্ট সেক্রেটারি অব স্টেট ডোনাল্ড লু’র সঙ্গে বৈঠক করে তারা। এর বাইরে থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) সঙ্গেও বৈঠক করে সংসদীয় প্রতিনিধি দল।
সংসদীয় কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান, নুরুল ইসলাম নাহিদ, কাজী নাবিল আহমেদ ও নাহিম রাজ্জাক ছিলেন প্রতিনিধি দলে।
বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে স্থায়ী কমিটির যুক্তরাষ্ট্র সফরের অভিজ্ঞতা নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি ফারুক খান সাংবাদিকদের বলেন, “আইআরআইয়ের প্রধানের সঙ্গে আমাদের নির্বাচন নিয়ে মতবিনিময় হয়েছে। আমরা বলেছি, পৃথিবীর অন্য সব গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় বাংলাদেশেও সেইভাবে হয় এবং হবে। তবে পৃথিবীর সবখানেই নির্বাচনে যে হেরে যায় বলে সমস্যা হয়েছে। তোমার দেশ- যুক্তরাষ্ট্রেও এটা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও মানেননি।”
ফারুক খান বলেন, “আমরা বলেছি, বাংলাদেশে নির্বাচন সুষ্ঠু হয় যখন সব দলই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। নির্বাচন নিয়ে তখনই প্রশ্ন ওঠে যখন বিএনপি বা তার সমমনা দলগুলো আসে না এবং না এসে যদি বলে নির্বাচনকে প্রতিহত করব, তখনই গোলমাল হয়। আমরা বলেছি বিএনপি নির্বাচনে এলে আমাদের নির্বাচন নিয়ে অনেক সমস্যা দূর হতে পারে।”
ফারুক খান বলেন, “আমরা আশা প্রকাশ করেছি, আগামী নির্বাচনে বিএনপি আসবে। নির্বাচন নিয়ে তাদের কোনো অবজারভেশন থাকে বা নির্বাচন ব্যবস্থাকে উন্নত করা নিয়ে যাদের কোনো সাজেশন থাকলে নির্বাচন কমিশনের কাছে যেতে পারে। তারপর ইসি সরকারের সাথে আলোচনা করবে- এই বিষয়গুলো তাদের দরকার।
“আমাদের সংবিধানের ভেতরে আলোচনার অনেক সুযোগও আছে। বিএনপি যদি বলে তারা নির্বাচনে যাবে, তাহলে তো কথার কিছু নেই। কিন্তু তারা বলে নির্বাচনে যাবে না, প্রতিহত করবে। তখন তো আলোচনার কিছু থাকে না।”
সংসদীয় কমিটি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের ৫০ বছরের সম্পর্ক, র্যাবের উপর দেশটির নিষেধাজ্ঞা, বাংলাদেশের শ্রমিকদের সমস্যা ও আগামী নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করে।
এই সফরের আগে পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানও যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি সফরে যান।
বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনের বৈঠকে এই তিনটি সফর নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
ফারুক খান বলেন, “আমাদের নির্বাচন, র্যাবের নিষেধাজ্ঞা, লেবার সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই আলোচনার ফলাফল হয়তো পরে দেখা যাবে। তবে আমাদের মনে হয়েছে সন্তুষ্ট হয়েছেন।”
তিনি জানান, বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত দেওয়ার দাবি তারা জানিয়ে এসেছেন। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে যে এ ব্যাপারে ‘কাজ চলছে’।
ফারুক খানের সভাপতিত্বে এই বৈঠকে কমিটির সদস্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, নুরুল ইসলাম নাহিদ, গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স, আব্দুল মজিদ খান, হাবিবে মিল্লাত, নাহিম রাজ্জাক, নাবিল আহমেদ এবং নিজাম উদ্দিন জলিল (জন) অংশ নেন।