সরকার ‘বিব্রত’ হওয়ায় তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে মুরাদ হাসানকে পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে ওই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, কিছুদিন ধরেই কনিষ্ঠ সহকর্মীর মধ্যে কিছু ‘পরিবর্তন’ তিনি টের পাচ্ছিলেন।
Published : 07 Dec 2021, 03:11 PM
অডিও কেলেঙ্কারির জেরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে মুরাদ হাসান মঙ্গলবার দুপুরে পদত্যাগপত্র পাঠানোর পর সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসে নিজের এই পর্যবেক্ষণের কথা জানান হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, “দেখুন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে ডা. মুরাদ হাসান আমাকে সব সময় সহযোগিতা করে এসেছেন। গত কয়েক মাস ধরে তার মধ্যে আমি কিছুটা পরিবর্তন লক্ষ্য করেছি। এবং তার কিছু বক্তব্য, কিছু ঘটনা আসলে সরকার এবং দলকে বিব্রত করেছে। সেই কারণেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাকে পদত্যাগ করার জন্য বলেছেন।”
সে অনুযায়ী মুরাদ হাসান তার স্বাক্ষর করা পদত্যাগপত্র মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়ে দিয়েছেন বলেও তথ্য দেন তথ্যমন্ত্রী।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নাতনিকে নিয়ে ‘নারীবিদ্বেষী’ মন্তব্য করে সম্প্রতি বিএনপি নেতাদের সমালোচনায় পড়েন মুরাদ হাসান।
এরপর একটি টেলিফোন আলাপের অডিও ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে একজন অভিনেত্রীর সঙ্গে অশালীন ভাষায় কথা বলতে এবং হুমকি দিতে শোনা যায় এক ব্যক্তিকে। বলা হচ্ছে, ওই ব্যক্তি মুরাদ হাসান।
এ নিয়ে তুমুল আলোচনার মধ্যেই সোমবার আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান, মুরাদকে পদত্যাগ করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
হাছান মাহমুদ বলেন, “পুরো বিষয়টা আসলে দুঃখজনক। আমার কাছে মনে হয়েছে তিনি আগে যেমন ছিলেন, গত তিন মাস ধরে একটু পরিবর্তন আমার কাছে মনে হয়েছিল। বিভিন্ন ঘটনা ও কর্মকাণ্ডে আমার সেটি মনে হচ্ছিল। তবে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে আমাকের কাজে সব সময় সহযোগিতা করেছেন।”
উত্তরে হাছান মাহমুদ বলেন, “আমার কাছে পরিবর্তন মনে হয়েছে তিনি আগে যেমন ছিলেন তার চেয়ে ভিন্ন মনে হয়েছে। এটি আমার পারসোনাল অবজারভেশন। এটা তো আমি সবিস্তারে বলতে পারব না, এটা অনুভবের বিষয়। সেটি সেভাবে এখানে প্রকাশ করতে পারব না।”
মুরাদ হাসানের মধ্যে কোনো ধরনের ‘অস্থিরতা’ দেখেছেন কিনা প্রশ্ন করলে মন্ত্রী বলেন, “আমি তো আসলে ডাক্তার নই, আমি ডাক্তার হলে হয়তো বলতে পারতাম এটা কী। আমি ডাক্তার নই।”
চিকিৎসাশাস্ত্রের ডিগ্রিধারী মুরাদ হাসান জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী, মেস্টা ও তিতপল্যা) আসনের এমপি। নিজের এলাকা জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের ‘স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক’ তিনি। ইতোমধ্যে দল থেকেও তার বহিষ্কারের দাবি উঠেছে।
এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, “জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগ বলতে পারবে বা তারা সিদ্ধান্ত নেবে। আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্য পদের ব্যাপারে… দলের সংবিধান অনুসারে কারো নৈতিকস্খলনজনিত কারণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে কাউকে পদত্যাগ করতে বলতে পারেন। দলের বিষয়টি বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”