সহিংস আন্দোলন হলে ‘দাঁতভাঙা জবাব’ দেওয়া হবে বলে বিএনপিকে হুঁশিয়ার করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
Published : 26 Sep 2021, 05:50 PM
বিএনপি নেতাদের মুখে এক দফার আন্দোলনের কথার পরিপ্রেক্ষিতে রোববার আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্যে এই হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, “আজকে সিরিজ বৈঠক করছেন, সিরিজ বৈঠক তো নয়, ষড়যন্ত্র বৈঠক। আবারও জ্বালাও-পোড়াও ইচ্ছা বোধ হয় আপনাদের আছে। সেই দুরভিসন্ধি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন।
“একটি কথা মনে রাখবেন, এবার যদি কোনোপ্রকার সহিংসতার আশ্রয় নেন, দেশে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন, শেখ হাসিনার এই অর্জন, অনন্য সাফল্য নষ্ট করতে চান, তাহলে জনগণকে সঙ্গে দিয়ে তার দাঁতভাঙা জবাব দিতে প্রস্তুত।”
প্রধানমন্ত্রীর জাতিসংঘ সফরে ‘কোনো অর্জন নেই’ বলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “ফখরুল সাহেব দুনিয়ার কোনো খবর রাখেন না। জাতিসংঘের অধিবেশনে প্রত্যেকটি ফোরামের বক্তব্য, মূল অধিবেশনে শেখ হাসিনার বক্তব্য সারাবিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে। বাংলাদেশের মর্যাদাকে শেখ হাসিনা নতুন মাত্রায় উন্নীত করেছেন।
“জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন, টিকা বৈষম্য নিয়ে কথা বলেছেন। সারাদুনিয়া আজকে মুগ্ধ। এটা কি আপনি শোনেননি? নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকাটি পড়েননি। নিউ ইয়র্ক টাইমস আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে বলছে, দারিদ্র্যের ব্যাপারে কী করবেন, বাংলাদেশের দিকে তাকান, শেখ হাসিনার দিকে তাকান।”
কাদের বলেন, “ফখরুল সাহেব বলেছেন, রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে সরকার কিছু বলেনি। রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের নিজেদের সমস্যা সঙ্কট আছে, এর ভেতরেও এতদিন ধরে আমরা ১১ লক্ষ মিয়ানমারের নাগরিকদের জায়গা-আশ্রয়-খাবার দিচ্ছি। এই সমস্যা সমাধানে বিশ্বের বড় দেশগুলো আমাদের জন্য কিছুই করেনি। সাহস করে বঙ্গবন্ধুকন্যা এই সত্য উত্থাপন করেছেন।”
“প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবারের জাতিসংঘে ভূমিকা, তার সাহসিকতা, মানবিকতা, দূরদর্শিতার যে প্রশংসা হয়েছে, সেই প্রশংসার ফলে বাংলাদেশের মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে। আর আপনারা সমালোচনা আর বিদ্বেষমূলক অপপ্রচার করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে আরও একধাপ নিচে নেমে গেছেন,” বলেন কাদের।
শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ‘মানবতার আলোকবর্তিতা দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ উপকমিটি।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বর প্রশংসা করে কাদের বলেন, “বঙ্গবন্ধুকন্যা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে গণতন্ত্রকে শৃঙ্খলমুক্ত করতে আপসহীন নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিনি মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধের বিচার করে, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেছেন। তিনি এসেছিলেন বলেই বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশ। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় দেশের নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন।”
সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বলেন, “শেখ হাসিনা নিজের জীবনের মায়া ত্যাগ করে আলোকবর্তিতা হয়ে দেশকে পথ দেখাচ্ছেন।”
দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ বলেন, “শেখ হাসিনা নেতৃত্বে উন্নয়ন-অগ্রগতি বিএনপি সহ্য করতে পারে না। তা প্রশ্নবিদ্ধ করতে তারা নানা ধরনের মিথ্যাচার করে, মিথ্য তথ্য দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করতে চেষ্টা করছে। এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।”
মতিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে এই সভায় দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী বক্তব্য রাখেন।