করোনাভাইরাস মহামারী ও বন্যায় দেশে ‘অর্থনৈতিক স্থবিরতা’ রাজনৈতিক ‘অস্থিরতা’ ডেকে আনতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের।
Published : 26 Aug 2020, 11:57 PM
সেজন্য সরকারকে ‘জাতীয় ঐক্য’ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন, তেমন উদ্যোগ নেওয়া হলে জাতীয় পার্টি তাতে ‘সব ধরনের’ সহযোগিতা করবে।
বুধবার দুপুরে বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে মানিকগঞ্জ জেলার নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় জি এম কাদের এ কথা বলেন।
তাকে উদ্ধৃত করে দলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “মহামারী করোনা এবং বন্যার কারণে দেশে অর্থনৈতিক স্থবিরতা সৃষ্টি হয়েছে। অনেক মানুষ বেকার হয়েছে, অনেকেই চাকরি হারিয়েছে। তাই দেশের অর্থনৈতিক স্থবিরতায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে। জনসাধারণের জীবন-জীবিকা অনিশ্চিত হতে পারে।
“এমন অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে কোনো অপশক্তি যেন ফায়দা লুটতে না পরে সে জন্য জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে। এতে সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে। আমরা সরকারকে সকল ধরনের সহায়তা করতে প্রস্তুত আছি।”
করোনাভাইরাস সঙ্কটের মধ্যে বিশ্বে প্রায় আড়াই কোটি মানুষ চাকরি হারাতে পারে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)।
এই সঙ্কট ২০২০ সালে বিশ্বের অর্থনীতিকে ৩ শতাংশ ছোট করে আনবে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সংস্থাটি বলছে, ১৯৩০ এর দশকের মহামন্দার পর এমন সঙ্কট বিশ্ব আর দেখেনি।
বাংলাদেশের শ্রম বাজারেও করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়েছে। আর্থিক টানাপড়েনে অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মী ছাঁটাই করছে, বেকার হয়ে গ্রামের পথে মিছিলের মুখ বাড়ছে।
মানিকগঞ্জ জেলার নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়ে জি এম কাদের বলেন, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ৩০০ আসনেই প্রার্থী দিতে চায়।
“আগামী নির্বাচনে তিনশো আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রস্তুতি নিয়েই জাতীয় পার্টি এগিয়ে যাচ্ছে। নির্বাচনের মাধ্যমে গণমানুষের কাছে যাওয়া যায়, তাই জাতীয় পার্টি সকল নির্বাচনে অংশ নিয়ে পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আদর্শ ও কর্মসূচি তুলে ধরবে।”
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “মানুষের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মুক্তি দিতেই জাতীয় পার্টির রাজনীতি। আমরা সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করব। আমরাই দেশের মানুষকে সুশাসন দেব। তাই আগামী দিনের রাজনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবেলায় জাতীয় পার্টিকে আরো শক্তিশালী করতে হবে।”
সাবেক সামরিক শাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ছোট ভাই জি এম কাদের বলেন, “দেশের মানুষ আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির রাজনীতি এবং রাষ্ট্র পরিচালনার সাফল্য বিচার বিশ্লেষণ করছে। জাতীয় পার্টির রাষ্ট্র পরিচালনায় খুন, গুম, টেন্ডারবাজি ও দলবাজি নেই। তাই আগামী দিনে জাতীয় পার্টির উজ্জ্বল ভবিষ্যত অপেক্ষা করছে। “
জাতীয় পার্টি মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, “দেশের মানুষ পরিবর্তন চায়, পরিবর্তনের জন্য দেশের মানুষ উন্মুখ হয়ে আছে। দেশের ৬৫ ভাগ নতুন প্রজন্মের কাছে পল্লীবন্ধুর আদর্শ পৌঁছে দিয়ে দেশ থেকে খুন, গুম, সন্ত্রাস ও দুর্নীতি চিরতরে দূর করব।”
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মোহাম্মদ আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে পার্টির কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য আজম খান, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য জহিরুল আলম রুবেল, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু বক্তৃতা করেন।