নির্বাচিত ঘোষিত হলেও ভোটের হার কম হওয়ায় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে নবনির্বাচিত দুই মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস ও আতিকুল ইসলামকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা।
Published : 05 Feb 2020, 11:42 PM
সিটি ভোটে অনিয়মের প্রতিবাদে বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এই আহ্বান জানানো হয়।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক দুই মেয়রকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনাদের একজন পেয়েছেন ১৫ শতাংশ, আরেকজন ১৭ শতাংশ ভোট (মোট ভোটের)। তার মানে ঢাকার ৮৫ শতাংশ ভোটারের কোনো প্রতিনিধি নাই।
“যদি আপনাদের দুজনের ন্যূনতম লজ্জা থাকে, নীতি নৈতিকতাবোধ থাকে, তাহলে পদত্যাগ করুন।”
নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “ভোটের আগে নির্বাচন নিয়ে কত অভিযোগ গেল নির্বাচন কমিশনে, অথচ তারা একটি অভিযোগও বিবেচনা করে নাই। এই ঠুঁটো জগন্নাথ নির্বাচন কমিশনকে বলব, ভোটার ছাড়া এই তামাশার ভোট ভোট খেলা বন্ধ করুন।”
সিটি ভোটে প্রায় ১০০ কোটি টাকার মতো খরচ হয়েছে বলে নির্বাচন কমিশন যে হিসাব দেখিয়েছে, তা ‘রাষ্ট্রীয় অপচয়’ বলে মনে করেন বাম নেতা সাইফুল।
বাম জোটের নেতারা বলেন, বিগত দুই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ধারাবাহিকতায় এবার ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের ভোটাধিকার ‘হরণ করেছে’।
সমাবেশে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম বলেন, “আমরা যেভাবে এরশাদের পতন ঘটিয়ে মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে এনেছিলাম, ঠিক সেভাবে আমরা আওয়ামী লীগের পতন ঘটিয়ে এবারও জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনব।
“তবে এই লড়াই হবে সংঘাতময়। ভোটাধিকার ফিরে পাওয়ার লড়াইয়ে রাজপথে রক্ত ঝরবে। আজ সেই জায়গায় চলে গেছে দেশ।”
আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের ভোটাধিকার ‘পানির মতো গিলে খেয়ে’ এখন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড দিয়ে জনগণকে ‘ভোলাতে’ চাইছে বলেও অভিযোগ করেন সিপিবি নেতা।
তিনি বলেন, “আজকে সরকারের নেতারা বলছেন, আপনারা উন্নয়ন চান না কি গণতন্ত্র? আমি বলতে চাই, উন্নয়ন আর গণতন্ত্র কি সাংঘর্ষিক? আজ দেশে গণতন্ত্র নেই বলেই তো উন্নয়নের নামে অবাধ লুটপাট চলছে। গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠিয়ে দিয়ে যে উন্নয়ন চলছে, তাও বৈষম্যমূলক।”
সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক বলেন, “আমরা সাদেক আলী কমিশন, আজিজ কমিশনের নির্বাচন দেখেছি, এবার দেখলাম হুদা কমিশনের নির্বাচন। আমরা এরশাদকে বিশ্ববেহায়া বলি। কিন্তু এই হুদা কমিশন এবার তাকেও ছাপিয়ে গেছেন। তবে তাদের গডফাদার হল সরকার।”
বাম গণতান্ত্রিক জোটের নতুন সমন্বয়ক বজলুর রশীদ ফিরোজের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা নগর সমন্বয়ক ও বাসদ নেতা খালেকুজ্জামান লিপন, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদক কমরেড অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নেতা আলমগীর হোসেন দুলাল, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির শহীদুল ইসলাম সবুজ।