ছাত্রলীগের একাধিপত্য, দখলদারিত্ব ও সন্ত্রাসের কারণে বুয়েটছাত্র আবরার ফাহাদ প্রাণ হারিয়েছে মন্তব্য করে সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, এর পুনরাবৃত্তি রোধে বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি উন্মুক্ত করতে হবে।
Published : 09 Oct 2019, 04:42 PM
বুধবার রাজধানীর পুরানা পল্টনের মুক্তি ভবনে বাম গণতান্ত্রিক জোটের এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
ডাকসুর সাবেক ভিপি সেলিম বলেন, “শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে এখন একতরফা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে সরকারি দলের ছাত্র সংগঠন। বুয়েটের ঘটনা তারই নমুনা।
“সত্য কথা হল, বুয়েটে কোনো ছাত্র রাজনীতি নাই। ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ। এই নিষিদ্ধ থাকার কারণেই আবরার হত্যা হয়েছে।”
এই মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “সেখানে ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ফ্রন্টকে কাজ করতে দেওয়া হয়? ছাত্র ফেডারেশনকে কি কাজ করতে দেওয়া হয়? এগুলো হল আদর্শিক ছাত্র সংগঠন। তারা যে কাজটা করে, তা ছাত্র রাজনীতি।
“আর ছাত্রলীগ বা ছাত্রদল ... যখন বিএনপি ক্ষমতায় ছিল তারাও (ছাত্র দল) দখলদারিত্ব করেছে। তারা যে কর্মকাণ্ড চালায় তা ছাত্র রাজনীতি না। তা কায়েমী স্বার্থবাদীদের দখলদারিত্ব ও লুটপাট।”
আবরার হত্যার মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে হলে ‘সন্ত্রাসী ক্ষমতাকেন্দ্রীক রাজনীতি’ নিষিদ্ধ করে ‘ছাত্র রাজনীতিকে উন্মুক্ত করতে হবে’ হবে বলে মত দেন এক সময়ের ছাত্রনেতা, ডাকসুর সাবেক ভিপি সেলিম।
বাংলাদেশের স্বার্থ ঝুলন্ত রেখে ভারতের স্বার্থে চুক্তি
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্য সম্পাদিত চুক্তির প্রেক্ষিতে বাম জোটের এ সংবাদ সম্মেলনে সিপিবি সভাপতি বলেন, “ভারতের স্বার্থসংশ্লিষ্ট সকল ইস্যুতে চুক্তি সম্পাদন হলেও বাংলাদেশের স্বার্থগুলো পেন্ডিং রাখা হয়েছে। এতে করে বন্ধুত্ব রক্ষা করা যাবে না।
“তারা বলছে, হবে সুবিবেচনার সঙ্গে দেখছি। বাঙালকে আর হাই কোর্ট দেখাবেন না। এই এক তরফা সুবিধা নেওয়ার নীতি অনুসরণ করে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে কোনো দিনই বন্ধুত্ব রক্ষা করা সম্ভব না। সমস্ত বাংলাদেশের জনগণ এখন ভারতকে বৈরী শক্তি হিসেবে বিবেচনা করছে।”
সেলিম বলেন, “যে চুক্তি করে এসেছে তা বাংলাদেশের সর্বনাশ হবে। ভারত-বাংলাদেশের জনগণের ভেতরের বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার পায়ে কুঠারাঘাত করা হয়েছে। এই সুযোগ সাম্প্রদায়িক শক্তি জেগে উঠবে। ভারত তো সাম্প্রদায়িক শক্তি জেঁকে বসেছে এখন বাংলাদেশেও উঠার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
“এসব করা হচ্ছে কী জন্য? একটা প্রহসনমূলক তথাকথিত নির্বাচনের মাধ্যমে যে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে সেটাকে ঠিকিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে।”
সংবাদ সম্মেলনে বাম গণতান্ত্রিক জোটের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়ক আবদুস সাত্তার বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর এবারের ভারত সফরে সম্পাদিত চুক্তি, সমঝোতা স্মারক ও ঘোষণা একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের আত্মমর্যাদা সম্পন্ন জাতি হিসেবে অপমানজনক এবং এটা বাংলাদেশ সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির বহিঃপ্রকাশ।”
অন্যদের মধ্যে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদের নেতা বজলুর রশিদ ফিরোজ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু এসময় উপস্থিত ছিলেন।