এক যুগের বেশি ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মন খারাপ হলে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী মেয়ের পাঠানো এসএমএসে উজ্জীবিত হন তিনি।
Published : 29 Aug 2019, 09:11 PM
দলীয় নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করতে বৃহস্পতিবার এক আলোচনা সভায় তার একটি এসএমএস পড়ে শুনিয়েছেন তিনি।
কবি কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাসাস আয়োজিত ওই সভায় ফখরুল বলেন, “আমি যখনই একটু মন-টন খারাপ করি, তখন আমার মেয়ে ২-৩টা এসএমএস পাঠায়। আজকে সকালেই আমাকে একটা মেসেজ পাঠিয়েছে সে। আমি তা জানাতে চাই আপনাদের, এটা খুব দরকার।নেলসন ম্যান্ডেলার ছোট্ট একটা কথা সে কোড করে পাঠিয়েছে।
“দ্য গ্রেটেস্ট গ্লোরি ইন লিভিং লাইজ নট ইন নেভার ফলিং, বাট ইন রাইজিং এভরি টাইম উই ফল। অর্থাৎ আমরা যখন পড়ে যাই তখন উঠা দাঁড়ানোতেই হচ্ছে গ্লোরি (গৌরব)। আর কোনো দিন পড়ি না-এটার মধ্যে গ্লোরি নাই। আমরা পড়ছি আবার উঠে দাঁড়াতে হবে-এটার মধ্যেই আমাদের গ্লোরি।”
সরকারি কলেজের অর্থনীতির অধ্যাপক মির্জা ফখরুল আশির দশকের শেষ দিকে রাজনীতিতে আসেন। ঠাকুরগাঁওয়ে পৌরসভার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে আসা ফখরুল পরে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।
২০১১ সালে বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন মারা যাওয়ার পর ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হন মির্জা ফখরুল। এর পাঁচ বছর পর ২০১৬ সালে দলের ষষ্ঠ কাউন্সিলে তাকে মহাসচিব করেন খালেদা জিয়া।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাবন্দি এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে থাকায় ৭১ বছর বয়সী ফখরুলকেই দল চালাতে হচ্ছে।
বক্তব্যে দলীয় নেতাকর্মীদের আরও তৎপর হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “আজকে চতুর্দিকে অন্ধকারে আমরা আক্রান্ত হয়েছি, আমাদের জাতি সত্তা আক্রান্ত হচ্ছে। একে রক্ষা করতে হলে, আমাদের মাথা তুলে দাঁড়াতে হলে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে এবং আমাদের জনগনকে সংগঠিত করতে হবে, গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে, দেশকে উদ্ধার করতে হবে।”
ক্ষমতাসীনদের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আজকে আওয়ামী লীগ জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। আজকের আওয়ামী লীগ তো সেই আওয়ামী লীগ নেই, যে আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে সংগ্রাম করেছে গণতন্ত্রের জন্য, সেই আওয়ামী লীগ এখন নেই।
“এই আওয়ামী লীগ হচ্ছে সেই দল যাদের নিজেদের কোনো কিছুই নেই। তারা ফ্যাসিস্ট, গণবিরোধী, মানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে এবং তাদের হাত আজকে মানুষের রক্তে রঞ্জিত।”
এর থেকে বেরিয়ে আসতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মতো শক্তি, সাহস ও মনোবল দরকার মন্তব্য করে তিনি বলেন, “শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যিনি ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণা করেছিলেন তখন বেশিরভাগ লোকই কিন্তু পালিয়ে গিয়েছিলেন, ছিল না। তিনি (জিয়া) স্বাধীনতা যুদ্ধ ঘোষণা করে গোটা জাতিকে যুদ্ধে নামিয়ে দিয়েছিলেন।
“তাকে মনে করে, জাতীয় কবি নজরুল ইসলামের কবিতার কথাগুলো মনে করে, আজকে আমরা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে চাই, গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে চাই। তাহলে অবশ্যই আমাদের সংগ্রামের দিকে যেতে হবে, আন্দোলনের দিকে যেতে হবে।”
জাসাসের সভাপতি অধ্যাপক মামুন আহমেদের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সম্পাদক জাকির হোসেন রোকনের পরিচালনায় এই আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুল হাই শিকদার, জাসাসের সাবেক সভাপতি রেজাবুদ্দৌলা চৌধুরী, মো. নাসিম আহমেদ, জাসাসের সাধারণ সম্পাদক হেলাল খান, কেন্দ্রীয় নেতা এহসানুল হক চৌধুরী, সানাউল হক, শাহরিয়ার ইসলাম শায়লা, জাহাঙ্গীর আলম রিপন, রফিকুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।