ইংরেজি দৈনিক বাংলাদেশ অবজারভারে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন নিয়ে এর সম্পাদক প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরীর তীব্র সমালোচনা করেছেন শামীম ওসমান।
Published : 25 Jan 2017, 09:27 PM
ইকবাল সোবহান জামায়াতের গুরু যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেওয়ার পক্ষে কাজ করেছিলেন দাবি করে তার রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আওয়ামী লীগের এই সাংসদ।
গণমাধ্যমের সমালোচনা থেকে সাংসদের ‘রক্ষায়’ আইন করারও দাবি জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার সন্ধ্যায় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে দাবি করেন নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী শামীম ওসমান।
তিনি বলেন, “দলের লোক, সুযোগ-সুবিধা নেন। উপদেষ্টা হলেন তার পত্রিকায় বলা হল- এমপিরা ড্রাগ ডিলার।
“১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমানকে যখন নারায়ণগঞ্জে ঢুকতে দেইনি, এই লোক তখন কোথায় ছিলেন। এই ভদ্রলোক গোলাম আযমের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দিতে সই করেছিলেন। জামাতের প্রকাশিত বইয়ে লেখা আছে। কে এই লোক, আমাদের মধ্যে ঘেরাফেরা করে? ভদ্রলোক আমাদের কৃপায় টিকে আছেন। ইকবাল সোবহান চৌধুরী।”
নারায়ণগঞ্জে সাতখুনের সংবাদ প্রকাশ নিয়ে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকার সমালোচনা করে শামীম ওসমান বলেন, “নারায়ণগঞ্জে সাত খুন মামলার পর প্রথম আলো লিখল, আমি যুক্ত। আমি নোটিশ পাঠিয়েছিলাম। তথ্য সচিবকে লিখেছিলাম। ৩৮ মাস বসে ছিলাম। আজ রায় হয়েছে। উনারা কী বলবেন?”
আওয়ামী লীগের যেসব নেতা শেখ হাসিনার বিষয়ে ‘বিন্দুমাত্র আপস করবেন না’ তাদের চরিত্র হনন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
“শুনেছি একশ এমপির তালিকা করা হয়েছে। এমন অবস্থা করবে যাতে তারা লোকের সামনে যেতে না পারে। দলের ভেতরেও ষড়যন্ত্র হচ্ছে। খন্দকার মোশতাকওতো এই দলের লোক ছিল।”
দেশের ৯০ ভাগ সাংবাদিক ‘ভালো’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “কিন্তু এদের জন্য সবার উপর অপবাদ পড়ছে।”
গণমাধ্যমের ‘পরিকল্পিত চরিত্র হনন’ থেকে এমপিদের সুরক্ষা দিতে এসময় সভাপতির আসনে বসা ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন শামীম।
তিনি বলেন, “আপনি (ডেপুটি স্পিকার) আমার বক্তব্যের পরে কিছু বলবেন। আমরা যদি কিছু করে থাকি তার তদন্ত হোক। আপনি তাদের (গণমাধ্যম) ডাকেন। বলেন- এই এমপির বিরুদ্ধে কী লেখা হয়েছে? প্রমাণ থাকলে দাও। আইন করেন। ওরা খেলায় নেমে গেছে।
“আপনি আমাদের প্রটেকশন দেন। না হয় ছেড়ে দেন। সাধারণ মানুষ করে দেন। আমাদের রক্তের দাম নেই, নর্দমার পানি। বুঝিয়ে দেব সাধারণ মানুষের ক্ষমতা- লক্ষ লোক নিয়ে ওদের অফিসের সামনে যাব।”
গাইবান্ধার সংসদ সদস্য মনজুরুল ইসলাম লিটন নিহত হওয়ার ঘটনা উল্লেখ করে শামীম ওসমান বলেন, “আমার বন্ধু লিটন নিহত হয়েছে। আমার মনে হয় সে কষ্ট পেয়েছে এজন্য যে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার হয়েছে। আমিও ভিকটিম।”
প্রথমে শামীম ওসমানকে ২০ মিনিট সময় দেওয়া হলেও দুই দফায় আরও ১০ মিনিট বাড়িয়ে দেন ডেপুটি স্পিকার।
পরে ডেপুটি স্পিকার বলেন, “মাননীয় সদস্য আপনি আমাকে উদ্দেশ্য করে কিছু বলেছেন। এই সংসদে স্পিকারের চেয়ারে বসে আমি আপনার প্রশ্নের উত্তর দিতে পারব না। আমি অক্ষম।
“আপনি সাংবাদিকতা নিয়ে কিছু বলেছেন। এই বিষয় নিয়ে অন্য বিধিতে নোটিশ দিলে আমি চেয়ারে থাকলে রুলিং দেব।”