স্বাধীনতা পরবর্তীকালে জাসদের ভূমিকা গণতন্ত্রবিরোধী ছিল দাবি করে দলটির বর্তমান সভাপতি হাসানুল হক ইনুকে গণতন্ত্র নিয়ে কোনো উপদেশ না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বিএনপি।
Published : 24 Aug 2015, 06:21 PM
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ক্রমাগত সমালোচনা করে আসা তথ্যমন্ত্রী ইনুর বক্তব্য নিয়ে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই আহ্বান জানান দলটির মুখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপন।
খালেদার এক বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তথ্যমন্ত্রী সর্বশেষ গত রোববার বলেছিলেন, “আগুন সন্ত্রাসী- নাশকতাকারীদের নিয়ে পেট্রোল বোমা ও গ্রেনেড ছুড়তে ছুড়তে বেগম জিয়া নিজেই গণতন্ত্রের চৌকাঠের ওপারে চলে গেছেন।”
এর প্রতিক্রিয়ায় রিপন বলেন, “এখন ইনু গণতন্ত্রের ছবক দেন। এটা জাতির জন্য পরিহাস। ইনু সাহেবকে আমরা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, তিনি যেন মেহেরবানী করে জাতিকে গণতন্ত্রের ছবক না দেন। কারণ তারা সবসময় গণতন্ত্রের শত্রু ছিলেন, গণতন্ত্রের দুশমন ছিলেন।”
১৯৭২-৭৫ সালে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে আসা ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’ গণবাহিনী ও তাদের রাজনৈতিক সংগঠন জাসদকে দায়ী করে এই বক্তব্য দেন রিপন।
জাসদকে নিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের বক্তব্য তুলে ধরে বিএনপি নেতা বলেন, “আপনাদের (জাসদ) অপকর্ম সম্পর্কে শুধু এখন আমরাই বলি না, শাসক দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে আপনাদের অপকর্মের কথা প্রতিদিন উচ্চারিত হচ্ছে।”
আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে জাসদ গঠনের পর বঙ্গবন্ধু সরকারের চরম বিরোধিতা ছিল দলটির। বর্তমানে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটে থেকে সরকারেও রয়েছে দলটি। দলের কার্যকরি সভাপতি মঈনুদ্দিন খান বাদল বলছেন, তারা এখন ওই সময়ের ভুলের ‘কাফফারা’ দিচ্ছেন।
রিপন বলেন, “হাসানুল হক ইনুকে জবাব দিতে হবে, ১৯৭২-৭৫ সালে আপনাদের ভূমিকা কী ছিল? শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডে আপনার কী ভূমিকা ছিল? আপনার গণবাহিনীর কী ভূমিকা ছিল? আপনার দলের কী ভূমিকা ছিল? এ বিষয়গুলোতে ইনু সাহেবদের অবস্থান জাতির কাছে স্পষ্ট করা উচিৎ।
“যে অভিযোগ জাসদের বিরুদ্ধে উঠেছে, যে অভিযোগ গণবাহিনীর বিরুদ্ধে উঠেছে, যে অভিযোগ হাসানুল হক ইনুর দিকে অঙ্গুলি প্রদর্শন করা হচ্ছে, এর জবাব দিতে না পারলে তার পদত্যাগ করা বাঞ্ছনীয়।”
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুকে ‘পরগাছা’ মন্ত্রী আখ্যায়িত করে তার বর্তমান ভূমিকা নিয়ে রিপন বলেন, “শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি জাসদের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল নেতিবাচক। তারা এখন কথায় কথায় বঙ্গবন্ধু, জাতির পিতা বলতে বলতে মুখে ফেনা তুলে ফেলছেন।
“কারণ একটাই, তারা (ইনুরা) গণধিকৃত ও গণবিচ্ছিন্ন। তারা মনে করছেন, শুধু বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুটো কথা যদি বলা যায়, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা যায়, তাহলে বোধহয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুব খুশি হবেন। তার মন্ত্রিত্ব রাখবেন।”
নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে রিপনের সঙ্গে ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মাহমুদুল হাসান, এএসএম আবদুল হালিম, আইন বিষয়ক সম্পাদক জিয়াউর রহমান খান, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, আবদুল লতিফ জনি, শামীমুর রহমান শামীম, শাহ নুরুল কবির শাহিন, শাহানা আখতার সানু।