জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা বাদীকে জেরা শেষ করার পর তাকে জেরা শুরু করেছেন এ মামলার অপর আসামি জিয়াউল হক মুন্নার আইনজীবীরা।
Published : 03 Aug 2015, 03:23 PM
সোমবার শুনানি শেষে ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবু আহমেদ জমাদার আগামী ১০ অগাস্ট মামলার পরবর্তী দিন রেখেছেন।
ওইদিন জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার শুনানির জন্যও তারিখ রেখেছেন বিচারক।
বকশিবাজারে আলিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন কারা অধিদপ্তর প্যারেড মাঠে বিশেষ এজলাসে সোয়া পাঁচ কোটি টাকা দুর্নীতির এ দুই মামলার বিচার চলছে।
হাজিরার দিন থাকায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সকাল সোয়া ১০টার দিকে গুলশানের বাসা থেকে আদালতে আসেন।
তার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন এদিন জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট মামলার বাদী দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশিদকে তৃতীয় দিনের মত জেরা করেন। দাতব্য ট্রাস্টের হিসাবে লেনদেন, ট্রাস্টে টাকা জমা দেওয়া এবং ট্রাস্টের জমি নিয়ে প্রশ্ন করা হয় তাকে।
পরে আসামি জিয়াউল হক মুন্নার আইনজীবীরা বাদীকে জেরা শুরু করেন।
অন্যদিকে জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বাদীর জবানবন্দি বাতিল করে নতুন করে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য উচ্চ আদালতে গিয়েছিলেন খালেদা। কিন্তু গত ৬ জুলাই হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ তা খারিজ করে দেয়।
নথিপত্র না পাওয়ায় ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারেননি জানিয়ে এ মামলার শুনানির আগে সোমবার সময়ের আবেদন করেন খন্দকার মাহবুব।
পাশাপাশি ২৬ অগাস্ট বার কাউন্সিল নির্বাচনের আগে ব্যস্ততার কথা তুলে ধরে তার পরে শুনানির তারিখ রাখতে আদালতকে অনুরোধ করেন বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব।
এ সময় বিচারক বলেন, “প্রধান বিচারপতি সব মামলা তড়াতাড়ি শেষ করতে বলেছে এবং জেরা শুরু হলে নিয়ম অনুযায়ী তা শেষ করতে হয়। আমি এক সপ্তাহ সময় দিতে পারি।”
পরে তিনি ১০ অগাস্ট মামলার পরবর্তী দিন রেখে শুনানি মুলতবি করেন।
এদিন বিচারক মামলায় জেরার অংশ হবহু গণমাধ্যমে প্রকাশ না করার জন্য সাংবাদিকদের অনুরোধ করার পাশাপাশি সংবাদ প্রকাশে নৈতিকতা মানার কথা বলেন।
খালেদার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব বলেন, “আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলাসহ উপমহাদেশের বড় বড় গুরুত্বপূর্ণ মামলার কার্যক্রম হুবহু গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সুতরাং এ মামলার সংবাদ প্রকাশ করলে অসুবিধা কোথায়। স্বচ্ছতার জন্য সব সংবাদই প্রকাশ করা জরুরি।”
এ বিষয়ে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল পরে বলেন, “বঙ্গবন্ধু হত্যা, জেল হত্যা, সেরনিয়াবাত হত্যা মামলাসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্পর্শকাতর মামলার সংবাদ হুবহু গণমাধ্যমে ছাপা হয়েছে। তাতে কোনো সমস্যা হয়নি বা বিচারক বাধা দেননি। তবে এখন বিচারক কেন এ কথা বলেছেন সে উত্তর আমার জানা নেই।”
২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট এবং ২০১০ সালের ৮ অগাস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা দুটি দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন। মামলা দুটিতে প্রধান আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।
এতিমখানা ট্রাস্ট মামলায় এতিমদের সহায়তার জন্য একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা ২ কোটি ৭১ লাখ ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ এবং দাতব্য ট্রাস্ট মামলায় অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ করেছে দুদক।
বিএনপি দাবি করে আসছে, তাদের চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এই মামলা করা হয়েছে এবং তা এগিয়ে নিচ্ছে বর্তমান সরকার।