“তারা হরতাল ডেকে নিজেদেরকে হাস্যকর করেছে,” বলেন তথ্যমন্ত্রী।
Published : 05 Jan 2024, 07:53 PM
বিএনপি ভোটের দিন সন্ত্রাস-নৈরাজ্যের চক্রান্ত করছে দাবি করে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর থাকায় তারা নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পারবে না।
চট্টগ্রাম-৭ আসনের (রাঙ্গুনিয়া ও বোয়ালখালী আংশিক) নৌকার এ প্রার্থী শুক্রবার সন্ধ্যায় রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় এই মন্তব্য করেন।
হাছান মাহমুদ বলেছেন, “ভোটের দিন মোটরসাইকেলে এসে পেট্রোল বোমা ও বোমা নিক্ষেপ করে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টির পরিকল্পনা করেছে বিএনপি। তাদের এই চক্রান্ত ও পরিকল্পনা সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এবং র্যাব-পুলিশসহ প্রত্যেকটি বাহিনী ইতিমধ্যেই জেনে গেছে।
“সেই কারণে তাদের পক্ষে এগুলো বাস্তবায়ন করা কখনো সম্ভবপর হবে না। একজন বাহিনী প্রধান, সরকারের তথ্যমন্ত্রী হিসেবে তাদের এই পরিকল্পনার কথা আজকে আমাকে অবহিত করেছেন।”
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন বর্জন করা বিএনপি ৭ জানুয়ারি ভোট ঘিরে শনিবার সকাল ৬টা থেকে ৪৮ ঘণ্টা হরতালের ডাক দিয়েছে।
এ কর্মসূচি প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “বিএনপি নাকি আবার দু’দিনের হরতাল ডেকেছে, তারা হরতালকে অকেজো রাজনৈতিক অস্ত্র বানিয়ে দিয়েছে। গতকাল উত্তরবঙ্গে তারা দুটি স্কুল ঘর পুড়িয়েছে। যারা সাধারণ মানুষের উপর পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে; অকারণে হরতাল ডাকে, মানুষকে ভীত সন্ত্রস্ত করার অপচেষ্টা চালায়, তারা জনগণের প্রতিপক্ষ।
“মূলত বিএনপি এখন জনগণের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জনগণ যেভাবে জেগে উঠেছে, তাতে বিএনপির ইতিপূর্বের পরিকল্পনা যেভাবে ভেস্তে গেছে, এবারকার পরিকল্পনাও সেইভাবে ভেস্তে যাবে।”
দুষ্কৃতিকারীদের বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, “বিএনপি আগেও হরতাল ডেকেছিল, কিন্তু দেশের মানুষ বিন্দুমাত্র সাড়া দেয়নি। বিএনপির এই হরতাল কে, কখন, কোন সময়ে ডাকে- কেউ জানে না। এ সমস্ত হরতাল ডেকে তারা নিজেদেরকে হাস্যকর করেছে। হরতাল একটি অকেজো রাজনৈতিক অস্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে।
“বিএনপির প্রাথমিক পরিকল্পনা ছিল নির্বাচনকে ভণ্ডুল করা। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর তারা পরিকল্পনা গ্রহণ করল, নির্বাচনের যে ডামাডোল, উৎসব ও আমেজ সেটি যেন দেশে সৃষ্টি না হয়। এরপর অগ্নিসন্ত্রাস চালিয়ে চেষ্টা করেছিল নির্বাচনি উৎসবকে ভণ্ডুল করার। তারা যখন দেখতে পেল নির্বাচন হয়ে যাচ্ছে, এজন্য তারা পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে বহু মানুষকে হত্যা করেছে। অনেক মানুষ আগুনের ঝলসে গেছে।”
তথ্যমন্ত্রী বলেন, “সর্বশেষ একজন মা তার শিশু সন্তানসহ বিএনপির ছোড়া পেট্রোল বোমায় পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেছে এবং সেই হৃদয়বিদারক মৃত্যু আল্লাহর আরশ কাঁপিয়ে দিয়েছে। বিএনপি যেভাবে নিরীহ মানুষের উপর পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ ও অগ্নিসন্ত্রাস করেছে, এতে তাদের উপর দেশের মানুষ নয় শুধু- মহান আল্লাহ তায়ালাও তাদের উপর নারাজ ও নাখোশ হয়ে গেছে।
“এগুলো করেও বিএনপি নির্বাচনের ডামাডোল, উৎসব ও আমেজকে থামাতে পারেনি। এরপর তারা এখন পিছু হটেছে। পিছু হটে বিএনপি এখন নির্বাচন ভণ্ডুল কিংবা প্রতিহত করবে- সেই শব্দগুলো আর ব্যবহার করছে না। এখন বলছে, তারা নির্বাচন পরিহার করার আহ্বান জানাচ্ছে। অর্থাৎ আগের অবস্থান থেকে তারা পিছু হটে গেছে।”
দেশে নির্বাচনকে ঘিরে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে মন্তব্য করে হাছান মাহমুদ বলেন, “আমাদের দেশে নির্বাচন একটি উৎসব, সেই উৎসব আজকে সারা দেশ জুড়ে বিরাজ করছে। সেই উৎসবের আমেজ অনেক এলাকার তুলনায় রাঙ্গুনিয়ায় অনেক বেশি। আগামী রোববার জনগণের অংশগ্রহণে দেশে সুষ্ঠু ও অবাধ একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
“আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ধস নামানো বিজয় হবে। এই বিজয়ের মাধ্যমে জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশের ইতিহাসে পরপর চতুর্থবার এবং পঞ্চমবারের মত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সরকার গঠন করবেন। আমরা সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছি।”
নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান ও উপজেলা চেয়ারম্যান স্বজন কুমার তালুকদারের সভাপতিত্বে সভায় সঞ্চালনা করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম তালুকদার।
অনুষ্ঠানে অণ্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কাশেম চিশতি, মেয়র শাহজাহান সিকদার, কামরুল ইসলাম চৌধুরী, ইদ্রিছ আজগর, নজরুল ইসলাম তালুকদার, ইফতেখার হোসেন বাবুল, আকতার হোসেন খান, আবদুল মোনাফ সিকদার।