ঢাকার বনানীর কাকলীতে মোমবাতি প্রজ্বালনের কর্মসূচির পর হামলার শিকার হন বিএনপির নেতারা।
Published : 17 Sep 2022, 08:43 PM
ঢাকার বনানীতে বিএনপির এক কর্মসূচি শেষে হামলায় আহত হয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতা সেলিমা রহমান, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, তাবিথ আউয়ালসহ কয়েকজন।
এর মধ্যে তাবিথ আউয়ালকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার মাথা থেকে রক্ত ঝরতে দেখা গেছে।
জ্বালানি তেল, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি এবং ভোলা ও নারায়ণগঞ্জের দলের তিন নেতা নিহত হওয়ার প্রতিবাদে রাজধানীতে মোমবাতি প্রজ্বালন কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল বিএনপি।
শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির উদ্যোগে বনানীর কাকলীতে মোমবাতি প্রজ্বালনের এই কর্মসূচি পালন করে। কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সড়কের এক পাশে মোমবাতি হাতে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন নেতা-কর্মীরা।
কর্মসূচি শেষে ফেরার পথে হামলা হয় জানিয়ে বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কর্মসূচি শেষ করে তাবিথ আউয়ালসহ নেতাকর্মীরা ফিরে যাওয়ার সময় পেছন থেকে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়।
“তাবিথসহ অনেকেই আহত হয়েছেন। তাবিথকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।”
বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য তাবিথ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ছিলেন।
হামলায় আহত দলটির স্থায়ী কমিটর সদস্য সেলিমা রহমান এবং কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব আলাল প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন বলে দলটির নেতারা জানান।
বিএনপির অভিযোগের বিষয়ে আওয়ামী লীগের কোনো প্রতিক্রিয়া তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।
পুলিশে যোগাযোগ করা হলে বনানী থানার ওসি নূরে আজম মিয়া ইঙ্গিত করেন, বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণেও হামলা হতে পারে।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিএনপির কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর তাদের ওপর হামলা হয়েছে বলে শুনেছি। কারা হামলা করল বিষয়টি খতিয়ে দেখা হয়েছে। তাদের নিজেদের কোন্দলে কোন ঘটনা ঘটল কী না সেটিও দেখা হচ্ছে।”
বনানীর এই কর্মসূচিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনও ছিলেন।
তিনি বক্তৃতায় বলেন, “দেশে আজ মানবাধিকার নাই, গণতন্ত্র হত্যা করা হয়েছে। দেশের অর্থনীতি আজকে ধ্বংসের কিনারায় চলে গেছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের নাভিঃশ্বাস উঠেছে। এসবের প্রতিবাদ জানাতে আমাদের এই নীরব প্রতিবাদী কর্মসূচি।”
মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, সদস্য সচিব আমিনুল হক, কেন্দ্রীয় নেতা শামা ওবায়েদ, নাজিম উদ্দিন আলম,শিরিন সুলতানা, এসএম জাহাঙ্গীর কর্মসূচিতে অংশ নেন।
নয়া পল্টনে দক্ষিণ বিএনপির কর্মসূচিতে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “ভোলায় আমাদের নুরে আলম, আবদুর রহিম ও নারায়ণগঞ্জের শাওন প্রধান হত্যার প্রতিবাদ জানাতে, জ্বালানি তেল ও দ্রব্যমূল্যে ঊধর্বগতির প্রতিবাদ জানাতে আমরা মোমবাতি প্রজ্বালন করছি। এই মোমবাতি প্রজ্বালন কর্মসূচি আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে।”
এতে মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, আবদুস সালাম আজাদ, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, ফজলুল হক মিলন উপস্থিত ছিলেন।
তাবিথকে দেখতে হাসপাতালে বিএনপি নেতারা
রাতে হামলার ঘটনা শুনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালামসহ নেতারা ইউনাইটেড হাসপাতালে আসেন। তারা তাবিথসহ আহতদের সঙ্গে কথা বলেন।
পরে সাংবাদিকদের কাছে ফখরুল অভিযোগ করেন, ‘‘অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে আমাদের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের ওপর আওয়ামী সন্ত্রাসীরা এই হামলা চালিয়েছে। সেলিমা রহমান, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শ্যামা ওবায়েদসহ মহিলা দলের বেশ কয়েকজন নেত্রী আহত হয়েছেন। আপনারা দেখেছেন কিভাবে ওরা হামলা চালিয়েছে।“
এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আজকে নোয়াখালী বেগমগঞ্জে আমাদের দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলুর ওপরও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে।“
বনানীতে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলার পর রাতে নয়া পল্টনে দলের নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ জানিয়ে মিছিল করে। মিছিলে নেতৃত্ব দেন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।