নাশকতায় যোগ নেই আন্দোলনের: গণতন্ত্র মঞ্চ

একদফার আন্দোলন নস্যাৎ করতে ট্রেনে নাশকতা চালানো হয়েছে বলে মনে করছেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা।

মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মঞ্চের নেতা গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, “আজ সকালে আমরা দেখলাম তেজগাঁওতে চলন্ত ট্রেনে আগুন দেয়া হয়েছে, সেখানে বেশ কয়েকজন মানুষ হতাহত হয়েছে আগুন পুড়ে।

“আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, এরকম নাশকতার সাথে এই চলমান আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক নেই। ওরা (সরকার) নাশকতা তৈরি করে আন্দোলনকে কালিমালিপ্ত করতে চায়, ওরা নাশকতা তৈরি করে আন্দোলনের ওপর ক্র্যাকডাউন করতে চায়।”

কোনো দমন-পীড়নে আন্দোলন ঠেকানো যাবে না হুঁশিয়ারি দিয়ে সাকি বলেন, “আপনাদের যদি সাহস থাকে ঠেকান, আমরা রাস্তায় নামব। আমাদের নীতির জন্য দেশপ্রেম নিয়ে তারা রাস্তায় নামবে। আপনাদের বাধায় আমরা ভয় পাই না।”

বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, “আজকে রাতে ট্রেনে যে নাশকতার ঘটনা ঘটেছে আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাই, আমরা প্রতিবাদ জানাই। বরাবরই আমরা বলেছি, আন্দোলনে আমরা জনগণের ওপর নির্ভর করি, কোনো সহিংসতা, কোনো উস্কানিতে আমরা পা দিতে চাই না।

“আমরা বলেছি, রাজনৈতিক প্রভাবের বাইরে প্রয়োজনে সমস্ত নাশকতার ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করুন, যারা দায়ী তাদেরকে গ্রেপ্তার করুন, তাদেরকে আইনের আওতায় আনুন।”

সরকারের এক দফা দাবি এবং সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রতিবাদে বেলা সাড়ে ১১টায় গণতন্ত্র মঞ্চ বিজয়নগর ও তোপখানা রোডে মিছিল করে। পরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে তারা।

‘জাপাকে সরকারের ভিক্ষা’

জোনায়েদ সাকি বলেন, “জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের সাহেব বললেন না, ভিক্ষার সিট নিয়ে আমি রাজনীতি করি না। কয়েক ঘণ্টার পরে আমরা দেখলাম ২৬ আসনে সমঝোতা করে নির্বাচনে গেছেন। জানাব জি এম কাদের সাহেব আপনাকে জাতির কাছে বলতে হবে, এই ২৬টি আসন কি জিনিস… এটা কি ভিক্ষা?

“উনারা চান এরকম আসন সমঝোতা বাকি বিরোধী দলও করুক। বিএনপি, গণতন্ত্র মঞ্চ বাকি বিরোধী দল নির্বাচনে আসলে এইরকম আসন সমঝোতা করে উনারা কিছু ভিক্ষা ছিটাবেন- এই হচ্ছে আওয়ামী লীগের গণতন্ত্র।”

বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক বলেন, “জাতীয় পার্টি আরেকবার প্রমাণ করল যে, এতদিন ধরে তারা যে কথা-বার্তা বলেছে, এই সরকারের অধীনে কোনো গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়,  গতকাল নিজেদের কথার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে, নিজেদের ফেলে দেয়া থুথুকে আবার মুখে নিয়ে সরকারের ছিঁটেফোটা আবার গ্রহণ করে ভিক্ষুকের মতন ২৫টা-২৬টা আসন নিয়ে এখন তারা নাকি নির্বাচনের যুদ্ধে আছে।”

রাজনৈতিক দলগুলোর সভা-সমাবেশের ওপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরোপিত নিষেধাজ্ঞ ‘বেআইনি ও অসংবিধানিক’ অভিহিত করে তা অনতিবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানান বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক।

নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সারের সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবদুর রাজ্জাক রাজার সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাংগঠনিক সমন্বয়ক ইমরান ইমন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

এছাড়া ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, গণঅধিকার পরিষদ, এলডিপি, লেবার পার্টি, গণফোরাম-পিপপলস পার্টি আলাদা আলাদাভাবে বিজয়নগর-তোপখানা রোডে মিছিল করে।