এনসিপিতে যুক্ত দলিত-হরিজন সম্প্রদায়ের উদ্যোগে এ ‘গণ-ইফতার’ হয়।
Published : 23 Mar 2025, 10:40 PM
বিদেশি শক্তি ধর্মীয় বিভাজন উসকে দিয়ে বাংলাদেশে আগ্রাসন চালাতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন।
রোববার রাজধানীর ইস্কাটনে এক ‘গণ-ইফতার’ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “বিদেশিরা বাংলাদেশের ধর্মীয় বিভাজন উসকে দিয়ে আগ্রাসন চালাতে চায়। এ বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।
“বিগত দিনে বাংলাদেশে যে ধর্মীয় বিভাজনের রাজনীতি হয়েছে, এনসিপি কোনোভাবেই তা আর হতে দেবে না।"
এনসিপিতে যুক্ত দলিত-হরিজন সম্প্রদায়ের নেতাকর্মীদের উদ্যোগে নেভি হাউজের গলিতে এ ইফতার অনুষ্ঠান হয়। সেখানে শতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
এবারের রোজায় প্রতিদিনই এখানে ‘গণ-ইফতার’ আয়োজন করছে এনসিপি।
ইফতারের আগ মুহূর্তে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে আখতার বলেন, "জাতীয় নাগরিক কমিটি যে নতুন ধারা রাজনীতি চালু করতে চেয়েছে, সেখানে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবার জন্য একটি বাংলাদেশ বিনির্মাণের শপথ নিয়েছে।
“আমাদের রাজনীতিতে আমরা মধ্যমপন্থা চর্চার কথা বলেছি। আমরা বাংলাদেশের মানুষের কাছে আবেদন রাখতে চাই, তরুণরা যে বার্তা নিয়ে এসেছে আপনারা সেই বার্তায় সায় দেবেন।"
তিনি বলেন, “আমরা তরুণরা কাজ করতে গিয়ে নানা ভুল করতে পারি। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, দেশের জনগণ আমাদের শুধরে দেবেন।”
ইফতার আয়োজনের জন্য দলিত সম্প্রদায়কে ধন্যবাদ জানিয়ে আখতার বলেন, "বাংলাদেশের দলিত ও হরিজন সম্প্রদায়ের মানুষ আজ মুসলিমদের জন্য ইফতার নিয়ে এসেছে; ইফতারে সামিল হয়েছে। এটা বাংলাদেশের সম্প্রীতির আকাঙ্ক্ষায় একটি সুখকর বার্তা।”
এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব আলাউদ্দিন মোহম্মদ বলেন, “আজ আমাদের জন্য একটা আনন্দের দিন। বাংলাদেশের সাত শতাংশ জনগোষ্ঠী তফসিলি সম্প্রদায় বা সিডিউল কাস্ট। তারা সংখ্যালঘুর মাঝেও সংখ্যালঘু।
“আজ তারা যেভাবে ইফতার আয়োজন করেছেন, এটা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নজির। ভবিষ্যতে ধর্মের নামে, জাতের নামে কাউকে যেন ছোট করা না হয়, এটা সবাই খেয়াল রাখবেন।"
এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ভীম্পাল্লী ডেভিড রাজু বলেন, “এনসিপি মধ্যপন্থার রাজনীতি নিয়ে এসেছে। সেখানে সকল ধর্ম, সকল সম্প্রদায়ের মানুষ একসঙ্গে রাজনীতি করবে।
“বিগত ৫৩ বছরে আমরা রাষ্ট্রের কোনো পর্যায়ে অংশগ্রহণ করতে পারিনি। জাতীয় নাগরিক পার্টির মাধ্যমে আমরা নতুন করে রাজনীতিতে যুক্ত হলাম।"
এনসিপির যুগ্ম মুখ্যসমন্বয়ক ও রবিদাস সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি কৈলাশ চন্দ্র রবিদাস বলেন, "বাংলাদেশ শুধুমাত্র একটা সম্প্রদায়ের নয়। এটা হিন্দু, মুসলিম, খৃষ্টান, বৌদ্ধ, আদিবাসী, দলিত, হরিজন, তফসিলিসহ সব মানুষের।
“এতদিন এসব সম্প্রদায় ঐতিহাসিকভাবে, কাঠামোগতভাবে, পদ্ধতিগতভাবে, আইনগতভাবে বিভিন্নভাবে বঞ্চনার শিকার হয়েছিল। নতুন বাংলাদেশে, চব্বিশের বাংলাদেশে এসব বৈষম্য দূর করার সময় এসেছে।”