ঢাকার ২০টি আসন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন মোট ৩৬ জন; যাদের মধ্যে আছেন জাতীয় পার্টির জিএম কাদের ও সালমা ইসলামও।
Published : 17 Dec 2023, 09:09 PM
ঢাকা-৬ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের সঙ্গে ভোটের প্রতিযোগিতায় থাকলেন না জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান এবং এ আসনের দুই বারের সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ।
মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার শেষ দিন রোববার আগামী ৭ জানুয়ারির ভোট থেকে সরে দাঁড়াতে তিনি প্রার্থিতা তুলে নেন।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে এদিন তিনিসহ ঢাকা জেলার ২০টি আসনে সব মিলিয়ে ৩৬ প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
এবারের ভোটে আসন ভাগাভাগির সময় আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় পার্টির এ আসন নিয়ে সমঝোতা না হলে ফিরোজ রশীদ ভোট থেকে সরে যান। এর আগের দুই নির্বাচনে নৌকার সঙ্গে সমঝোতার অংশ হিসেবে তিনি এ আসন থেকে জয়ী হয়েছিলেন।
২০০১ সালে আসনটি ছিল ঢাকা-৭। তখন জাতীয় পার্টির প্রার্থী জাহাঙ্গীর মো. আদেল ভোট পান ৩০৯৩। সংসদ সদস্য হয়েছিলেন নাসিরুদ্দিন আহমেদ পিন্টু প্রায় ৯০ হাজার ভোট পেয়ে। এক হাজারের বেশি ভোটে হেরে যান হাজী সেলিম। ২০০১ সালের ভোটে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির এককভাবে নির্বাচন করেছিল।
২০০৮ সাল থেকে এ আসন পুর্নগঠন করে হয় ঢাকা-৬। ২০০৮ সালে এ আসনে জয়ী হন আওয়ামী লীগের মিজানুর রহমান খান। তিনি পরাজিত করেন সাদেক হোসেন খোকাকে। সবশেষ দুই নির্বাচনে এ আসনটি আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয়, যাতে জয়ী হন ফিরোজ রশীদ।
এ আসন থেকে তার পাশাপাশি সাঈদ খোকনের স্ত্রী স্বতন্ত্র প্রার্থী ফারহানা সাঈদও মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন।
এদিন ঢাকার বর্তমান সংসদ সদস্যদের মধ্যে ঢাকা-১৮ আসনে আওয়ামী লীগের হাবিব হাসান মনোনয়নপত্র তুলে নিয়েছেন। জাতীয় পার্টির সঙ্গে সমঝোতার অংশ হিসেবে নৌকার প্রার্থী তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন।
লাঙ্গল নিয়ে এ আসন থেকে প্রার্থী হয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের স্ত্রী শেরিফা কাদের, যিনি বর্তমানে সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য।
অপরদিকে নৌকার সঙ্গে আসন ভাগাভাগির অংশ হিসেবে জিএম কাদের ঢাকা-১৭ থেকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন।
এ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া জাপার সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য সালমা ইসলামও মনোনয়নপত্র তুলে নিয়েছেন। এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
সালমা ইসলাম এ আসন থেকে সরে দাঁড়ালেও তিনি ঢাকা-১ আসনে প্রার্থী হয়েছেন। সেখানে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য প্রধানমন্ত্রীর শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে।
প্রত্যাহারের শেষ দিন ঢাকা মহানগরের ১৫টি সংসদীয় আসনে (ঢাকা-৪ থেকে ঢাকা-১৮) এসব প্রার্থীসহ ২৭ জন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করছেন।
জেলার পাঁচটি আসনে (ঢাকা-১ থেকে ঢাকা-৩ এবং ঢাকা-১৮ ও ঢাকা-১৯) আসনে সরে দাঁড়ান আরও নয়জন বলে দুই রিটার্নিং অফিসার (বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রসাশনের) কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে।
ঢাকা মহানগর থেকে আরও সরলেন যারা
মহানগরীর আসনগুলো থেকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারকারীদের মধ্যে জাকের পার্টির প্রার্থীই বেশি।
ঢাকা-৪ আসন থেকে এ দলের মো. রবিউল ইসলাম; ঢাকা-৫ থেকে জাতীয় পার্টির মীর আব্দুস সবুর ও স্বতন্ত্র কাজী মনিরুল ইসলাম; ঢাকা-৬ থেকে জাকের পার্টির তারিকুল ইসলাম; ঢাকা-৭ আসনের জাকের পার্টির বিপ্লব চন্দ্র বনিক ও জাতীয় পার্টির তারেক আহমেদ আদেল; ঢাকা ৮ আসনে জাকের পার্টির মো. নজরুল ইসলাম লিটন; ঢাকা-৯ থেকে জাকের পার্টির মোহাম্মদ মফিজ উল্লাহ, জাসদের নিলাঞ্জনা রিফাত ও ইসলামী ঐক্যজোটের মো. লোকমান শেখ; ঢাকা-১০ থেকে জাকের পার্টির মো. হুমায়ুন কবীর; ঢাকা-১১ আসনে জাকের পার্টির মো. মাসুদ রানা; ঢাকা-১২ থেকে জাকের পার্টির হুমায়ুন কবীর; ঢাকা-১৩ থেকে জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম; ঢাকা-১৪ থেকে জাকের পার্টির মো. জাকির হোসেন, জাতীয় পার্টির (জেপি) শেখ শহীদুল ইসলাম ও জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম; ঢাকা-১৫ থেকে জাকের পার্টির মাইনুল ইসলাম; ঢাকা-১৬ থেকে জাকের পার্টির আমিনুল ইসলাম; ঢাকা-১৭ থেকে জাকের পার্টির কাজী মো. রাশিদুল হাসান ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের নাজমুন নাহার এবং ঢাকা ১৮ আসনে জাকের পার্টির মো. শরিফ হোসেন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন।
ঢাকা জেলা থেকে সরলের যারা
ঢাকা-১ আসনে বাংলাদেশ সংস্কৃতিক মুক্তিজোটের আব্দুর রহিম ও জাকের পার্টির মো. লুৎফর রহমান খান; ঢাকা-২ থেকে জাকের পার্টির মো. আবুল কালাম; ঢাকা-৩ থেকে জাতীয় পার্টির মো. ফারুক; ঢাকা-১৯ থেকে জাকের পার্টির মো. শামসুদ্দিন আহমেদ, জাতীয় পার্টির মো. আবুল কালাম আজাদ ও মো. বাহাদুর ইসলাম এবং ঢাকা-২০ আসন থেকে সরে দাঁড়ান জাকের পার্টির মো. সাইদুর রহমান।