রিজভী, এ্যানীসহ বহু আটক, বিএনপি কার্যালয় ঘিরে পুলিশ

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংঘর্ষের খবর পেয়ে নয়া পল্টনে ছুটে এলেও তাকে দলীয় কার্যালয়ে ঢুকতে দেয়নি পুলিশ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Dec 2022, 11:19 AM
Updated : 7 Dec 2022, 11:19 AM

ঢাকার নয়া পল্টন এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপিকর্মীদের সংঘর্ষের পর দলটির কার্যালয় ঘিরে রেখেছে পুলিশ।

সেখান থেকে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, প্রচার সম্পাদক ও মিডিয়া সেলের সদস্য সচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েল, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসসহ কয়েক ডজন নেতাকর্মীকে আটক করে নিয়ে যেতে দেখা গেছে।

তবে তাদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংঘর্ষের খবর পেয়ে নয়া পল্টনে ছুটে এলেও তাকে দলীয় কার্যালয়ে ঢুকতে দেয়নি পুলিশ।

দলীয় কার্যালয়ের সামনে রাস্তায় দাঁড়িয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “এটা ন্যক্কারজনক হামলা। পুলিশ গেইট বন্ধ করে ভেতরে তল্লাশির নামে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করছে। ভেতরে বিস্ফোরক ঢুকিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ার ব্যবস্থা করছে। এটা অসাংবিধানিক।”

আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ ঘিরে কয়েকদিন ধরেই উত্তেজনা চলছিল। এর মধ্যে বিএনপিকর্মীরা বুধবার সকাল থেকে নয়াপল্টনে তাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয় সামনে জড়ো হতে শুরু করেন।

বিকালে তারা যখন বিএনপি কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিচ্ছিলেন, তারই এক পর্যায়ে সংঘর্ষ বেঁধে যায়।

পুলিশ ধাওয়া দিলে বিএনপি কর্মীরা ঢিল ছুড়তে শুরু করে। পুলিশ তখন রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সোয়াট সদস্যদেরও দেখা যায় সেখানে।

ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে নয়া পল্টন এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ফকিরাপুল থেকে নাইটিঙ্গেল মোড় পর্যন্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। তদের মধ্যে মকবুল নামে ৩২ বছর বয়সী একজনকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, নিহত ওই যুবকের শরীরে ‘ছররা গুলির চিহ্ন’ রয়েছে। আহত আরও অন্তত তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আটক হওয়ার আগে সংঘর্ষ চলার সময় রিজভী টেলিফোনে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নেতাকর্মীরা ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশের বিষয়ে খোঁজ খবর নিতে পার্টি অফিসে এসেছিলেন। তাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে অতর্কিতে হামলা চালিয়েছে পুলিশ। টিয়ার গ্যাসে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। অনেক কর্মীকে আহত অবস্থায় আটক করে নিয়ে গেছে।”

অন্যদিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার মো. হায়াতুল ইসলাম খান বলেন, “১০ তারিখে বিএনপির সমাবেশের স্থান এখনো নির্ধারণ হয়নি কিন্তু আজ নয়াপল্টন পার্টি অফিসের সামনে উভয় পাশের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বারবার অনুরোধ করার পরও রাস্তা ছেড়ে দেয়নি। পরে তাদেরকে উঠাতে গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এভাবেই সংঘর্ষের ঘটনা। পুলিশের বেশ কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন।”