একই দাবি জানিয়েছে অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি।
Published : 17 Apr 2025, 03:35 PM
নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার পরপরই দল নিবন্ধনের সময় বৃদ্ধির আবেদন করেছে ‘বাংলাদেশ আ-আম জনতা পার্টি-বিএজেপি’।
বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ২টার দিকে ইসি সচিব বরাবর দেওয়া এক চিঠিতে এ দাবি জানান দলের সদস্য সচিব ফাতিমা তাসনিম।
তিনি বলেন, “২০ এপ্রিল শেষ হচ্ছে আবেদনের সময়। বাস্তবতা বিবেচনা করে এ সময়সীমা ৯০ দিন বাড়াতে আমরা আবেদন করেছি।”
এদিনই ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল আমীনের নেতৃত্বে আত্মপ্রকাশ করে ‘বাংলাদেশ আ-আম জনতা পার্টি’। রফিকুল অর্থ পাচার ও ডেসটিনি ট্রি প্লান্টেশন নিয়ে দুদকের দুই মামলায় দীর্ঘ সময় কারাভোগ করে গত ১৫ জানুয়ারি কারামুক্ত হন।
নতুন দলটির সদস্য সচিব ফাতিমা তাসনিম সম্প্রতি গণঅধিকার পরিষদ থেকে পদত্যাগ করেন। এর আগে গত ২৮ জানুয়ারি মিয়া মশিউজ্জামান নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের একাংশের নাম বদলে ‘আমজনতার দল’ করা হয়।
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন চেয়ে গত ১০ মার্চ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। ওই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ২০ এপ্রিল পর্যন্ত নিবন্ধনের জন্য সুযোগ রয়েছে নতুন দলের।
ফাতিমা তাসনিমের আবেদনে বলা হয়েছে, “আত্মপ্রকাশের পর বাংলাদেশ আ-আম জনতা পার্টি (বিএজেপি) রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করার লক্ষ্যে প্রস্তুতিমূলক সকল কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রেখেছে। ...বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর বাংলাদেশের মানুষের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদ ও তৎপরবর্তী লম্বা সরকারি ছুটির আমেজে দীর্ঘ দিন বাংলাদেশের মানুষ এবং বিএজেপি’র নেতাকর্মীবৃন্দ প্রশাসনিক ও দাপ্তরিক কাজ সম্পন্ন করতে পারেননি।”
এ পরিস্থিতিতে নিবন্ধনের আবেদনের জন্য তিন মাস সময় চেয়েছে বিএজেপি।
একই দাবি এনসিপির
অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টিও (এনসিপি) নিবন্ধনের আবেদনের সময়সীমা ৯০ দিন বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন সচিবের দপ্তরে এ সংক্রান্ত চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানান সিইসির একান্ত সচিব আশ্রাফুল আলম।
তিনি বলেন, আগামী রোববার প্রধান নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দলটির প্রতিনিধি দলের বৈঠকের কথা রয়েছে।
এনসিপির চিঠিতে বলা হয়েছে, “২০০৮ সালের রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা ও প্রাসঙ্গিক আইনের অধীনে রাজনৈতিক দল নিবন্ধন শর্তাবলিসমূহ সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও অসাংবিধানিক। পূর্বের স্বৈরাচারী সরকারের আমলে তৈরি এই বিধিগুলো রাজনৈতিক বহুত্ববাদকে সংকুচিত এবং ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য প্রণীত।
“নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন নিজেই জেলা পর্যায় ১০% এবং উপজেলা পর্যায়ে ৫% কার্যালয় স্থাপনের শর্ত সহজীকরণের পাশাপাশি প্রতি পাঁচ বছরে নিবন্ধিত দলের নিবন্ধন নবায়নের বাধ্যবাধকতার প্রস্তাব দিয়েছেন।”
চিঠিতে এও বলা হয়েছে, “তাছাড়া নির্বাচন কমিশনের বর্তমান কাঠামো এবং ব্যক্তিবর্গের নিয়োগ বিতর্কিত ২০২২ সালের আইন অনুসারে গঠিত সার্চ কমিটির মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে। এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার অভাব, রাজনৈতিক প্রভাব ও নিরপেক্ষতা রক্ষায় ব্যর্থতার জন্য ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছে, যা অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য অপরিহার্য বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষুণ্ণ করছে।
“সুতরাং বর্তমানের নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশের আলোকে প্রয়োজনীয় আইন ও বিধি প্রনয়ন বা সংশোধন পূর্বক নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হওয়া দরকার।”
নির্বাচন কমিশন সংক্রান্ত মৌলিক সংস্কার এবং নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য আবেদনের সময়সীমা তিন মাস বাড়াতে অনুরোধ জানানো হয়েছে চিঠিতে।
'বাংলাদেশ আ-আম জনতা পার্টি'র আত্মপ্রকাশ