বিএনপি অভিযোগ করে আসছে, সালাহউদ্দিন স্বেচ্ছায় ভারত যাননি, তাকে ধরে নিয়ে সীমান্তে পার করে দেওয়া হয়েছিল। এর পেছনে তখনকার আওয়ামী লীগ সরকারের হাত ছিল।
Published : 11 Aug 2024, 04:51 PM
নয় বছর আগে ঢাকা থেকে ‘নিখোঁজ’ হওয়ার পর নিজেকে ভারতের শিলংয়ে আবিষ্কার করা বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন আহমেদ দেশে ফিরেছেন।
দিল্লি থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ফ্লাইটে রোববার বেলা সোয়া ২টায় তিনি ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পৌঁছান।
বিএনপির কয়েক হাজার নেতা-কর্মী বিমানবন্দরে সাবেক এই প্রতিমন্ত্রীকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্যকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান দলের ভাইস চেয়ারম্যান রবকত উল্লাহ বুলু, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপির আন্দোলনের মধ্যে ২০১৫ সালের ১০ মার্চ ঢাকার উত্তরা থেকে নিখোঁজ হন সালাহ উদ্দিন। তখন তিনি যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে দলের মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করছিলেন।
নিখোঁজের ৬৩ দিন পর ওই বছরের ১১ মে মেঘালয়ের শিলংয়ের পুলিশ উদ্ভ্রান্ত অবস্থায় সালাহ উদ্দিনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
ভারতে প্রবেশ করলেও তার কোনো বৈধ কাগজপত্র সেসময় মেঘালয় পুলিশ না পাওয়ায় ফরেনার্স অ্যাক্টে মামলা দিয়ে তাকে গ্রেপ্তার দেখায়।
সেই মামলায় ২০১৫ সালের ২২ জুলাই শিলংয়ের আদালতে তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করা হয়।
মেঘালয় পুলিশের করা ওই মামলায় ২০১৮ সালের ২৬ অক্টোবর খালাস পান সালাহ উদ্দিন। পরে সেই রায়ের বিরুদ্ধে ভারত সরকার আপিল করে।
ওই আপিল নিষ্পত্তি করে ২০২৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি শিলং জজ কোর্ট তাকে খালাস দেয়। দ্রুত যেন তাকে দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়, সেই নির্দেশনা দেয় আদালত।
পাসপোর্ট না থাকায় সালাহ উদ্দিন আহমেদ দেশে ফিরেছেন ট্র্যাভেল পাস (ট্রাভেল পারমিট) নিয়ে । তিনি এই পারমিটের জন্য গৌহাটিতে বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে আবেদন করেছিলেন।
বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সালাহ উদ্দিন আহমেদের দেশে ফেরার পথ সুগম হয়। আইনি জটিলতা কাটিয়ে এবার তিনি নিজ দেশে ফিরলেন।
বিএনপি অভিযোগ করে আসছে, সালাহউদ্দিন স্বেচ্ছায় ভারত যাননি, তাকে ধরে নিয়ে সীমান্তে পার করে দেওয়া হয়েছিল। এর পেছনে তখনকার আওয়ামী লীগ সরকারের হাত ছিল।
সালাহ উদ্দিন বিসিএস ক্যাডারের কর্মকর্তা হয়ে তার কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। ১৯৯১ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সহকারী একান্ত সচিব ছিলেন তিনি।
পরে সরকারি চাকরি ছেড়ে তিনি বিএনপিতে যোগ দিয়ে রাজনীতিতে নামেন। ২০০১ সালে তিনি কক্সবাজার থেকে বিএনপির মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন, পরে চারদলীয় জোট সরকারের যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রীও ছিলেন। তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদও সংসদ সদস্য ছিলেন।
ভারতে আটকের সময়ে সালাহ উদ্দিন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ছিলেন। ২০১৬ সালে ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে তার অনুপস্থিতিতেই তাকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নির্বাচিত করা হয়।