বায়ু দূষণে শীর্ষস্থান উন্নয়নের নমুনা: নজরুল

“যারা গণতন্ত্র মানে না, যাদের কাছে ক্ষমতাই মুখ্য, যাদের কাছে লুটপাটই পেশা, তাদের কাছে এটা মডেল,” বলেন এ বিএনপি নেতা।

বায়ু দূষণে ঢাকা যে প্রায়ই বিশ্বের শীর্ষে থাকছে, তা ‘আওয়ামী লীগের উন্নয়নের নমুনা’ বলে কটাক্ষ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগের ঘোষিত ইশতেহার নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বৃহস্পতিবার এক দলীয় কর্মসূচিতে তিনি এ কথা বলেন।

নজরুল বলেন, “নির্বাচনের নামে যে খেলা আমরা দেখছি, সেই খেলার অংশ হিসেবে গতকাল দেখলাম ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল একটা ইশতেহার ঘোষণা করেছে। এতে অনেক বড় বড় কথা আছে। কিন্তু গতকালই বাংলাদেশের এই ঢাকা মহানগর ছিল বায়ু দূষণে সারা দুনিয়াতে শীর্ষে।

“তারা বলে যে, দেশ উন্নয়নের রোল মডেল হয়েছে। কী উন্নয়ন হল তাহলে এত বছরে যে, আমরা ঢাকা শহরকে বায়ু দূষণে বিশ্বের শীর্ষ করেছি? আমরা এই বাংলাদেশের জনগণের লক্ষ-হাজার-কোটি টাকা লুট হতে দেখলাম, আমরা জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ হতে দেখলাম, বিনা ভোটে এমপি হতে দেখলাম, রাতের ভোটে সরকার গঠন দেখলাম। এসব কি রোল মডেল…।”

নজরুল ইসলাম খান বলেন, “হ্যাঁ, যারা গণতন্ত্র মানে না, যাদের কাছে ক্ষমতাই মুখ্য, যাদের কাছে লুটপাটই পেশা, তাদের কাছে এটা মডেল। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ এটাকে মডেল মনে করে না।”

 এই বিএনপি নেতার ভাষায়, “বাংলাদেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্দীপ্ত হয়ে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, সত্যিকারের সমৃদ্ধ বাংলাদেশ, সকলের জন্য উন্নয়নের বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখে। আমরা সেই স্বপ্ন পূরণের লড়াইয়ে আছি, ইনশাল্লাহ এই লড়াইয়ে আমরাই বিজয়ী হব, বাংলাদেশের জনগণ বিজয়ী হবে।”

ভোট বর্জনের আহ্বানে এদিন বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে লিফলেট বিতরণ করেন নজরুল ইসলাম খান। পথচারীসহ যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের হাতে লিফলেট তুলে দেন তিনি।

বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা জয়নাল আবেদীন, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, তাইফুল ইসলাম টিপুসহ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের নেতৃবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

‘একতরফা নির্বাচনকে না বলুন’

নজরুল ইসলাম খান বলেন, “আজকে এই দেশে গণতন্ত্রের নামে প্রহসন চলছে, নির্বাচনী খেলা চলছে, ‘আমরা আর ডামিরা’ নির্বাচন চলছে। এই নির্বাচনে জনগণর মতপ্রকাশের কোনো সুযোগ নাই, এই নির্বাচনে কোনো বিরোধী দল অংশগ্রহণ করছে না। কাজেই এ নির্বাচনে জনমতের কোনো প্রতিফলন হবে না। যেহেতু সরকারবিরোধী কোনো প্রার্থী এই নির্বাচনে নাই, সেহেতু নির্বাচনে ভোট দেওয়ার কোনো গুরুত্ব নাই, কোনো সুযোগ নাই। সেজন্য দেশের জনগণ তার গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার জন্যই এ নির্বাচন বর্জন করবে।

“আমরা দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাই, আপনার পছন্দের প্রার্থী বাছাইয়ের সুযোগ যেহেতু এই নির্বাচনে নাই, অতএব এই নির্বাচন বর্জন করুন। এই নির্বাচন একটা অবৈধ সরকার, একটা দুর্নীতিবাজ দেশের অর্থ সম্পদ লুটকারী এবং দেশের মানুষের অধিকার হরণকারী একটা সরকারের মেয়াদ বৃদ্ধির অপচেষ্টা মাত্র। আপনারা তাদের ‘না’ বলুন, আপনারা তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিন এবং এই নির্বাচনী খেলা ব্যর্থ করে দিন।”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই নেতা বলেন, “আমরা দেশবাসীর কাছে আরও আহ্বান জানাচ্ছি, দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার যে লড়াই, সেই লড়াইয়ে আপনারা শামীল হোন এবং একটা নির্দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য যে লড়াই. সেই লড়াইকে বিজয়ী করুন। 

“আসুন গণতন্ত্রের লড়াইকে বিজয়ী করে আমরা এমন এক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করি, যে বাংলাদেশ হবে আমাদের বাংলাদেশ, জনগণের বাংলাদেশ।”

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুকের নেতৃত্বে মৎস্যজীবী দলও এদিন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লিফলেট বিতরণ করে।

এছাড়া বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী কাফরুল ও উত্তরা এলাকায়, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম নিউ মার্কেটের কাছে এবং মহানগর দক্ষিন বিএনপির সদস্য ইশরাক হোসেনের নেতৃত্বে গোপীবাগ রেলগেইটে লিফলেট বিতরণ করা হয়।