জেলা পরিষদের দ্বিতীয় ভোট ১৭ অক্টোবর

৬১ জেলার ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, উপজেলা ও সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা ভোট দেবেন তাতে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 August 2022, 05:16 PM
Updated : 23 August 2022, 05:16 PM

জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, সাধারণ ও সংরক্ষিত সদস্য পদে আগামী ১৭ অক্টোবর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন সভায় ভোটের এ তফসিল চূড়ান্ত হয়।

তিন পার্বত্য জেলা বাদ দিয়ে ৬১ জেলায় এ ভোট হবে। ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, উপজেলা ও সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা ভোট দেবেন তাতে।

জেলা পরিষদ প্রতিষ্ঠার ১৬ বছর পর ২০১৬ সালে প্রথম নির্বাচন হয় স্থানীয় সরকারের এ প্রতিষ্ঠানে। গত বছর মেয়াদ শেষ হলেও বিদ্যমান আইন সংশোধনের প্রক্রিয়ার মধ্যে কে এম নূরুল হুদা নির্বাচন কমিশন জেলা পরিষদ নির্বাচন করতে পারেনি।

মেয়াদ শেষে পরিষদের চেয়ারম্যান পদে প্রশাসক নিয়োগের বিধানও হয়। অবশ্য আগের পরিষদের চেয়ারম্যানরাই প্রশাসকের দায়িত্ব পান।

কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন যোগ দেওয়ার ছয় মাসের মধ্যে জেলা পরিষদের এ নির্বাচন করতে যাচ্ছে।

ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ কমিশন সভার সিদ্ধান্ত তুলে ধরে ভোটের তারিখ ঘোষণা করেন এবং ইভিএমে এ নির্বাচন হবে বলে জানান।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ১৭ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক।

এর আগে আগ্রহী প্রার্থীরা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। ১৮ সেপ্টেম্বর বাছাইয়ের পর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৫ সেপ্টেম্বর।

পদ: প্রতিটি জেলা পরিষদে একজন চেয়ারম্যান, ১৫ জন সাধারণ সদস্য এবং ৫ জন সংরক্ষিত সদস্য নির্বাচিত হবে।

ভোটার: ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, উপজেলা ও সিটি করপোরেশনের মোট ৬৩ হাজারেরও বেশি নির্বাচিত প্রতিনিধিরা ভোট দেবেন এ নির্বাচনে।

ভোট নেন যারা: এ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেন জেলা প্রশাসক। আর তার সহকারী হিসেবে থাকেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা। প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন অন‌্য নির্বাচন কর্মকর্তারা।

ভোটের আয়োজন: প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি ভোটকেন্দ্র। প্রতিটি কেন্দ্রে পুরুষ ও মহিলা ভোটারদের জন‌্য আলাদা কক্ষ থাকে।

যেভাবে হয় ভোট

ছয় বছর আগে ২০১৬ সালের ২৮ ডিসেম্বর প্রথম জেলা পরিষদের ভোট হয়।

# এ নির্বাচনের জন‌্য প্রতিটি জেলার সীমানা ১৫টি ওয়ার্ডে ভাগ করা হয়। তিনটি করে ওয়ার্ড নিয়ে হবে একটি সংরক্ষিত ওয়ার্ড, যার সদস‌্য হবেন একজন নারী।

# কোন এলাকার ভোটার কোন কেন্দ্রে ভোট দেবেন তা আগেই গেজেট আকারে প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন।

# কেন্দ্রে যাওয়ার পর একজন ভোটারকে তিনটি আলাদা ব্যালটে ভোট দিতে হয়। চেয়ারম্যান পদের ব‌্যালট সাদা, সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্য পদের জন‌্য সবুজ এবং নারী সদস্য পদের জন‌্য গোলাপী ব্যালটে ভোট দেওয়ার নিয়ম।

তবে এবার জেলা পরিষদে ইভিএমে ভোট হবে বলে জানান ইসির অতিরিক্ত সচিব।

ভোট বৃত্তান্ত

# ১৯৮৯ সালে তিন পার্বত্য জেলায় একবারই সরাসরি নির্বাচন হয়েছিল। আর কোনো জেলা পরিষদ নির্বাচন হয়নি।

# ১৯৮৮ সালে এইচ এম এরশাদ সরকার প্রণীত স্থানীয় সরকার (জেলা পরিষদ) আইনে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে সরকার কর্তৃক নিয়োগ দেওয়ার বিধান ছিল; পরে আইনটি অকার্যকর হয়ে পড়ে।

# ২০০০ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচিত জেলা পরিষদ গঠনের জন্য নতুন আইন করে।

# এরপর ২০১১ সালের ১৫ ডিসেম্বর সরকার ৬১ জেলায় আওয়ামী লীগের জেলা পর্যায়ের নেতাদের প্রশাসক নিয়োগ দেয়। অনির্বাচিত এই প্রশাসকদের মেয়াদ শেষে ২০১৬ সালে ভোট হয়।

#জেলা পরিষদে প্রশাসক নিয়োগের বিধান যুক্ত করে গত ৬ এপ্রিল ‘জেলা পরিষদ (সংশোধন) বিল-২০২২’ সংসদে পাস হয়। ১৩ এপ্রিল সংশোধিত জেলা পরিষদ আইনের গেজেট প্রকাশ করা হয়।

এর ধারাবাহিকতায় মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা পরিষদ বিলুপ্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্থানীয় সরকার বিভাগ।

#২০২২ সালের ২৩ অগাস্ট তফসিল ঘোষণা, মনোনয়নপত্র জমা ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত; ১৮ সেপ্টেম্বর বাছাই; মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৫ সেপ্টেম্বর এবং ভোট ১৭ অক্টোবর।

আরও পড়ুন

Also Read: সংসদে বিল: সব জেলা পরিষদে সমান সদস্য থাকছে না, বসানো যাবে প্রশাসক