আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশে মারামারি

মঞ্চে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতির মধ্যে মারামারিতে জড়ায় দুই পক্ষ। নেতাদের কথায়ও তারা থামছিলেন না।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 June 2023, 03:47 PM
Updated : 8 June 2023, 03:47 PM

ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবসের আলোচনা অনুষ্ঠানে মারামারিতে জড়াল আওয়ামী লীগের একদল কর্মী।

বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে ক্ষমতাসীন দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এই সমাবেশ হয়। এর আয়োজক ছিল দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা। 

মঞ্চে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে নিচে মারামারি দেখে সভার সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী বারবার মাইকে শান্ত হওয়ার আহ্বান জানালেও তাতে কোনো কাজ হচ্ছিল না।

পরে সিসি ক্যামেরা দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি। আর নেতাদের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম এবং কেরানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদের সমর্থকরা এই মারামারিতে জড়ায় বলে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়।

কামরুল ঢাকা-২ (কেরানীগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য। ওই আসনে আগামীতে প্রার্থী হতে চান শাহীন।

বৃহস্পতিবারের বিকালের এই সমাবেশে যোগ দিতে দুপুর থেকে বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডের নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে আসছিলেন।

এর মধ্যেই বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে দুই পক্ষের সমর্থকরা একে অন্যের দিকে চেয়ার ছুড়ে মারতে শুরু করেন। ব্যানারের বাঁশ আর লাঠি নিয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে।

এসময় সভায় আসা অন্য নেতা-কর্মীরা ভয়ে এদিক-সেদিক দৌড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান তারা। অনেকে আশ্রয় নেন দলীয় কার্যালয়ের ভেতরে।

সাংবাদিকদের জন্য রাখা চেয়ার-টেবিলেও চড়ে বসেন মারামারিরত কর্মীরা। সংবাদকর্মীরাও তখন নিরাপদ দুরত্বে সরে যান। এরই মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে কয়েক দফা।

সমাবেশের প্রধান অতিথি ওবায়দুল কাদের তখনও উপস্থিত হননি। তবে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির মঞ্চেই ছিলেন।

সংঘর্ষের বিষয়ে জানতে চাইলে কামরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আসলে ঘটনা কী হয়েছে জানি না, কারা কারা মারামারি করেছে তাও জানি না। এই ঘটনার সময় আমি স্টেজে ছিলাম।”

এনিয়ে শাহীন আহমেদের বক্তব্য, “দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, কামরাঙ্গীরচর, আমিন বাজার থেকে আমার প্রায় চার থেকে পাঁচ হাজার লোক এসেছে। এগুলো দেখে উনার (কামরুল ইসলাম) মাথা নষ্ট হয়ে গেছে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উনার লোকজন সামনে থেকে পেছনের দিকে চেয়ার ছোড়া শুরু করে। এক পর্যায়ে আমাদের সমর্থকরা সরে যায়, পাল্টা কেউ আক্রমনে যায়নি। চার-পাঁচজন নেতাকর্মী আহতও হয়েছে। ব্যানারের লাঠিসোঁটা নিয়ে আমার নেতাকর্মীদের আক্রমণ করা হয়েছে।”

বিষয়টি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে জানিয়েছেন শাহিন। “তিনি বলেছেন, বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেবেন,” বলেন তিনি।

এই সমাবেশে পরে বক্তব্য দেওয়ার সময় ওবায়দুল কাদের দলে শৃঙ্খলা বজায় রাখার উপর জোর দিয়ে বলেন, “আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা নিয়মের মধ্যে থাকুন। আপনারা আমাদের শপথে থাকুন।”