সিন্ডিকেটকে কোলে বসিয়ে রেখেছে সরকার: গণতন্ত্র মঞ্চ

মান্না বলেন, “৭ বা ৮ জন ব্যবসায়ী বাংলাদেশের সমস্ত ইমপোর্ট নিয়ন্ত্রণ করে, তারাই পণ্যে দাম বাড়াবে-কমাবে, কিছু করার থাকে না।”

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 March 2024, 11:25 AM
Updated : 18 March 2024, 11:25 AM

ক্ষমতাসীনদের ‘একচেটিয়া সিন্ডিকেটই’ নিত্যপণ্যের দাম বাড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ।

সোমবার দ্রব্যমূল্যের ঊধর্বগতির প্রতিবাদে এক অবস্থান কর্মসূচিতে মঞ্চের সমন্বয়ক গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, “ক্ষমতাসীনদের আর্শিবাদপুষ্ট এক চেটিয়া কোম্পানি, তারা বাজারে আধিপত্য তৈরি করে, সিন্ডিকেট তৈরি করে। যারা সিন্ডিকেট তৈরি করে, একজন আবার সবার ‍উপর প্রভুত্ব করে।

“আজকে সেই কোম্পানির নাম বাংলাদেশের সবাই জানে। সরকারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ, কোলে বসিয়ে রেখেছে নাকি উনারদের কোলে বসে আছে, সেই এস আলম কোম্পানি এখন পুরো বাজারের উপরে কর্তৃত্ব কায়েম করেছে।”

সাকি বলেন, “রাষ্ট্র তাহলে আছে কেন? সরকার তাহলে আছে কেন? উনারা নাকি বলেন, সিন্ডিকেটকে ধরলে বাজারে পণ্যের দাম আরও বেড়ে যাবে। তাহলে আপনারা পদত্যাগ করেন, ক্ষমতা ছেড়ে দেন। সেটা তারা ছাড়বেন না। কারণ এই সিন্ডিকেটকে লালন-পালন করে, উনাদের কোলে বসিয়ে রেখে বা তাদের কোলে বসে উনারা পুরো ভাগ-বাটোয়ারা নিচ্ছে।”

আওঅযামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, “উনি বলছেন, ‘আমরা সরকার, কেন সিন্ডিকেটের মধ্যে থাকব? … কয়েকটা লোক যারা ব্যবসা করে, সরকারের মদদ পায়, ইমপোর্ট করার ক্ষমতা রাখে, তারাই পুরো বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

“দরকার লাগলে চিনির রিফাইনারিরা আগুন লাগিয়ে দেয়, একদিনে চিনির দাম পাঁচ টাকা কেজিতে বাড়িয়ে দেয়, সেটাতে সরকারের কিছু করার থাকে না। ৭ বা ৮ জন ব্যবসায়ী বাংলাদেশের সমস্ত ইমপোর্ট নিয়ন্ত্রণ করে, তারাই পণ্যে দাম বাড়াবে-কমাবে, কিছু করার থাকে না। এরকম ফোরটোয়েন্টি সরকার জনগণকে প্রতারণা করছে।”

দ্রব্যমূল্যের ঊধর্বগতির প্রতিবাদে সকাল ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টা এই অবস্থান কর্মসূচি হয়।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার প্রসঙ্গ টেনে মান্না বলেন, “ও তো বলেই দিয়েছে কারা কারা করেছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কারা কারা জড়িত, কারা কারা ছাত্রলীগের পান্ডা। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছে, তারা বলেই দিয়েছে এই আত্মহত্যার পেছনে কারা কারা, তাদের বিরুদ্ধে সরকার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।”

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, “শত অবন্তিকা অনেক ব্যক্তিগত হতাশায়, দুঃখে-ক্ষোভে-আক্রোশে আত্মহত্যা করতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষকে যে আপনারা অধিকারহারা করেছেন, প্রতিদিন নির্যাতন করছেন, শাস্তি দিচ্ছেন, এরা আত্মহত্যা করবে না। এরা প্রতিবাদ করবে, প্রতিরোধ করবে, আপনাদের ক্ষমতার মসনদের দড়ি ধরে টেনে বিদায় করে দেশকে রক্ষা করবে। গণতন্ত্র মঞ্চ সেই লড়াইটা শেষ পর্যন্ত এগিয়ে নেবে।”

জোনায়েদ সাকির সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুল, আবু ইউসুফ সেলিম, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, জেএসডির শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, মোশাররফ হোসেন, নাগরিক ঐক্যের শহীদুল্লাহ কায়সার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির বহ্নি শিখা জামালী প্রমুখ।