“বিএনপি আন্দোলনের নামে যাতে অরাজকতা সৃষ্টি করতে না পারে- সেজন্য আওয়ামী লীগ তৎপর থাকবে। দলের নেতাকর্মীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী ও সরকারকে সহযোগিতা করবে।”
Published : 05 Jan 2023, 07:44 PM
সরকার পতনে সমমনাদের সঙ্গে বিএনপি ‘যুগপৎ কর্মসূচি’ নিলেও তাতে দলটি সফল হবে না বলে মনে করেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি বলেছেন, “বিএনপি আগুন সন্ত্রাস, আন্দোলন, হরতাল, অবরোধ, গণসমাবেশ করে বৈধ সরকারের পতন ঘটাতে পারবে না। আগামী ১১ জানুয়ারি নয়, আগামী ১১ ডিসেম্বরেও সরকারের পতন ঘটাতে পারবে না বিএনপি।
“আগামী ১১ জানুয়ারি বিএনপি আন্দোলনের নামে যাতে অরাজকতা সৃষ্টি করতে না পারে- সেজন্য আওয়ামী লীগ তৎপর থাকবে। দলের নেতাকর্মীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী ও সরকারকে সহযোগিতা করবে।”
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে ভারতীয়হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মার সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন কৃষিমন্ত্রী।
ঢাকার গোলাপবাগে বিভাগীয় সমাবেশ থেকে গত ১০ ডিসেম্বর ঘোষিত ১০ দফা দাবি আদায়ে যুগপৎ আন্দোলনের প্রথম কর্মসূচি হিসেবে ২৪ ডিসেম্বর দেশজুড়ে গণমিছিল করে বিএনপি ও ৩০ সমমনা দল। সেদিন আওয়ামী লীগের সম্মেলনের কারণে ঢাকায় সেই কর্মসূচি পালন করা হয় ৩০ ডিসেম্বর। দ্বিতীয় কর্মসূচি হিসেবে ১১ জানুয়ারি ৪ ঘণ্টা গণঅবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয় সেদিন।
দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশিদের ‘হস্তক্ষেপ’ প্রসঙ্গে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বিদেশি বা রাষ্ট্রদূতদের হস্তক্ষেপমূলক তৎপরতা অনেক কমে এসেছে। এক সময় হ্যারি কে টমাসের মত অনেক রাষ্ট্রদূত এদেশে নিজেদের কিং বা রাজা মনে করত, এখন সেই পরিস্থিতি নেই।
“প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সর্বক্ষেত্রে উন্নয়ন ও আর্থিক অগ্রগতির ফলে বাংলাদেশ আজ অনেক মর্যাদাশীল জাতি।”
দেশের রাজনীতি নিয়ে বিদেশিদের কাছে বিএনপির ‘ধর্না দেওয়া বা হাত পাতা’ জাতির জন্য ‘মর্যাদার নয়’ বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎকালে দুদেশের কৃষি, কৃষি যন্ত্রপাতি, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, জলবায়ুসহনশীল কৃষি, বায়োটেকনোলজি, ন্যানোটেকনোলজি বিষয়ে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও সহযোগিতার আলোচনা হয়।
কৃষিমন্ত্রী রাজ্জাক ভারতীয় হাই কমিশনারকে বলেন, বাংলাদেশের কৃষি যান্ত্রিকীকরণের দিকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। সরকার কৃষিযন্ত্রে ৫০-৭০ শতাংশ ভর্তুকি দিচ্ছে। আগামীতে বাংলাদেশ প্রচুর কৃষি যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হবে।
“এক্ষেত্রে ভারতের কৃষি যন্ত্রপাতি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর বাংলাদেশে বিনিয়োগের অনেক সুযোগ রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে তাদের ফ্যক্টরি স্থাপন করে স্থানীয়ভাবে কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরি ও অ্যাসেম্বল এবং খুচরা যন্ত্রপাতি তৈরি করতে পারে।”
হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেন, “ভারতের মাহিন্দ্রসহ অন্যান্য কৃষি যন্ত্রপাতি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে বাংলাদেশে তাদের ফ্যাক্টরি স্থাপন করে স্থানীয়ভাবে কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরি ও অ্যাসেম্বল এবং খুচরা যন্ত্রপাতি তৈরিতে বিনিয়োগ করে- সে বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে।”
আলোচনায় গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের বীজ ও পাট বীজের জন্য ভারতের সহযোগিতা কামনা করেন কৃষিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “এ বছর ভারতের মহারাষ্ট্র থেকে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের বীজ এনে দেশে চাষ করে ভাল ফলন পাওয়া গেছে। উন্নত মানের বীজ নিয়ে দুই দেশের সহযোগিতা আরও জোরদার করা প্রয়োজন।”
কৃষিমন্ত্রী বিজ্ঞানীদের প্রশিক্ষণ, বীজ প্রযুক্তি, কাজুবাদাম, কফিসহ উন্নতজাতের জাত ও চারা সরবরাহ, অ্যাগ্রো প্রসেসিং, ন্যানোটেকনোলজি, বায়োটেকনোলজি নিয়েও ভারতের সহযোগিতা কামনা করেন।
এ সময় কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার, অতিরিক্ত সচিব রুহুল আমিন তালুকদার উপস্থিত ছিলেন।