আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলছেন, “জনগণের সরকার ক্ষমতায় থাকলে দেশে ইস্যুভিত্তিক আন্দোলনের যে ইস্যু খুঁজে পাওয়া যায় না, বিএনপির সেটা হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া উচিত।"
Published : 16 Feb 2024, 03:03 PM
আন্দোলনের ‘দিবাস্বপ্ন’ বাদ দিয়ে বিএনপিকে এখন থেকেই পরবর্তী নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
শুক্রবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক যৌথ সভায় তিনি বলেছেন, "জনগণের সরকার ক্ষমতায় থাকলে আন্দোলনের বস্তুগত পরিস্থিতি খুঁজে পাওয়া যায় না। জনগণের সরকার ক্ষমতায় থাকলে দেশে ইস্যুভিত্তিক আন্দোলনের যে ইস্যু খুঁজে পাওয়া যায় না, বিএনপির সেটা হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া উচিত।"
২০০৮ সালের নির্বাচনে জিতে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকেই আন্দোলনের মধ্যে রয়েছে বিএনপি, কিন্তু গত ১৫ বছরে সাফল্য আসেনি।
এরপর আরো তিনটি নির্বাচন হয়েছে, যার মধ্যে দুটি বর্জন করেছে বিএনপি। সর্বশেষ ৭ জানুয়ারি হওয়া দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ঠেকানোর জন্য লিফলেট বিতরণ থেকে শুরু করে টানা হরতাল-অবরোধও করেছে দলটি। কিন্তু সেই নির্বাচনে জিতে টানা চতুর্থবার সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ।
ভোটের আগে সংঘর্ষের এক মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে সাড়ে তিনমাস কারাগারে থাকা বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বৃহস্পতিবার জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।
মুক্তি পেয়ে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, “গণতন্ত্রের আন্দোলন অটুট থাকবে। যতদিন দেশে গণতন্ত্র ফেরত না আসবে, জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার না আসবে, ততদিন এই সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।”
সে প্রসঙ্গ ধরে শুক্রবার আওয়ামী লীগের যৌথ সভায় কথা বলেন ক্ষমতাসীন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, “মির্জা ফখরুল সাহেব জেল থেকে বের হয়ে আবার দিবাস্বপ্নে বিভোর হয়ে পড়েছেন। পরবর্তী আন্দোলনের কথা না ভেবে এখন থেকেই পরবর্তী নির্বাচনের প্রস্তুতি নেন।"
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগদান নিয়েও যৌথ সভায় প্রারম্ভিক বক্তব্যে কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, "এই সম্মেলনে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের জন্য বিরাট সম্মান বয়ে এনেছেন। আজকে গণতান্ত্রিক বিশ্ব বাংলাদেশের গুরুত্ব নিঃসঙ্কোচে মেনে নিয়েছে।"
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী কাদেরের ভাষায়, "ভূরাজনৈতিক অবস্থানগত কারণে বাংলাদেশ শত্রুতার জন্য অনেকের উর্বর ক্ষেত্র। বঙ্গোপসাগর, সেন্টমার্টিনের প্রতি অনেকের বাজপাখির মত লোভাতুর দৃষ্টি রয়েছে। তবে শেখ হাসিনা ভারসাম্যপূর্ণ কূটনীতিতে সরকারকে সাফল্যের দিকে নিয়ে গেছেন।"
আওয়ামী লীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি নতুন করে গঠনসহ দলের অভ্যন্তরীণ বিরোধ মেটাতে এই সভায় বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্তদের দলীয় সভাপতির নির্দেশনা জানান ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, "মেয়াদীত্তীর্ণ বিভিন্ন শাখার সম্মেলন, সহযোগী সংগঠনের প্রত্যকের অসমাপ্ত সম্মেলন, কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় বিলম্বসহ সাংগঠনিক সমস্যার সমাধান করা জরুরি। বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্তরা সব শাখাগুলোকে ঢাকায় ডেকে বসতে পারেন।"
সমস্যা ও বিরোধ থাকলে তা সমাধানে অবিলম্বে কাজ শুরু করতে আওয়ামী লীগ সভাপতি নির্দেশ দিয়েছেন বলেও তিনি জানান।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মো. আব্দুর রাজ্জাক, কামরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিমসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ এবং ঢাকা মহানগর উত্তর দক্ষিণ, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা যৌথ সভায় উপস্থিত ছিলেন।