আন্দোলনে পেশাজীবীদের রাস্তায় দেখতে চান ফখরুল

নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে এ সরকারকে বাধ্য করার কথা আবারও বলেন তিনি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 July 2023, 02:04 PM
Updated : 15 July 2023, 02:04 PM

সরকার হটানোর ‘এক দফা’র আন্দোলনে পেশাজীবীদের রাস্তায় নামার আহ্বান জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শনিবার দুপুরে পেশাজীবীদের এক সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব এ আহ্বান জানান।

বর্তমানে মানুষ ‘জেগে উঠেছে’ দাবি করে তিনি বলেন, “আমি গতকালকে (শুক্রবার) নোয়াখালীতে গিয়েছিলাম- আমি দেখেছি সাধারণ মানুষের কী ঢল, শ্রমিক, কৃষক, মেহনতি মানুষের ঢল। এটা বিএনপির মিটিং ছিল না, এটা ছিল কৃষকদের সমাবেশ, শ্রমিক-মৎস্যজীবী-তাঁতীদের একটা সমাবেশ। তরুণরা জেগে উঠছে, মেহনতি মানুষ জেগে উঠছে।“

পেশাজীবীদের জেগে ওঠার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, আপনাদেরকে অনুরোধ করব, আপনারা সবাই বেরিয়ে আসুন, ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসুন, কাজ ছেড়ে বেরিয়ে আসুন। রাস্তায় নামুন, মানুষকে নামতে উদ্বুদ্ধ করুন এবং রাস্তায় নেমে জনগণের শক্তির মধ্য দিয়েই আমরা এদেরকে পরাজিত করব। দেশে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে এই সরকারকে বাধ্য করব।”

সরকারের নিপীড়ন-নির্যাতনের অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমাদের সামনে কোনো পথ খোলা নাই। এখন এই ভিসানীতি-টিতি কী আছে না আছে, ওটা আমরা দেখতে চাই না। ওইটা ওরা দেখবে, ওদের দেখার দায়িত্ব। আমরা খুব পরিষ্কার করে বলেছি যে, আমাদের নিজের জনগণের শক্তি দিয়ে আমরা আন্দোলন করছি। এই আন্দোলন কোনো ব্যক্তি বা দলের নয়, এই আন্দোলন দেশকে রক্ষা করবার আন্দোলন, এই আন্দোলন আমাদের দেশের মুক্তির জন্য আন্দোলন।“

শনিবার দুপুরে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে ‘সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে’ এ পেশাজীবী সমাবেশ হয়। সমাবেশের পর পেশাজীবীরা জাতীয় প্রেস ক্লাব পর্যন্ত ‘নিরব’ পদযাত্রায় অংশ নেন।

‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’ স্লোগানের মাধ্যমে তারেক রহমান গোটা জাতিকে ‘উজ্জীবিত’ করেছেন দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘আপনারা এটাকে কে কীভাবে দেখেন জানি না। আমি এটাকে অত্যন্ত ফিলোসফিক্যালি দেখি যে সেই বাংলাদেশকে ফিরিয়ে দাও, টেক ব্যাক বাংলাদেশ।“

আইনজীবীদের মতো চিকিৎসক, প্রকৌশলী, শিক্ষকরা আলাদাভাবে ‘ফ্রন্ট গঠন’ করে আন্দোলনের সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেবে এমন আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘‘সবাই এখন এক জোট হতে হবে, প্রতিটি মানুষকে জোটবদ্ধ হতে হবে এবং জোট বেঁধে এক সাথে এদেরকে পরাজিত করতে হবে।”

‘কোথায় যাবে মানুষ’

মির্জা ফখরুলের অভিযোগ, ‘‘আমরা সবচেয়ে বেশি অসহায় বোধ করি ওই বিচার ব্যবস্থার কাছে, সবচেয়ে বেশি অসহায় বোধ করি যখন আমরা কোর্টে যাই। আমরা সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী। এদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় গণতান্ত্রিক নেতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজকে শুধুমাত্র ‘জুডিশিয়াল ফিয়ারের’ জন্যে তিনি এখনও গৃহবন্দি হয়ে আছেন। ইটস এ ক্রাইম। তাকে একটা সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় অন্যায়ভাবে সাজা দিয়েছে।

“কী দুঃখ-হতাশা কোথায় জানেন, নিম্ন আদালত সাজা দিল হাইকোর্ট তা বাড়িয়ে দিল। কী চমৎকার এবং সুপ্রিম কোর্ট সেটাকে বহাল রাখল। কোথায় যাব আমরা, কার কাছে যাবে?”

তিনি বলেন, ‘‘এই যে একটা মেয়ে খাদিজা সে একটা ইউটিউবের প্রোগ্রামের পেইজে অ্যাঙ্কর করেছে সেই অপরাধে তাকে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলা দিয়ে তুলে নিয়ে এসে ১০ মাস আটক করে রেখেছে। হাইকোর্ট জামিন দেওয়ার পর সুপ্রিম কোর্ট তা স্থগিত করেছে। কোথায় যাবে মানুষ।”

জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট এজে মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে ও সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গনি চৌধুরীর যৌথ সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক এজেডএম জাহিদ হোসেন, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলাম, অধ্যাপক সদরুল আমিন, অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, ইউনাইটেড লইয়ার্স ফ্রন্টের অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, জিয়া পরিষদের অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজী, এমএ আজিজ, আব্দুল হাই শিকদার, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের অধ্যাপক একেএম আজিজুল হক, অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনার, অধ্যাপক হারুন আল রশিদ, ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসললাম রিজু, ইউনির্ভাসিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এর অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী পরিষদের ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক জোটের আশরাফ উদ্দিন উজ্জ্বল, এগ্ররিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের অধ্যাপক জিকে মোস্তাফিজুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লুৎফর রহমান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিম বক্তব্য রাখেন।