শনিবার রাতে ঢাকার নিউ ইস্কাটন এলাকার একটি বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
Published : 15 Sep 2024, 03:00 PM
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় আদাবরে পোশাক শ্রমিক রুবেল হত্যা মামলায় সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের হেফাজতে পেয়েছে পুলিশ।
রোববার শুনানি শেষে এ আদেশ দেন ঢাকা মহানগর হাকিম ছানাউল্ল্যাহ।
এদিন আসামিকে আদালতে হাজির করে ৭ সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক আব্দুল মালেক। আর রিমান্ড আবেদন বাতিল চেয়ে আসামির জামিন আবেদন করেন আইনজীবী মোরশেদ হোসেন শাহীন।
শুনানিতে আইনজীবী শাহীন বলেন, “ঘটনার ১৭ দিন পর মামলাটি দায়ের করা হয়েছে, যেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলায় ফরহাদ হোসেনকে ৯০ নম্বর আসামি করা হয়েছে।
“অথচ তিনি এ ঘটনার সাথে কোনোভাবেই জড়িত নন এবং বিষয়টি সম্পর্কে কিছুই জানেন না। এ ঘটনার নির্দেশদাতা ও ইন্ধনদাতা হিসেবে তার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের প্রমাণ বা কোনো তথ্য রাষ্ট্রপক্ষ উপস্থাপন করতে পারেনি।”
তিনি বলেন, “জনাব ফরহাদ পারিবারিক ঐতিহ্যের কারণে রাজনীতিতে এসেছেন। তিনি তিনবার সংসদ সদস্য এবং দুইবার মন্ত্রী হয়েছেন। শুধুমাত্র সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভার সদস্য হওয়ার কারণে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাকে হয়রানি করতে মামলায় তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
“তাই তার রিমান্ডের কোনো যৌক্তিকতা নেই। আমি তার রিমান্ড বাতিল করে জামিনের আবেদন করছি।”
মেহেরপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেনকে শনিবার রাতে ঢাকার নিউ ইস্কাটন এলাকার একটি বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। ৫ অগাস্ট সরকার পতনের পর তার বিরুদ্ধে মেহেরপুর থানায় তিনটি এবং ঢাকার আদাবর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে।
এর মধ্যে আদাবরে গার্মেন্ট কর্মী রুবেল হত্যার ঘটনায় তার বাবা রফিকুল ইসলাম আদাবর থানায় মামলা করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, সেদিন আদাবরের রিংরোডে প্রতিবাদী মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন রুবেল। ওই সময় ‘আসামিদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নির্দেশ, প্ররোচনা, সাহায্য-সহযোগিতা ও প্রত্যক্ষ মদদে’ কেউ মিছিলে গুলি ছোড়ে।
তাতে রুবেলের বুকে ও পেটে গুলি লাগে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭ অগাস্ট হাসপাতালে মারা যান রুবেল।
ফরহাদ হোসেন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর গঠিত শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভায় পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এর আগের সরকারে একই মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রী ছিলেন তিনি।
গণ আন্দোলনের মুখে ৫ অগাস্ট দেশে ছেড়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। এরপর অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকে একে একে গ্রেপ্তার হতে থাকেন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ শীর্ষ পর্যায়ের নেতা ও প্রভাবশালী সংসদ সদস্যরা। এসব মন্ত্রী-এমপিদের নামে হত্যা মামলাই বেশি দায়ের করা হয়েছে।