বনানী কবরস্থান ও ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে বাধা পাওয়ার অভিযোগ।
Published : 03 Nov 2024, 08:31 PM
মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনাকারী স্বাধীন বাংলাদেশের প্রবাসী সরকারের চার নেতাকে মোমবাতি প্রজ্বালনের মাধ্যমে স্মরণ করেছেন ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা।
জাতীয় এই চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে তারা বাধার মুখে পড়ার অভিযোগও এনেছেন।
প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচএম কামারুজ্জামান ও অর্থমন্ত্রী ক্যাপ্টেন মনসুর আলীকে ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে হত্যা করা হয়। দিনটি স্মরণে এবার কোনো কর্মসূচি রাখেনি আওয়ামী লীগ।
এ দিনকে জেল হত্যা দিবস হিসেবে দীর্ঘ সময় ধরে পালন করে এসেছে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৫ অগাস্ট ক্ষমতাচ্যুত দলটি।
রোববার প্রথম প্রহরে জাতীয় চার নেতার স্মরণে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ কমিটির কয়েকজন নেতা ও ছাত্রলীগের সাবেক কয়েকজন মিলে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের (পুরাতন) মূল ফটকের সামনে মোমবাতি প্রজ্বালন করেন। এরপর দিনের বেলায় নেতাদের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে বাধার মুখে পড়ার অভিযোগ করেন তারা।
মোমবাতি প্রজ্বালনে অংশ নেওয়া আওয়ামী লীগের উপকমিটির সদস্য ও ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "মধ্যরাতে মোমবাতি প্রজ্বালন শেষে ভোরে বনানী কবরস্থানে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাতে গেলে পুলিশ ও ‘লাঠিয়াল বাহিনী’র বাধায় কবর জিয়ারত ও শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপনে ব্যর্থ হই।”
তিনি বলেন, “দীর্ঘ সময় চেষ্টা করেও আওয়ামী লীগের কেউ জাতীয় নেতাদের কবরস্থানে প্রবেশ করতে পারেনি। ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে গিয়েও ফিরতে হয়েছে।"
ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক এনামুল হক প্রিন্স, সাবেক উপ-মানব সম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক কপিল হালদার সজল, সাবেক সহ-সভাপতি রুহুল আমিন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি এম এম নাজমুল হাসান, সাবেক সহ-সভাপতি হাসান আহম্মেদ খান, যুবনেতা জহির তালুকদারও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে রাতে বনানী কবরস্থানে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন আওয়ামী লীগের অন্য তিনজন নেতা।
তাদের একজন দলের কৃষি উপকমিটির সদস্য ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, রাতে পাহারা কিছুটা কমার পর কয়েকজন মিলে বনানী কবরস্থানে গিয়ে জাতীয় নেতাদের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
এসময় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের তথ্য উপকমিটির সদস্য মো. সঞ্জীব ইসলাম, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সহসভাপতি নাবেদ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
গত ৫ অগাস্ট প্রবল গণআন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়, দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা তার বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে ভারতে উড়ে যান। এরপর দলের শীর্ষ নেতা, সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্যরাও যান আত্মগোপনে। পরে তাদের মধ্যে অনেকেই গ্রেপ্তার হয়েছেন। গ্রেপ্তাররা আন্দোলনে প্রাণহানির ঘটনায় করা মামলার আসামি হয়েছেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনা ‘গণহত্যার’ মামলাতেও নাম আছে অনেকের।