ব্যাংকের ভগ্নস্বাস্থ্য ও প্রতিকার

রাজনৈতিক বা ব্যক্তিগত সম্পর্কের ভিত্তিতে ঋণ দেয়া দুর্ভাগ্যজনক, কিন্তু দেশে এটিই সাধারণ চর্চা। ব্যাংকিং কমিশন করা হলে, যদি তা স্বাধীন না হয় এবং এসব প্রভাব থেকে মুক্ত হতে না পারে, তাহলে অর্থবহ সংস্কারের চেষ্টা বৃথা।

প্রণব মজুমদারপ্রণব মজুমদার
Published : 13 March 2024, 02:03 PM
Updated : 13 March 2024, 02:03 PM

ব্যাংককে বলা হয় অর্থনীতির চালিকাশক্তি। আমাদের অর্থনীতির এই চালিকাশক্তির প্রাণ যায় যায় অবস্থা— বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে তাই মনে হয়। যে তথ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রকাশ করেছে তাতে যে কেউ উদ্বিগ্ন না হয়ে পারবে না।  

ব্যাংকগুলোর অভিভাবক বাংলাদেশ ব্যাংক। জুন, ২০২৩ অবধি বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক সক্ষমতা বিভাগের তৈরি করা প্রতিবেদনে ব্যাংকগুলোর মধ্যে মাত্র ৮টি স্থানীয় ও ৮টি বিদেশি ব্যাংকের অবস্থা সন্তোষজনক বলা হয়েছে। অর্ধবার্ষিক আর্থিক কর্মদক্ষতার ভিত্তিতে স্বাস্থ্যসূচক প্রস্তুত করেছে বিভাগটি।

প্রতিবেদন বলছে ৪টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকসহ ৯টি ব্যাংকের অবস্থা খুবই নাজুক। এক কথায় ভঙ্গুর।  ব্যাংকগুলো হলো, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বেসিক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, পদ্মা, ন্যাশনাল ব্যাংক, এবি ব্যাংক এবং ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান। মূল্যায়িত ৫৪ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে ১২টির অবস্থা নাজুক, যার মধ্যে ৯টি ‘রেড জোনে’ চলে গেছে। ব্যাংকগুলোকে কর্মদক্ষতার ওপর তিনটি জোনে ভাগ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। লাল, হলুদ ও সবুজ ‘জোন’। সবুজ অঞ্চলে থাকা ১৬টি ব্যাংক কার্যক্রম ভালো। হলুদ অঞ্চল হলো ভালো-মন্দ মিলিয়ে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মতে, হলুদে অবস্থানরত ২৯টি ব্যাংকের স্বাস্থ্য ভালো ও দুর্বল। এ সংখ্যার মধ্যে ২টি রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক, ১৯টি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং ৮টি শরিয়াহভিত্তিক ইসলামী ব্যাণিজিক ব্যাংক। আর লাল তো রোগাক্রান্ত। মানে ভঙ্গুর।

বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলোর কার্যক্রম মূল্যায়ন করে থাকে ক্যামেল রেটিংয়ের ওপর ভিত্তি করে। ৫৪টি ব্যাংকের মূল্যায়ন বিবেচনায় মূলধনের পর্যাপ্ততা, সম্পদের গুণমান, আয়, ব্যবস্থাপনা, তারল্য মূলধন এবং বাজার ঝুঁকির সংবেদনশীলতাকে প্রাধ্যন্য দিয়েছে। প্রতিবেদনে নিয়ন্ত্রণকারী বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, লাল ৮টিকে বিশেষ নজর এবং হলুদ অঞ্চলে থাকা ২৯টি ব্যাংককে তদারকি মনোযোগ দেওয়া জরুরি। ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৩ সালের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্যালোচনায় দেখা যায়, ৩৮টি ব্যাংকের অবনতি এবং ১৬টি ব্যাংকের অবস্থার উন্নতি হয়েছে।

ব্যাংকের মূল কাজ হলো গ্রাহকের আমানত সংগ্রহ করে শিল্পায়ন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রসারে সঠিক গ্রহীতাকে ঋণদান করা। দুই যুগে কি  উপযুক্ত উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী ঋণ পেয়েছে? প্রাপ্ত লাভ মানে মূলধনী মুনাফার (গেইন ট্যাক্স) ওপর করারোপ, নানা কর, মূসক, শুল্ক, পরিচালন খরচ এবং লুকায়িত খরচের (হিডেন চার্জ) জ্বালাতনে আমানত রেখে কজন ব্যাংক গ্রাহক নিশ্চিন্ত থেকেছে? সেবা কি পাচ্ছে গ্রাহক? ১ লাখ ৪৭ হাজার ৫৭০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ৩০ হাজার (২০২২ শুমারি) জনগোষ্ঠীর ছোট্ট একটি দেশে ৬৬টি ব্যাংক ও ৩৬টি অ-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান। আরো নাকি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান আসছে!

ব্যাংকগুলোর অবস্থা নিয়ে আরো একটি পরিসংখ্যান দেই। সেটাও বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে দেশের ব্যাংক খাতে মোট ঋণের স্থিতি ছিল ১৬ লাখ ১৭ হাজার ৬৮৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকাই খেলাপি ঋণ, যা মোট ঋণের ৯ শতাংশ। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে ৬৫ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা খেলাপি, যা বিতরণ করা মোট ঋণের শতকরা ২১ ভাগ। বেসরকারি খাতের বাণিজ্যিক ব্যাংকের ঋণে খেলাপির পরিমাণ ৭০ হাজার ৯৮১ কোটি টাকা, বিতরণকৃত ঋণের ৫ দশমিক ৯৩ শতাংশ। একই বছরে অর্থাৎ ২০২৩ সালে বিশেষায়িত ব্যাংক খেলাপি ঋণের দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে। খেলাপি ঋণের পরিমাণ এখানে ৫ হাজার ৬৬৯ কোটি  টাকা, খেলাপের শতকরা হার ১৩.৮৭। আর বিদেশি ব্যাংকে খেলাপি ঋণ ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা। খেলাপের হার ৪.৮২ শতাংশ। 

দেশের ব্যাংকবহির্ভূত মানে অ-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অবস্থাও ভালো নয়। পিপলস, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি লিমিটেড (বিআইএফসি), ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, পি কে হালদার সংশ্লিষ্ট এফএএস ফাইন্যান্স ও ফারইস্ট ফিনান্সের দুরাবস্থার চিত্র আমরা কম বেশি জানি। আগ্রাসী (এগ্রেসিভ) বিনিয়োগ করার দায় নিতে হয়েছে অনেক গ্রাহককে। সঞ্চয় খুইয়েছেন অনেকে। বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছিল, দেশের ব্যাংকবহির্ভূত দুর্বল আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি এখন ভালো প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণও খারাপ। ফলে এ খাতে খেলাপি ঋণ বাড়ছেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের জুন থেকে সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর খেলাপি ঋণ ১ হাজার ৭০৭ কোটি টাকা বেড়েছিল। গত সেপ্টেম্বর শেষে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ২১ হাজার ৬৫৮ কোটি টাকায়, যা ছিল এই খাতে বিতরণ করা মোট ঋণের ২৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানিজ এসোসিয়েশন (বিএলএফসিএ) চেয়ারম্যান তখন বলেছিলেন, অনেক কোম্পানি আগে খেলাপি ঋণের প্রকৃত তথ্য প্রকাশ না করার কারণে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে যায়। তথ্য ও উপাত্ত গোপন করার হেন মানসিকতার মতো দায়িত্বহীনতা আর বিএলএফসিএ চেয়ারম্যানের কি অসহায় উত্তর?

ঋণ কেন আদায় হয় না? যে ঋণ কখনোই ফেরত পাওয়া যাবে না তাদেরকে পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ ঋণ দেয় কেন? ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে উপযুক্ত উদ্যোক্তাদের কেন অগ্রাধিকার দেওয়া হয় না? কেন খেলাপিদের ছাড় দেয়া হয়? বাংলাদেশ ব্যাংকে আর্থিক গোয়েন্দা, অ্যান্টি মানি লন্ডারিং, পরিদর্শন ও তদারকি বিভাগ এবং শাখার অভাব নেই! তাদের নীতি এবং কার্যক্রমও কমাতে পারেনি খেলাপি ঋণ। ব্যাংক ব্যবস্থার উন্নয়নও দৃশ্যমান নয়।

আমাদের দেশে প্রতিষ্ঠানের অভাব নেই। অনিয়ম ও দুনীতি এবং সমস্যা নিরসনে জনস্বার্থে সরকারিভাবে অনেক প্রতিষ্ঠান জন্ম হয়, বেশ জাঁকজমকের সঙ্গে বড় বড় উদ্দেশ্য নিয়ে। কিন্তু কদিন পরে তা অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। মাথাভারী প্রশাসন তৈরি হয়। জনগণের টাকা বিনষ্ট করা হয়। রাষ্ট্রের অপচয় হয় অর্থ।

দেশের ব্যাংকগুলোতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে অনেকদিন থেকেই ব্যাংকিং কমিশন গঠন করার দাবি তোলা হচ্ছে। সকল খাতে পরোক্ষভাবে রাজনীতিকরণের ধারাবাহিকতায় কিভাবে হবে এ কমিশন স্বাধীন?

ড. মোহাম্মদ তারেক অর্থ সচিব থাকাকালে অর্থমন্ত্রীর জন্য প্রস্তাবিত ব্যাংকিং কমিশনের একটি ‘টার্মস অব রেফারেন্স’ খসড়া হয়েছিল। গণচীন, দক্ষিণ কোরিয়া ও ভারতের ব্যাংক ও মন্দঋণ সংস্কারের আলোকে একটি খসড়া তৈরি করা হয়। দেশের আর্থিক খাতের সংস্কার দীর্ঘদিন থেকে উপেক্ষিত। আমাদের বর্ধিষ্ণু খেলাপি ঋণ সম্পর্কে অনেক কিছু বলা হয়েছে। কিন্তু খেলাপি ঋণ কমানো যায়নি। অবশ্য আমাদের এ মানসিকতা এড়ানো উচিত হবে না যে খেলাপি ঋণ কেবল আমাদের দুর্বল সুশাসন কাঠামো ও প্রাতিষ্ঠানিক ঋণের ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীলতার ফল। রাজনৈতিক প্রভাব, দায়মুক্তির সংস্কৃতি এবং জবাবদিহি-স্বচ্ছতার ঘাটতি সবই আমাদের ব্যাংকিং খাতে সুশাসনে আঘাত করেছে। দেশের ব্যাংকিং খাতে গ্রহণযোগ্য মাত্রার চেয়ে অধিক সাধারণ ও বৃহৎ পরিসরে কেলেঙ্কারি ও লুটপাট হয়েছে।

রাজনৈতিক বা ব্যক্তিগত সম্পর্কের ভিত্তিতে ঋণ দেয়া দুর্ভাগ্যজনক, কিন্তু দেশে এটিই সাধারণ চর্চা। ব্যাংকিং কমিশন করা হলে, যদি তা স্বাধীন না হয় এবং এসব প্রভাব থেকে মুক্ত হতে না পারে, তাহলে অর্থবহ সংস্কারের চেষ্টা বৃথা।

ব্যাংকিং খাতে যেহেতু বেশ কিছু কাঠামোগত সমস্যা রয়েছে, সে ক্ষেত্রে ব্যাংকিং কমিশন একাই সবকিছু সমাধান করতে পারবে না তাও সত্য। সুশাসন সমস্যার সমাধানে ব্যক্তি খাতও গুরুত্বপূর্ণ অংশ। দুই দশক কিংবা তারও অধিক সময়ে লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যক্তি খাতের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর বেশির ভাগই রাজনৈতিক প্রণোদনা ও সম্পৃক্ততায় অনুমোদন পেয়েছে বলে সাবেক অর্থমন্ত্রী এম. এ মুহিতও বলেছিলেন। তাই এসব ব্যাংক উচ্চ খেলাপি ঋণ ও লোকসানের বোঝায় জর্জরিত হয়েছে তা দৃশ্যমান বাস্তবতা।

ব্যাংকিং খাতের বহুমুখী সমস্যার বাস্তবতায় নীতিনির্ধারকদের অবশ্যই দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। বর্ধিষ্ণু খেলাপি ঋণ ও ব্যাংকিং খাতে অনিয়ম ও অরাজকতার জন্য পরিস্থিতি উত্তরণে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) কবছর আগে যে ১০ দফা সুপারিশ করেছিল তা সঠিক। সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং সুস্থ ও নিরাপদ ব্যাংকিং ব্যবস্থা পরিচালনায় একটি স্বাধীন ব্যাংকিং কমিশন গঠন করার আহ্বান জানানো হয়েছিল ওই সব সুপারিশে।

সবল অর্থনীতির প্রয়োজনে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসতে হবে যে কোনভাবেই হোক। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর বড় বড় লুটপাটকারী খেলাপিদের নিয়োজিত সংস্থাগুলো ধরতে পারে না বা খুঁজে পায় না। কি হাস্যকর ব্যাপার! আর ফি বছর জাতীয় বাজেটে মূলধন সংকটে থাকা এসব ব্যাংককে হাজার হাজার কোটি টাকার তহবিল দেওয়া হয়; যা কিনা জনগণের করের টাকায়।

অর্থনীতির ছাত্র এবং এ বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতা থেকে আমি মনে করি খেলাপি ঋণ সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসা অতীব জরুরি। উত্তরণের পথও রয়েছে। প্রতিকারে যা যা পদক্ষেপ নেওয়া যায়—

১. অভিজ্ঞ ও নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের নিয়ে স্বাধীন ব্যাংক কমিশন গঠন করতে হবে।

২. ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে।

৩. পরিচালনা পর্ষদে নিরপেক্ষ পরিচালক পদে কোম্পানির চেনাজানা ব্যক্তির নিয়োগ পরিহার করতে হবে।

৪. ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দায়ের করা মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ব্যাংক কোম্পানি আইন অভিজ্ঞ বিচারকদের নিয়ে আলাদা অর্থ ঋণ আদালত গঠন করতে হবে।

৫. সরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পর্ষদে পরিচালক পদে শুধু অর্থনীতি, বাণিজ্য বিষয়ের অভিজ্ঞ এবং সাবেক ব্যাংকারদের নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

৬. ব্যাংক উদ্যোক্তা বা মালিকদের পারিবারিক বলয়ের মাত্রা কমাতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সমন্বিত ব্যবস্থা জরুরি। এক ব্যাংকের পরিচালককে অন্য ব্যাংক থেকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে ঋণদানের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বনে বাংলাদেশ ব্যাংককে কঠোর হতে হবে।

৭. খেলাপি ঋণ আদায়ে নির্বাচনের সময় প্রার্থীর ঋণ পুনতফশিলীকরণে উদার হলে চলবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবির (ঋণ তথ্য ব্যুরো) গোপনীয়তা রক্ষা কার্যকর করতে হবে। নিয়ন্ত্রক মক্কেলের প্রশাসক এটা মানতে হবে। বন্ধু হলে লেনদেন হবার সুযোগ থাকে, তাহলেই বিপদ।

৮. দুর্নীতি ও অনিয়ম রোধে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা যেমন অত্যাবশ্যক; তেমনি দেশী উদ্যোক্তা তৈরিতে মেধাবী শিক্ষিতদের প্রাধান্য দিতে হবে। সম্পদ জামানত নয় বরং উচ্চ শিক্ষার সনদ জমা রেখে প্রকল্প বাস্তবায়নে ঋণদান করতে হবে। কেননা, দেশ থেকে প্রচুর মেধা পাচার হয়ে যাচ্ছে।

৯. দেশ প্রেমের স্বার্থে দ্বৈত নাগরিকদের সুবিধা পর্যায়ক্রমে কমিয়ে আনতে হবে। অর্থ পাচারকারীদের শনাক্ত করে ঘরের টাকা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগী হতে হবে।

সময়ের মধ্যেই ব্যবস্থা নিতে হয়। বিলম্বিত হলে অপরাধীকে আর ধরা যায় না। প্রশ্রয় অর্থনীতির প্রাণশক্তি ব্যাংকের ক্ষতি করে তা তো আমরা দেখেই আসছি। কৃচ্ছতা সাধন উন্নয়নের প্রকৃত আলো দেখায়। মুক্ত বাজারের অনুশীলন করতে গিয়ে ভোগবাদকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। তাতে ব্যয় বাড়ে। আর তাতে অশৃঙ্খলিত হয় ব্যাংক ও আর্থিক খাতও।