রামনাথ বিশ্বাস একজন ভূপর্যটক ছিলেন। বাইসাইকেলে করে পৃথিবী ঘুরে বেড়িয়েছেন বটে, তবে তিনি সবচেয়ে বড় যে কাজটি করেছেন সেটি তার কালি-কলম দিয়ে। তার এই দুঃসাহসিক এবং অভিনব ভ্রমণপিয়াসু জীবনকে তিনি লিপিবদ্ধ করে গেছেন। বাংলা ভাষাভাষী তো নিশ্চয়ই, ভ্রমণকাহিনী সংখ্যার বিচারে পুরো ভারতবর্ষে আর কোনো পর্যটক তার ধারেকাছে নেই। ফলে, বাইসাইকেলে পৃথিবী ঘুরে বেড়ানোর সাথে সাথে তার যে বিষয়টি আমাকে বেশি মুগ্ধ করে সেটি তার এই লিখে যাওয়ার ক্ষমতা।
বাংলা সাহিত্যে অনেক ভ্রমণকাহিনী লেখককে আমরা চিনি, আমার নিজেরও বেশকিছু ভ্রমণবিষয়ক বই আছে। কিন্তু রামনাথ বিশ্বাস যেখানে আলাদা সেটি হলো তিনি ছিলেন একেবারেই সাধারণ একজন পর্যটক। যার কাছে ছিল না আড়ম্বরপূর্ণ উচ্চশিক্ষা, প্রয়োজনের চেয়ে খুব বেশি অর্থও তিনি ভ্রমণের সময় সাথে নিতেন না। তার যেটি ছিল সেটি হচ্ছে অসম্ভব সাহস আর অসীম কৌতূহল।
আর এর জোরেই হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের বিদ্যাভূষণ পাড়ার ছেলে রামনাথ বিশ্বাস বাইসাইকেল নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন আফগানিস্তান, ইরান, ইরাক, সিরিয়া, লেবানন, তুরস্ক, বুলগেরিয়া, যুগোস্লাভিয়া, হাঙ্গেরি, অস্ট্রিয়া, চেকোস্লোভাকিয়া, জার্মানি, হল্যান্ড, বেলজিয়াম, ফ্রান্স কিংবা ব্রিটেন। চষে বেড়িয়েছেন আফ্রিকা মহাদেশ।
রামনাথ বিশ্বাসের ভ্রমণকাহিনী লেখার অসাধারণ হাতকে আমি আবিষ্কার করতে পারি, তার তরুণ তুর্কী বইটি পড়ে। ততদিনে অটোমান সাম্রাজ্য থেকে বেরিয়ে কামাল আতাতুর্ক সেখানে বিপ্লব করে ফেলেছেন। রামনাথ বিশ্বাসের ওই ভ্রমণকাহিনী পড়ে আমার মনে হয়েছে আমি যেন এক নতুন তুরস্ককে দেখছি।
রামনাথ বিশ্বাসের সবচেয়ে বড় যে বিষয়টি ছিল সেটি হচ্ছে তার মুক্তমন, মুক্ত একটি চিন্তা ছিল তার মধ্যে। আবার তার মধ্যে ছিল অসম্ভব দেশপ্রেম। সারা পৃথিবী ঘোরার পরও তিনি কিন্তু নিজের গ্রামকেই তার দুনিয়া বলতেন। এমন বিরল মানুষ খুব কম পাওয়া যায়।
অথচ কী পরিতাপের কথা, এমন একজন মানুষকেই আমরা মনেই রাখতে পারিনি। আমাদের তরুণ প্রজন্ম রামনাথ বিশ্বাস কে চেনে না, তার কর্মের কথা জানে না। এতটুকুতেই আমাদের অধঃগমন থামেনি। যে রামনাথ বিশ্বাসকে পশ্চিমবঙ্গে শ্রদ্ধায় স্মরণ করে তার নামে রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে সেই রামনাথ বিশ্বাসের শেষ যে স্মৃতিটুকু আমাদের দেশে অবশিষ্ট ছিল সেটিও জবরদখল হয়ে গেছে। মন্দির ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট রাখা হয়নি সেখানে।
আমরা ভুলে গেছি রামনাথ বিশ্বাস আমাদের এই বাংলার মাটির সন্তান, তার কৃতিত্ব এই মাটির। দেশভাগের দাঙ্গায় প্রচণ্ড অনিচ্ছা নিয়ে কলকাতায় পাড়ি জমানো মানুষটিকে আমরা একেবারেই ভিনদেশি জ্ঞান করছি।
রামনাথ বিশ্বাসের মতো মানুষেরা হন বহির্মুখী, মুক্তমনা। শিল্প-সাহিত্য, জ্ঞানচর্চার সাথে থাকেন নির্মোহ, নির্লিপ্ত। এটিই বোধহয় তাদের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা। আর সেই লোকটি যদি সংখ্যালঘু হন তাহলে তো কথাই নেই। এই দেশের মৌলবাদী অপগোষ্ঠীর সবচেয়ে সহজ শিকার তারা, তাদের উচ্ছেদ করে তাদের সম্পদ ভোগদখল করে দেশকে জ্ঞানের আলোশূন্য এক অন্ধকার জাতিতে পরিণত করাই তাদের লক্ষ্য।
ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা দেশটা স্বাধীন করলাম। স্বাধীনতার জন্য সরকারি-বেসরকারি হিসেবে দুই থেকে পাঁচ লাখ নারী পাশবিক নির্যাতনের শিকার হলেন, এক কোটি মানুষ দেশান্তরী হলেন। অথচ, আমাদের দুর্ভাগ্য হচ্ছে, এই স্বাধীনতার মূল দাবি ধর্মনিরপেক্ষ সাম্যের বাংলাদেশ আমরা বাস্তবায়ন করতে পারিনি। আমাদের বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি দুর্ভাগ্যজনক অধ্যায় হচ্ছে, ১৯৭৫-এ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করার পর থেকে এই দেশকে শাসন করেছে মৌলবাদী, স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি, যাদেরকে আমরা পাকিস্তানপন্থী বলি। এরা কখনো বাংলাদেশ চায়নি, চেয়েছে পাকিস্তান। ধর্মনিরপেক্ষতার কোনো কথাই তারা শুনতে রাজি নয়। তারা ক্ষমতায় এসে সংবিধানকে পাকিস্তানিকরণ করেছে। রাজনীতি, সমাজ-সংস্কৃতি, শিক্ষা– সব জায়গায় মৌলবাদী রাজনীতিকরণ করেছে, দেশে পাকিস্তানি ধারা তৈরি করেছে। তথাকথিত ইসলামীকরণের মাধ্যমে তারা বাংলাদেশের মানুষকে ধর্মনিরপেক্ষতা ও মুক্তচিন্তা থেকে সরিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা চালিয়েছে, চালিয়ে যাচ্ছে। একাত্তরে বুদ্ধিজীবীদের হত্যার মতোই এরা মুক্তচিন্তা ও মুক্তচিন্তকদের দমন করতে চায়, তাদের স্মৃতি মুছে দিতে চায়। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষকে তারা এদেশ ছাড়তে বাধ্য করছে, তাদের ওপর হামলা চালাচ্ছে, ঘরবাড়িতে আগুন দিচ্ছে, দখল-লুটপাট করেছে। ১৯৪৭-এর পর থেকে এই কাজগুলো ধারাবাহিকভাবে আমরা দেখছি। ‘একটু ভাল থাকার জন্য, শান্তিতে থাকার জন্য’ হিন্দুরা দেশ ছেড়ে ভারতে যাচ্ছে। আমাদের এত সরল ভাবনার সুযোগ নেই। হিন্দুরা ভাল থাকার জন্য সেখানে যাচ্ছে না। তারা যাচ্ছে, কারণ তারা বাংলাদেশে ভাল থাকতে পারছে না। যেমনটা রামনাথ বিশ্বাস পাকিস্তানে পারেননি।
বাংলাদেশ রাষ্ট্রটির যে বহুত্ববাদিতার মশাল নিয়ে জন্ম হয়েছিল তা আজ হুমকির মুখে। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি থেকে আমরা সরকারকে বহুবার বলেছি একটি জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন করতে। সংখ্যালঘুদের ওপর যে অত্যাচার-নির্যাতন হচ্ছে, তারা যে হারিয়ে যাচ্ছে, বিতাড়িত হচ্ছে তার জন্য সংখ্যালঘু নির্যাতন আইনসহ বেশকিছু বিভাগীয় উদ্যোগ নেয়ার জন্যও বলেছি। এগুলো এখনও হয়নি, সামনে হয়তো হবে। কিন্তু, সবার আগে আমাদের মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে। দেশের অনেক মানুষের মাথায় এখনও আফগানিস্তান, পাকিস্তানের মতো ধারনা ঘোরে। যেখানে লেখক, শিল্পী, বুদ্ধিজীবীর কোনো জায়গা নেই, যেখানো মৌলিক শিক্ষার বিকাশের জায়গা নেই। আছে সংখ্যালঘু বিদ্বেষ, মুক্তচিন্তার প্রতি চরম অনীহার মনোভাব।
রামনাথ বিশ্বাসসের বাড়ি দখল করে নেয়া, শিক্ষকের গলায় জুতার মালা দেয়া, কুমিল্লার ঘটনার পর দেশব্যাপী তাণ্ডবসহ সারাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মসংসশ্লিষ্ট ঘটনার পেছনের রাজনৈতিক কারণ যদি আমরা খুঁজতে যাই তবে এর বাইরে আর কোনো তত্ত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে বলে মনে হয় না। একাত্তরের পরাজিত শক্তি ধর্মের নামে দুর্বলের ওপর শোষণ, জবরদখল, হামলা-ত্রাস অব্যাহত রেখেছে। ২০০১ সালের নির্বাচন কিংবা ২০১৩ সালের হেফাজতের ঘটনায় আমরা দেখেছি দেশকে হিন্দুশূন্য করে ফেলার এক প্রবল চেষ্টা, মুক্তিচিন্তার লেখক-ব্লগারদের ওপর আক্রমণ। সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা, বাঙালি জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র এসব চলে যাওয়ায় একাত্তরে যারা বাংলাদেশ চায়নি তারা রাজনীতিতে এসেছে এবং মানুষের মনজগতকে নিয়ন্ত্রণ করতে উঠেপড়ে লেগেছে। কিছুক্ষেত্রে তারা সফলও হয়েছে, এটি অস্বীকার করার জো নেই। কিছু মানুষ তাদের মতো করেই ভাবে, আর এমন ভাবনার মানুষেরাই সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলা, লুটতরাজ চালায়। তাদের সম্পদকে সহজলভ্য শিকার বানিয়ে ফেলে।
দুর্ভাগ্য হচ্ছে, দীর্ঘকাল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার ফলে জামায়াতে ইসলামী থেকে শুরু করে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক চিন্তাধারার লোকজন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে অনুপ্রবেশ করছে। তাদের বেশিরভাগ তৃণমূলে নানা পদ পাচ্ছে, কেউ কেউ আওয়ামী লীগের দলীয় পরিচয়, মনোনয়ন ইত্যাদি নিয়ে ক্ষমতাও অর্জন করছে। এখানে লক্ষ্যণীয় যে, অনুপ্রবেশকারীদের রাজনৈতিক আদর্শটি ঠিক বঙ্গবন্ধুর ধর্মনিরপেক্ষ সাম্যের আদর্শ নয়, তারা তাদের নিজস্ব কিছু এজেন্ডা নিয়ে আওয়ামী লীগে আসে। তাদের এজেন্ডা হলো, বাংলাদেশকে হিন্দুশূন্য করে পাকিস্তান-আফগানিস্তান এর মতো ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করা।
পাকিস্তানপন্থীরা কখনো আওয়ামী লীগ হবে না। কারণ, আওয়ামী লীগ পাকিস্তানকে ভেঙ্গেছে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে পাকিস্তান থেকে পূর্বপাকিস্তান আলাদা হয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ হয়েছে। এই পাকিস্তান ভাঙাটা তারা কখনোই মেনে নিতে পারেনি, পারবেও না।
সম্প্রতি তারা এর প্রতিশোধ নিতে আরও মরিয়া হয়ে উঠেছে, আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করে ক্ষমতার কাছাকাছি থেকে তারা তাদের এসব স্বার্থ হাসিল করছে। ফলে আমরা প্রায়ই দেখছি, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন-লুটপাটের তালিকায় আওয়ামী পরিচয়ের লোকজনের নাম উঠে আসছে। রামনাথ বিশ্বাসের ভূমি জবরদখল করা ওয়াহেদও আলবদর পরিবার থেকে এসে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছিল বলে আমরা গণমাধ্যমসূত্রে জানতে পেরেছি। এভাবেই তারা ধীরে ধীরে আওয়ামী লীগের শরীর থেকেও ধর্মনিরপেক্ষতার ছাপটি তুলে ফেলতে চাইছে।
আমি বিশ্বাস, এই অন্ধকার থেকে আমাদের তুলে আনতে আলোকবর্তিকা নিয়ে দাঁড়াবে আমাদের তরুণেরা। তরুণ প্রজন্মের জন্য সব দেশেই কিছু রোল মডেল দরকার হয়। শিল্প-সাহিত্য-রাজনীতি সব ক্ষেত্রেই নায়কের দরকার হয়। তরুণদের সামনে যদি কোনো নায়ক না থাকে, উদাহরণ না থাকে তাহলে তারা আগ্রহ হারিয়ে ফেলে, তাদের ভেতরের বারুদ কমে যায়। সেই সুযোগ ফাঁক খুঁজে নেয় মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ ধ্বংসকামীতা।
তাই তরুণদের হতে হবে মুক্তমনের অধিকারী, তাদের ঘুরতে হবে, অনেক জানতে হবে। সে যত ভ্রমণ করবে তার ততো জ্ঞান বাড়বে। পর্যটনের ক্ষেত্রে আমি মনে করি, রামনাথ বিশ্বাসের মতো এমন বিস্তৃত অভিজ্ঞতা আর বিচিত্র কর্মের ভাণ্ডার বাংলায় কেনো গোটা ভারতবর্ষে আর কারও নেই। আমার ইচ্ছে ছিল আমি অনেক দেশ ঘুরব, রামনাথ বিশ্বাসের মতো পর্যটকদের ভ্রমণকাহিনী পড়েই আমার মধ্যে ভ্রমণের নেশা আসে।
ইতিহাসের প্রয়োজনেই রামনাথ বিশ্বাসের স্মৃতি সংরক্ষণ করা দরকার। এটি এভাবে বেদখল হতে দেয়া যাবে না। এটি সরকারি খাস জমি। সরকার চাইলেই তা নিজেদের আওতায় নিয়ে আসতে পারে। সেই সাথে ট্রাভেল রাইটার্স এসোসিয়েশন এবং নাগরিক সমাজের তার স্মৃতি রক্ষার্থে যে বাইসাইকেল জাদুঘর এবং পাঠাগার করার দাবি জানিয়েছেন সেটিরও প্রতিফলন করাতে পারে। এটি এত কঠিন কাজ না। হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক চাইলেই এটি সংরক্ষণ করতে পারেন।
এর আগেও খুলনায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শ্বশুরবাড়ি সংরক্ষণের ক্ষেত্রে আমরা স্থানীয় প্রশাসন থেকেই উদ্যোগ দেখেছি। রামনাথ বিশ্বাসের বাড়ি সংরক্ষণ করে সেখানে একটি জাদুঘর করা, একটি পাঠাগার গড়ে তোলা এগুলো খুবই মহতী দাবি। এর জন্য খুব বড় বাজেটেরও দরকার হবে না, যেটি দরকার হবে সেটি হচ্ছে সদিচ্ছা। আমি মনে করি, সরকার এবং নাগরিক সমাজ একত্রে কাজ করলে খুব সহজেই রামনাথ বিশ্বাসের বাড়িটি পুনরুদ্ধার এবং সংরক্ষণ করা সম্ভব।
রামনাথ বিশ্বাসের মতো এমন আরও যেসব কৃতি গুণীজন এদেশ থেকে দেশভাগের পরে ভারতে চলে গেছেন তাদের সবার স্মৃতি আমাদের দায়িত্ব নিয়ে তরুণ প্রজন্মের জন্য সংরক্ষণ করা উচিত। কেননা, তারা আমাদেরই পুর্বপুরুষ, এই মাটিরই সন্তান। এখানেই তারা জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিল্প-সাহিত্যের চর্চা করে গেছেন। তাদের স্মৃতি যদি আমরা আমাদের তরুণ প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে পারি, তবে তাদের মধ্যে অনুপ্রেরণা জাগবে, আমাদের ভবিষ্যত সমৃদ্ধ হবে। আর যদি আমরা সেটি না পারি তবে জাতি হিসেবে আমরা হয়ে পড়বো অনুর্বর এবং হতভাগা। দুই দেশের অসংখ্য মানুষ যারা নানা খাতে, নানা শাখায় ছিলেন অসম্ভব জ্ঞানী এবং প্রখর, যারা তাদের কীর্তি দিয়ে আমাদের এই সভ্যতাকে সমৃদ্ধ করেছেন তাদের স্মৃতি এবং কর্ম সংরক্ষণে দুই দেশের সরকারের উদ্যোগী হয়ে একত্রে কাজ করা উচিত।