Published : 11 Mar 2012, 09:07 PM
আমাদের শিক্ষাঙ্গন এই মুহূর্তে রাহুগ্রস্ত। 'একে একে নিভিছে দেউটি' – একের পর এক বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজ বন্ধ হচ্ছে বা হতে চলেছে কিংবা না হলেও নিঃশ্বাস বন্ধ রেখে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে। শিক্ষার সামগ্রিক পরিবেশ হুমকির মুখে পড়েছে। এই সময়টাও বড় অস্থির! কোনোকিছুই ঠিক মত হচ্ছে না, যাও বা হচ্ছে তাও শেষ মুহূর্তে হুটপাট করে – এতে সমস্যা আরো বাড়ছে। শিক্ষকতার পেশাও রাহুমুক্ত নয়, গবেষণার পরিবেশ ও প্রণোদনা যথার্থ ও যথেষ্ট নেই। এডোয়ার্ড সাইদের ভাষায় বিশ্ববিদ্যালয় হল আমাদের সর্বশেষ আশা-ভরশার স্থল – দ্য লাস্ট রিমেইনিং ইউটোপিয়া। ইউটোপিয়ার এই শেষ জায়গাটা হারিয়ে গেলে আমাদের মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার জায়গাটাও আমরা হারাবো। শিক্ষকদেরও একটা চাওয়া-পাওয়ার হিসাব আছে, তাঁরা শুধু বল্কল পরে হাতে মুসা নবীর লাঠি নিয়ে ঘুরে ঘুরে জ্ঞান বিতরণ করবেন আর সামরিক-বেসামরিক আমলারা পাজেরো জিপে চড়ে পাখি দেখতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিস্তরঙ্গ জলাশয়ে পিকনিক করবেন – সেইসব উপনিবেশ-পূর্ব বা ঔপনিবেশিক সময় আর নেই। আমার সামান্য একযুগের অভিজ্ঞতা দিয়ে আমি শিক্ষাজগৎ থেকে কী শিখেছি কী দেখেছি তার এক সালতামামি তুলে ধরছি।
২০০০ সালের ১৯শে জানুয়ারি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগে আমি প্রভাষক হিসেবে যোগদান করি। সেই সুবাদে ২০১২ সালে আমি শিক্ষকতা পেশায় একযুগ পার করলাম। কী শিখেছি এই একযুগে? কী দেখেছি? কতটুকু শেখাতে পেরেছি? একযুগ পর আয়নায় নিজের চেহারা দেখা যাক।
এই একযুগে যতটুকু শিখিয়েছি তার থেকে শিখেছি অনেক বেশী। এই সময়েই আমি মাস্টার্স (২০০২) এবং পিএইচডি (২০০৮) শেষ করি। শিক্ষকতা কীভাবে করতে হয় সেটাও শিখেছি আমারই সরাসরি শিক্ষকদের কাছে। যাঁরা একসময়ে ব্ল্যাকবোর্ডে আঁক কষে এঞ্জিনিয়ারিং শিখিয়েছেন, তাঁরাই শিখিয়েছেন শিক্ষকতার পেশায় কী করতে হয় আর কী করতে হয় না। বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিখেছি কীভাবে গবেষণা করতে হয়, কীভাবে মাথা খাটাতে হয়, কীভাবে পাবলিশ করতে হয়, কীভাবে প্রেজেন্টেশন দিতে হয়। কাজেই শেখার পাল্লাটা ভারী বৈকি!
সত্যি বলতে কি, শ্রেণীকক্ষেও শেখা যায়। কী বলা যায় আর কী বলা যায় না তার যে সুক্ষ্ম ফাঁক সেটা অভিজ্ঞতা থেকে শিখে নিতে হয়েছে। কীভাবে অনুপ্রেরণা দেয়া যায়, কীভাবে বকুনি দেয়া যায় এবং কতখানি দেওয়া যায়, সেটাও শেখার বিষয়। আজকের দুনিয়ায় সদাব্যস্ত শিক্ষার্থীদের দিয়ে সামাজিক আন্দোলন-জাতীয় (পড়ুন ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো) কাজ করানো যে কত কঠিন সেটা ভুক্তভোগীমাত্রই জানেন। আমি দীর্ঘদিন ধরে বুয়েটের বিজ্ঞান ও সাহিত্য ক্লাবের কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। একাজের বাধাগুলো আমি খুব টের পাই (অন্তত বুয়েটে)। তবুও জানি ও মানি, শেষতক ছাত্র-ছাত্রীরাই পারবে। তাই হতাশার বিপরীতে আশা রাখি।
নিয়মিত পাঠক্রমের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবা খুবই জরুরি। একথা বিশেষভাবে প্রযোজ্য বুয়েটের মতো বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের জন্য। অতিমাত্রায় বিশেষায়িত বিষয় পাঠের চাপ মানবিক স্বাস্থ্যের জন্য মোটেই উপযোগী নয়। এতে মন সঙ্কীর্ণ হয়। আজকের অস্থির সময়ের অস্থির মনকে শান্তির বাণী দেয় না কোয়ান্টাম মেকানিক্স কিংবা বেসিক ইলেকট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং। সাহিত্য ও সমাজ পাঠের খুবই দরকার সংকটময় মুহুর্তে মনোজগতকে সুস্থির রাখতে। মনের জগতে এই খোলা হাওয়া আনা যায় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে। সামাজিক কর্মকান্ড, স্বেচ্ছাসেবা, ক্লাব অ্যাকটিভিটি, সাহিত্য পাঠ, অলিম্পয়াড বাইরের মানুষের সাথে মিশতে সাহায্য করে। বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক বিভাগ থাকে, একেক বিভাগের লক্ষ্যমাত্রা একেক রকম। ফলে বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে সামাজিক যোগাযোগের যে ক্ষেত্রটি অজানা থেকেই তৈরি হয়, ছোট বিশ্ববিদ্যালয়ে সেই সুযোগটা থাকে না। একে তৈরি করতে হয়। এজন্য সমাজ-সাহিত্য পাঠ জরুরি, কিংবা যদি কোর্স-লোড বেশী হয়ে যায়, তবে স্বেচ্ছাসেবা বাধ্যতামূলক করা যেতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয় হবে প্রকৃত শিক্ষার আকর। 'চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির'-এই বীজমন্ত্র হওয়া উচিত সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের। আমরা কি সেটা করতে পেরেছি? আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্বজ্ঞাবান শিক্ষক কমে যাচ্ছে, বাড়ছে প্রফেশনালদের সংখ্যা, বাড়ছে 'পাবলিকশনের' প্রতি মোহান্ধ ঝোঁক। সারাবিশ্বেই এই ট্রেন্ড লক্ষনীয়। 'পাবলিশ, অর পেরিশ'- এই বীজমন্ত্র মাথায় রেখে শিক্ষাদানের মূলকাজ বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। গবেষণাও করতে হবে, আবার শিক্ষাদানও করতে হবে, নতুন শিক্ষার উৎপাদনের পাশাপাশি তাকে ছড়িয়ে দেয়াও জরুরি। শিক্ষার উৎপাদনে আমরা কতটা সফল, সেটা সকল শিক্ষকই ভেবে দেখতে পারেন। পশ্চিমবঙ্গে একটা পিএইচডি ছাত্রের ভাতা প্রায় ২০,০০০ রূপি, সেখানে আমরা কত দিই? উচ্চশিক্ষা আর গবেষণা হবে কোত্থেকে টাকা না দিলে? একইকথা প্রযোজ্য শিক্ষকদের বেতনে, আইআইটি কানপুরের এক জ্যেষ্ঠ শিক্ষক (সহযোগী প্রফেসর) আমাকে বলেছেন তাঁর বেতনের কথা – যা প্রায় লাখ ছুঁইছুঁই। একলক্ষ রূপি! আর আমি পাই সাকুল্যে চল্লিশ হাজার! ঢাকার রাস্তায় এই টাকায় কীভাবে চলবে, যেখানে অকটেনের দাম লিটারপ্রতি ৯৪ টাকা!
শীতের পাখির মতো ডিসেম্বর মাসে প্রবাসীদের আনাগোনা বেড়ে যায়, আর তাদের সাথে কথোপকথনে প্রায়শই শোনা যায়- 'আপনারা আর রিসার্চ করেন না'। তারা কি একটু দয়া করে মাসকাবারি হিসাবটা করে দেখবেন, ডলারে নয় টাকার হিসাবে? অন্তর্জালে পত্রপত্রিকা পড়ে 'ই-কনসেপ্ট' বাদ দিয়ে একটু ধরার ধূলিতে নামেন ভাই, দেখেন রৌদ্রধূলোর স্বাদ কেমন! বিদেশে একজন স্টার্ট-আপ অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর রিসার্চ শুরু করতে কিছু টাকা-পয়সা পান। একজন ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রাজুয়েট যেখানে পাশ করেই পয়ত্রিশ হাজার টাকা বেতন পাচ্ছে, সে কি বিনাপয়সায় বা নামমাত্র অর্থের বিনিময়ে গবেষণা করতে রাজী হবে? শিক্ষা ও গবেষণায় জিডিপির একটা বড় অংশ যতদিন না ব্যয়িত হবে ততোদিন গবেষণার উনতা ঘুচবে না। 'শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড'- কাজেই শিক্ষায় ব্যয় করব দুই টাকা আর মেরুদন্ডের নিরাপত্তায় ব্যয়িত হবে বাকি আটানব্বই টাকা – এতো শুভঙ্করের ফাঁকি!
২০০২ সালে, অর্থাৎ আজ থেকে এক দশক আগে, আমি পদোন্নতি পেয়ে সহকারী প্রফেসর হই। সেটাই অদ্যাবধি আমার একমাত্র ও সর্বশেষ পদোন্নতি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অদ্ভূত সব নিয়ম-কানুনের বেড়াজালে শিক্ষকদের পদায়নে এরকম বহু অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ৬ বছর শিক্ষাছুটি ও ৩ বছর 'অ্যাকটিভ সার্ভিস' শেষ করেও পদের অভাবে আমার পদোন্নতি আটকে আছে। 'শিক্ষাছুটিকে' অন্য প্রায় সকল বিশ্ববিদ্যালয়েই আমলে নিলেও বুয়েটে সেটা কেবলই 'ছুটি' হিসেবে গণ্য – যেন বিদেশে বসে ঐ ছুটিতে ঘাস কেটে বিমলানন্দ ভোগ করেছি আমরা। ফলে পিএইচডি-ধারী উত্তর-আমেরিকা-ফেরতদের হয়েছে ডাবল ক্ষতি। উচ্চশিক্ষাজনিত শ্রম 'ছুটি' হিসেবে বিবেচ্য, সেই ছুটি আবার 'যোগ'ও হবে না। বাহ্, চমৎকার আয়োজন! এরকমই বিড়ম্বনার স্বীকার আরো অনেকে। জানি একজন শিক্ষকের কথা, যিনি ৯ বছর ধরেই প্রভাষক। পদ নেই, তাই পদোন্নতিও নেই। অধিকাংশ প্রফেসরের কাছেই শুনেছি ধারাবাহিক বঞ্চনার কাহিনী। এমনটা শুনলে কিন্তু সত্যিই প্রতীতি হয় যে, একেবারে গোড়ায় কোথাও ঘুণ ধরেছে। এই মেঘাচ্ছন্ন বিষাদময় পরিবেশ কখনোই সুস্থ স্বাস্থ্যকর নয়। উচ্চশিক্ষার পরিবেশ এরকম তো হবার নয়! তাছাড়া আমরা বিদেশ-ফেরত ডিগ্রিধারীদেরই বা কী বার্তা দিচ্ছি? ভাবটা এমন, দেশে ফিরলেই শিক্ষাছুটির প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে বাকি জীবন!
এই মুহূর্তে শিক্ষাঙ্গন রাহুগ্রস্ত। সারাদেশের প্রায় সবকটি বিশ্ববিদ্যালয় অস্থির-সন্ত্রস্ত-প্রতিবাদী এবং গুমরে চলেছে। কয়েক হপ্তা আগে সুযোগ ঘটেছিল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় এবং নোয়াখালি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সাথে কথোপকথনের। সেখানেও 'সোনার ছেলেদের' কীর্তিকলাপ শোনা গেল! সত্যি বলতে কি, এই সোনাদের দিনে সোনার ছেলেদের কার্যকলাপ দেশের সমস্ত শিক্ষাঙ্গনে থাবা ও নখর বসিয়েছে। সেইসব রক্তঝরা ক্ষত আমরা সংবাদপত্রে দেখি, আমার নিজের বিশ্ববিদ্যালয়েও দেখছি। কিন্তু শিক্ষাঙ্গন কেন?
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে একেকটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ মনে হতে পারে। আমরা ধরেই নেই, যেনবা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীরের ওপারে আছে শ্বাপদসঙ্কুল বনভূমি, আর প্রাচীরের ভেতরে যেন কল্পনার রামরাজ্য, যেখানে শুধু পাপহীন মালাইকাত এবং নিষ্পাপ হুর-গেলমানেরা খেলা করে। এই জাদুবাস্তবতা শুধু কল্পনাতেই ভালো লাগে। বাস্তবে সমাজ-বাস্তবতার রূঢ় হাতছানি কল্পনার রঙিন ফানুসকে মুহূর্তে মাটির ধূলায় টেনে আনে। সমাজের বাইরে মানুষ নয় – সে শিক্ষকই হোক কিংবা ব্যুরোক্র্যাট কিংবা রিসার্চ-স্কলার। বৃহত্তর সমাজের যে ট্রেন্ড সেটা কিন্তু ক্ষুদ্র সমাজেও পরিলক্ষিত হয়। এই সময়ে আমাদের সমাজে আমি দারুন অস্থিরতা অনুভব করি। বিশেষ করে, তরুণ প্রজন্ম খুব অস্থির, যা-চাই তা তক্ষুনি চাই। ধৈর্য নাই, চাহিদা পূরণের জন্য শ্রমের যে দরকার তার জন্য কোনো উদ্যম নাই, সবই রেডিমেড চাই। রেডিমেড গার্মেন্ট, রেডিমেড ডিগ্রি, রেডিমেড চাকরি, রেডিমেড অর্থ – সবই রেডিমেড। এই রেডিমেডের স্বপ্নে বিভোর এক শ্রেণীর তরুণ দিশেহারা হয়ে দুর্বৃত্তদের খপ্পরে গিয়ে পড়ছে। দুর্বৃত্তায়নের এই বৃত্তে শুধু দুটো পরিণতি হয় – মরো নয়ত জেতো। এইভাবে তরুণেরা রাজনৈতিক দুর্বৃত্তদের খপ্পরে গিয়ে পড়ে। রেডিক্যাশের মোহে এই বিষচক্র দক্ষতার সাথে তরুণদের ব্যবহার করে, অনেক ক্ষেত্রে মগজ-ধোলাইও চলে সুন্দরভাবে। অন্যদিকে আকাশ-সংস্কৃতির প্রভাবেও কিশোরদের মধ্যেও অপরাধপ্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সমাজে মানবিক গুণাবলিরও অভাব দেখা যায়। ডাকাত-সন্দেহে জ্যান্ত মানুষ পিটিয়ে মেরে ফেলা কিংবা বিপক্ষদলের ছাত্রকে ধরে এনে নির্মম পেটানোর পর হত্যা, অথবা ওপর থেকে জ্যান্ত মানুষ ফেলে দেওয়া – এগুলো করবার জন্য যে মানসিক ও স্নায়বিক সামর্থ্য দরকার সেটাই বা আসে কোত্থেকে? কোথায় যেন একটা সুস্থতার অভাব তৈরি হয়েছে।
মনোজগতের এই ব্যাপারগুলো এখন আর উড়িয়ে দেবার উপায় নেই। সমাজবিজ্ঞানী আর মনস্তাত্ত্বিকদের একত্রে বসিয়ে শিক্ষাক্রমে এই ব্যাপারগুলোর সম্পৃক্তি কীভাবে করা যায় সেটা ভাবা দরকার। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের গর্বের জায়গাগুলো, আমাদের ঐতিহ্যের জায়গাগুলো আমরা একে একে হারিয়ে ফেলব। এই দেশের, এই মাটির সন্তান হিসেবে সেটা কি আমরা হতে দিতে পারি? শিক্ষার জায়গাগুলোয় যদি অন্যায় চলে, অবিচার হয়, তাহলে জাতীয় জীবন থেকেও ইনসাফের জায়গাটা মুছে যায়। সুশীল মানুষ তৈরির কারখানায় যদি ঘুণ ধরে, ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক যদি বৈরিতাপূর্ণ হয়, গবেষণার প্রনোদনাগুলো যদি দুর্বৃত্তদের হাতে তুলে দেই, সমাজ নির্মাতাদের মনোজগতে যদি দুরাশা বাসা বাঁধে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ কর্ণধারেরা যদি নতজানু থাকেন তাদের নিয়ন্তাদের ভ্রুকুটিতে, তাহলে অচিরেই আমাদের সকল সম্ভাবনার, সকল স্বপ্নের, সকল আদর্শের মৃত্যু ঘটবে। মহাস্থবির শীলভদ্র (মৃত্যু খ্রিষ্টাব্দ ৬০১৪), অতীশ দীপঙ্করের (মৃ. ১০৫৪) দেশে, যদি আমরা একটা মানসম্পন্ন ও সুস্থধারার শিক্ষাঙ্গনও টিকিয়ে রাখতে না পরি, তবে সেটা হবে আমাদের হাজার বছরের জাতিগত ব্যর্থতা।
একযুগের সম্পৃক্ততা থেকে এই আরক্ত সময়ে এটাই বলতে চাই যে আরো একযুগ পরে কিছু আশার কথা বলবার মতো মনের জোর যেন এদেশের অবহেলিত দুর্ভাগা শিক্ষকদের থাকে।
ফারসীম মান্নান মোহাম্মদী: বিজ্ঞান গবেষক, লেখক ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক।