ওয়ারেন হেস্টিংসের বিরুদ্ধে এক অলিখিত যুদ্ধ শুরু করেছিলেন হিকি। হিকি’জ গেজেট হিংসাত্মক আধেয় ছিল এ কথা সত্য কিন্তু ২৪৫ বছর আগে ক্ষমতাসীনদের চ্যালেঞ্জ করার যে নজির হিকি স্থাপন করেছিলেন তা আজও অনুসরণীয়। হিকি’জ বেঙ্গল গেজেটের জন্মদিনে চলুন ফিরে যাই এশিয়ার প্রথম মুদ্রিত সংবাদপত্রের এক স্বপ্নযাত্রার পথে।
Published : 29 Jan 2025, 01:48 PM
জেমস অগাস্টাস হিকির জন্ম আয়ারল্যান্ডে। সুদূর ইউরোপের এক খেয়ালী ও খানিকটা খ্যাপাটে যুবক কীভাবে ভারতবর্ষের সাংবাদিকতার ইতিহাসে অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠলেন ওই গল্প বেশ রোমাঞ্চকর। হিকি ওই অর্থে কোনো বিদ্বান ব্যক্তি ছিলেন না, ছিল না সাংবাদিকতার কোনো অভিজ্ঞতা। তারপরও তার হাত ধরেই ভারতবর্ষে সাংবাদিকতার পথ চলা শুরু। তিনিই ভারতর্ষের সাংবাদিকতার জনক। তার হাত ধরেই প্রকাশিত হয়েছে শুধু ভারতবর্ষ নয় পুরো এশিয়ার প্রথম মুদ্রিত সংবাদপত্র।
জেমস অগাস্টাস হিকি অভিজাত কেউ নন। তিনি ব্রিটিশ সেনাবাহিনী বা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বড় কোনো কর্তাও ছিলেন না। তাই সঙ্গত কারণে হিকির জীবন ও সংবাদপত্র নিয়ে খুব বেশি তথ্য সংরক্ষিত হয়নি। যতদূর জানা যায়, তার জন্ম ১৭৩০-এর দশকে। তার বাবা পেশায় তাতী ছিলেন। হিকি বাল্যকালেই বাবাকে হারান। তরুণ বয়সে সংসার চালাতে ডাবলিনে একজন আইনজীবীর অফিসে কেরানির চাকরি নিয়েছিলেন। ওই কাজে সুবিধা করতে না পেরে চলে যান লন্ডনে। সেখানে শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ জোটে একটি ছাপাখানায়। কিছুদিন পর ওই কাজও ছেড়ে দেন।
নতুন কাজ নেন ব্রিটিশ নৌ-বাহিনীতে। এ সময় তিনি দু-একটা যুদ্ধেও অংশ নেন। এরপর লন্ডনে ফিরে যোগ দেন এক বিখ্যাত উকিলের অফিসে। ওই আইনজীবী ইংল্যান্ডের দাস প্রথা নিষিদ্ধে কাজ করেছিলেন। ওই মামলায় অফিস সাহায্যকারী হিসেবে কাজ করেছিলেন হিকি। তবে বেশিদিন এ কাজও তার ভালো লাগেনি। এরপর শল্য চিকিৎসা নিয়ে পড়াশোনা করেন। লক্ষ্য ছিল সার্জন হওয়া। কিন্তু ওই সময়ে লন্ডনে সার্জন হওয়া খুব সহজ কাজ ছিল না। তাই তিনি আবার সাগরে ফিরে যান একজন সার্জনের সাহায্যকারী হিসেবে। সেটি ছিল দাস ব্যবসায়ীদের একটি জাহাজ। এই জাহাজে কয়েকবার সমুদ্রযাত্রা করলেও মালিক তাকে কোনো পারিশ্রমিক দেননি। ফলে রাগ করে এই কাজও ছেড়ে দেন।
এরপর নতুন লক্ষ্য নির্ধারণ করেন— ভারতবর্ষ। অসমর্থিত তথ্যে জানা যায়, খুব সম্ভবত ১৭৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর রকিংহাম নামের একটি জাহাজে চড়ে হুগলি নদীর মোহনায় পৌঁছান হিকি। দুই সপ্তাহ পর পৌঁছান কলকাতায়। এ সময় কলকাতার পরিবেশ খুব একটা সুবিধার ছিল না। রাজাদের শাসন ছিল শিথিল। অন্যদিকে ইউরোপিয়ান বসতি স্থাপনকারীরা রাতারাতি প্রচুর সম্পদের মালিক হচ্ছিলেন। যাদের শীর্ষে ছিলেন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্মকর্তারা। এ সময় কলকাতায় বিলাসী প্রাসাদ গড়ে উঠছিল। অন্যদিকে রাস্তঘাটে অপরাধীদের আড্ডাখানা। প্রশাসনিক, নগর শৃঙ্খলার কোনো বালাই ছিল না কলকাতার পথে-ঘাটে।
আগেই উল্লেখ করেছি ভারতবর্ষে সাংবাদিকতার সূত্রপাত করা বা সংবাদপত্র প্রকাশ করা হিকির লক্ষ্য ছিল না। তার উদ্দেশ্য ছিল ব্যবসা-বাণিজ্য করে ভাগ্য পরিবর্তন করা। ওই সময় ভারতবর্ষ ছিল সম্পদে পরিপূর্ণ একটি মহাদেশ। যেখানে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির চাকুরেদের ভাগ্য ফিরছিল রাতারাতি। হিকিও ওই লক্ষ্যেই কলকাতা এসেছিলেন। সংবাদপত্র প্রকাশ বা সাংবাদিকতার জনক হিসেবে ইতিহাসে অক্ষয় কীর্তি স্থাপন কোনো অবস্থাতেই তার লক্ষ্য ছিল না।
কলকাতায় হিকি পেশাগত জীবন শুরু করেন একজন শল্য চিকিৎসক হিসেবে। ছোট-খাটো রোগের নানা ধরনের ওষুধ দিতেন। রক্তপাত বন্ধ করতেন। তবে কিছুদিন পর ধারদেনা করে ছোট একটা জাহাজ কিনে কলকাতা-মাদ্রাজ মালপত্র পরিবহনের ব্যবসা শুরু করেন। যদিও সমুদ্র ঝড়ে তার আমদানি করা মালামাল নষ্ট হয়ে যায়। ব্যবসায় ব্যাপক ক্ষতির শিকার হন জেমস অগাস্টাস হিকি। পাওনাদারদের মামলায় তাকে জেলে যেতে হয়। আদালত তাকে দেউলিয়া ঘোষণা করে সব সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে। তবে হিকি দমে যাওয়ার পাত্র ছিলেন না। জেল থেকেই নতুন করে শুরু করেন। কিছু টাকা জমিয়ে একটি ছাপাখানা খুলে বসেন। যাতে ছাপা হতো হ্যান্ডবিল, বিজ্ঞাপন, পঞ্জিকা, এমনকি সুপ্রিম কোর্টের দলিল ও ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ফর্ম। এই ব্যবসাটি প্রথম দিকে বেশ জমজমাট ছিল।
প্রথম দফায় ১৭৭৮ সালে কারাগার থেকে মুক্তি পান হিকি। এদিকে ১৭৭৯ সালের অগাস্টে হিকি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেনাবাহিনীর নিয়ম-নীতি (রেগুলেশন) ছাপার দায়িত্ব পান। তবে এই কাজের অর্ডার দেওয়া হয়েছিল গর্ভনর জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংসকে না জানিয়ে। যা নিয়েই পরের দিকে জটিলতা তৈরি হয়। এতে কোম্পানির কাছে হিকির পাওনা টাকা আটকে যায়। কারণ হেস্টিংস এই কাজ দিয়েছিলেন তার বন্ধু চার্লস উইলকিনস ও নাথানিয়েল ব্রাসি হ্যালহেডকে। এ সময় ওয়ারেন হেস্টিংস কলকাতার অদূরে একটি ছাপাখানা স্থাপনের অনুমতি ও অন্যান্য আর্থিক সহযোগিতা দিয়েছিলেন। অনেকেই বলে থাকেন, হিকির সাথে ওয়ারেন হেস্টিংসের দ্বান্দ্বিক সম্পর্ক এখানেই শুরু।
ওয়ারেন হেস্টিংসের সাথে দ্বন্দ্বের সময় হিকি সহযোগিতা পান কোম্পানির কর্মকর্তা ফ্রান্সিস ফিলিপের। জেমস অগাস্টাস হিকি ভারতবর্ষের সাংবাদিকতার জনক হলেও কলকাতা থেকে সংবাদপত্র প্রকাশের ক্ষেত্রে ফ্রান্সিস ফিলিপের ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য। তাই তার বিষয়ে একটু আলাপ এখানে অপরিহার্য।
ফ্রান্সিস ফিলিপ ইংল্যান্ডে সংবাদপত্রের সাথে যুক্ত ছিলেন। এছাড়া ভারতবর্ষে একটি সংবাদপত্র থাকা উচিত এমন অভাব তিনিই প্রথম বোধ করেছিলেন। এর মূল লক্ষ্য ছিল ফ্রান্সিস ফিলিপের পুরাতন অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো এবং তার প্রতিদ্বন্দ্বী ওয়ারেন হেস্টিংসের নানা ধরনের অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার খবর জনসম্মুখে প্রকাশ করা। যাই হোক, এরপর নানা পথ পাড়ি দিয়ে কলকাতা থেকে প্রথম প্রকাশিত হয় হিকি’জ বেঙ্গল গেজেট।
দিনটি ছিল ১৭৮০ সালের ২৯ জানুয়ারি। তখন শীতকাল। কলকাতার ৬৭ নম্বর রাধাবাজার ছাপাখানা থেকে এদিন প্রকাশিত হয় হিকি’জ বেঙ্গল গেজেট। যা ছিল ভারতবর্ষের প্রথম মুদ্রিত সংবাদপত্র। এটি ছিল একটি সাপ্তাহিক রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক পত্রিকা। যার দর্শন ছিল ‘সবার জন্য উন্মুক্ত কিন্তু কারও দ্বারা প্রভাবিত নয়’ (ওপেন টু অল পার্টিজ বাট ইনফ্লুয়েন্সড বাই নান)। এটি ছিল চার পাতার কাগজ। দাম এক টাকা। সংবাদপত্রটি টিকে ছিল মাত্র দুই বছর।
একটা কথা পরিষ্কার করে বলা প্রয়োজন। হিকি’জ গেজেট ভারতবর্ষের প্রথম সংবাদপত্র হলেও এই সংবাদপত্রের কোনো অংশই ভারতীয়দের জন্য ছিল না। এই সংবাদপত্রে প্রকশিত বেশিরভাগ সংবাদ ছিল ইংরেজদের নিয়ে। সংবাদপত্রের পাঠক ছিলেন ইংরেজসহ অন্যান্য ইউরোপীয় বণিকেরা। সংবাদপত্রে ভারতীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোনো কিছুই ছিল না। তবে সংবাদপত্র যেহেতু ভারতবর্ষে প্রকাশিত হচ্ছে তাই অনেক সংবাদ ভারতবর্ষ ও ভারতীয় সংশ্লিষ্ট ছিল।
এই সংবাদপত্রে মূলত বাণিজ্য ও রাজনীতি সম্পর্কিত সংবাদ থাকত। ওই সময় বন্দরে কোন জাহাজ কবে ভিড়বে, কী কী পণ্যের নিলাম হবে— এ সব খবর থাকত। উল্লেখ্য এসব খবরের চাহিদাও ছিল বেশ। অন্যদিকে থাকত রাজনীতি বা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সংবাদ। উঠে আসত কোম্পানির কর্তাদের স্বেচ্ছাচারিতাসহ নানা ধরনের মুখরোচক গল্প। যেগুলোর বেশিরভাগই ছিল কুরুচিপূর্ণ কুৎসায় ভরপুর। সোজাসুজি চরিত্রহনন। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে ওয়ারেন হেস্টিংসের সাথে হিকির দ্বন্দ্ব ছিল। যে দ্বন্দ্বের প্রতিফলন ছিল হিকি’জ গেজেটে। হেস্টিংস সংশ্লিষ্ট বেশিরভাগ সংবাদে কুরুচিপূর্ণ ইঙ্গিত থাকত। যেমন; আকারে ইঙ্গিতে বলা হতো যুদ্ধের চাপে হেস্টিংস যৌনক্ষমতা হারিয়েছেন, পোষা ছাগলের সঙ্গে হেস্টিংসের চাকর ‘অজাচার’ করেছে ইত্যাদি। এছাড়া ইংরেজ এই কর্তা অপর কর্তার স্ত্রীর সাথে অবৈধ যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেছেন ওই ধরনের খবরও থাকত। এছাড়া ইংরেজ কর্তাদের সমকামিতা নিয়ে ইঙ্গিত থাকত। স্থান পেত বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে নানা কেচ্ছা-কাহিনী। আধুনিক সাংবাদিকতার মানদণ্ডে এগুলো নিশ্চিতভাবেই খুবই নিচু শ্রেণির সংবাদ। তবে সংবাদের মান যত খারাপই হোক না কেন, হিকি ওই সময় তার সংবাদপত্রের মাধ্যমে ক্ষমতাসীনদের চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। এটা নিশ্চিতভাবেই বড় একটি বিষয়।
১৭৮০ সালে কলকাতা নগরের উন্নয়নে একটি অর্ডিন্যান্স জারি করে বড় অঙ্কের কর ধার্য করা হয়েছিল। এই কর পরিশোধে কলকাতাবাসীদের কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। হিকি হেস্টিংসের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। এই অতিরিক্ত তহবিল পুরোটাই হেস্টিংস মেরে দেওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন বলেও তুলে ধরেন হিকি।
হিকির মৃত্যুর ২০০ বছরের বেশি সময় পর তার জীবন ও সংবাদপত্র নিয়ে দীর্ঘ পাঁচ বছর গবেষণা করেছেন আমেরিকান গবেষক অ্যান্ড্রুস ওটিস। যার ভিত্তিতে প্রকাশিত হয়েছে ‘দ্য আনটোল্ড স্টোরি অব ইন্ডিয়া’স ফার্স্ট নিউজপেপার’ নামের গ্রন্থ। এই গবেষণা গ্রন্থে ওটিসের মন্তব্য ছিল অনেকটা এ রকম ‘চার্চ ও রাষ্ট্রের সমালোচনামূলক সংবাদ প্রকাশ করতে হিকি অসাধারণ সাহস দেখিয়েছিলেন। হিকি সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছিলেন। কিন্তু পত্রিকা বন্ধ করে দেয়ার মাধ্যমে দুর্নীতি এবং স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের বিরুদ্ধে হিকির লড়াইয়ের অবসান ঘটে।’
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন এই সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপনও প্রকাশিত হতো। যাতে দাস কেনাবেচার খবর থাকত। এছাড়া হিকি’জ বেঙ্গল গেজেটে পোয়েটস কর্নার নামে একটি অংশ থাকত। যে অংশে হিকি নিজেই অনেক কবিতা লিখেছেন।
হিকি’জ বেঙ্গল গেজেট অর দ্য অরিজিনাল ক্যালকাটা জেনারেল অ্যাডভারটাইজার দারুণ সম্ভাবনা নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও খুব বেশিদিন টিকতে পারেনি। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে হিকি স্বভাব-চরিত্রে বেশ বেপরোয়া ও খামখেয়ালি ছিলেন। যে কারণে তার সাথে গভর্নর জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংসের প্রবল দ্বন্দ্ব ছিল। মূলত হেস্টিংসসহ আরও কয়েকজন শীর্ষ ক্ষমতাধারীর কঠোর সমালোচনা করায় শাসকদের রোষের শিকার হন হিকি। পত্রিকা বন্ধ করে দেয়া হয়। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি পত্রিকার টাইপ নিয়ে যায় এবং প্রেস জব্দ করা হয়। এক পর্যায়ে হিকিকে আদালতে যেতে হয়। পরে তাকে জেলে পাঠায় বিচারক এলাইজা ইমপে। দ্বিতীয়বার জেলে যাওয়ার পর হিকি প্রায় সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েন। নতুন করে শুরু করার উদ্যোগ ও শক্তি তার আর অবশিষ্ট ছিল না। যে কারণে জেল থেকে বের হয়ে পতিত হন চরম দারিদ্র্যে।
হিকির শেষ জীবন সম্পর্কে তেমন বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায় না। তবে এটুকু জানা যায়, জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর অনেক কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছিল এই আইরিশম্যানকে। আর জীবনে কিছু করার শেষ চেষ্টা হিসেবে তিনি রওনা হয়েছিলেন চীনের উদ্দেশ্যে। খুব সম্ভবত তার গন্তব্য ছিল চীনের ক্যান্টন। সেখানে হয়তো তিনি মসলা আমদানি সংক্রান্ত কোনো ব্যবসার কাজে যাচ্ছিলেন। কিন্তু চীনে পৌঁছানোর আগেই শ্রীলঙ্কার কাছে জাহাজেই তার মৃত্যু হয়। সেখানেই খুব সামান্য ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে জেমস অগাস্টাস হিকিকে সাগরে সামাধী দেওয়া হয়। যার সাথে শেষ হয় একটি বর্ণাঢ্য অধ্যায়ের। ১৮০২ সালের ১৬ ডিসেম্বর ক্যালকাটা গেজেট সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয় একটি ছোট্ট খবর। যাতে বলা হয় ‘চিনে যাওয়ার পথে সমুদ্রে জাহাজের মধ্যেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন জেমস অগাস্টাস হিকি।’
২৪৫ বছর পর হিকির বেঙ্গল গেজেট নিয়ে আলোচনায় সম্পাদকের সাথে ক্ষমতাসীনদের সম্পর্কের বিষয়টি সামনে নিয়ে আসে। একনায়ক শেখ হাসিনার আমলে আমরা যেমন এক শ্রেণির সম্পাদকের আনন্দদায়ক আত্মসমর্পণ দেখেছি ঠিক তেমনি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তবর্তী সরকারের সময়ে কিছু গণমাধ্যমকে রীতিমতো সরকারের ‘গণসংযোগ’ প্রতিষ্ঠান হিসেবে ভূমিকা পালন করতে দেখছি। যা কোনো অবস্থাতেই কাম্য নয়।
তথ্যসূত্র:
১. ভট্টাচার্য, ড. নন্দলাল (২০১৯), সংবাদপত্রের ইতিবৃত্ত। কলকাতা: লিপিকা।
২. ‘জেলে গেলেন সম্পাদক’ সংবাদপত্র নিবন্ধ, লেখক স্বাতী ভট্টাচার্য, দৈনিক আনন্দবাজার অনলাইন, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯। https://www.anandabazar.com/rabibashoriyo/a-brief-history-of-the-founder-of-first-newspaper-hicky-s-gazette-james-hicky-s-life-and-struggle-1.1045600 (পুনরায় দেখা: ০১-১৯-২০২৫)